• ঢাকা
  • সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০১৯, ০৫:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৬, ২০১৯, ০৫:০৯ পিএম

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি উদ্বিগ্ন : ফখরুল

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি উদ্বিগ্ন : ফখরুল
খালেদা জিয়া - ফাইল ছবি

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আবারও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন। এসময় তার পাশে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হোসেন টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা চিকিৎসক নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  - ছবি : জাগরণ

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত এক সপ্তাহে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) চার কেজি ওজন কমেছে। তিনি শুকিয়ে গেছেন। তিনি খেতে পারছেন না। তার যে স্বাস্থ্যের অবস্থা তা এলার্মিং। তার ডায়াবেটিস ২০-এর নিচে নামছেই না। তিনি পা সোজা করতে পারছেন না। হাঁটতে তো পারেনই না। হুইল চেয়ার ছাড়া তিনি চলতেই পারেন না। তাকে হুইল চেয়ারে করেই ওয়াস রুমে, শাওয়ার নিতে অথবা বিছানায় নিতে হয়। অথচ সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে সরকারের লোকেরা বলে বেড়াচ্ছে যে, আমরা তার (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্য নিয়ে প্রতিদিন বলে বেড়াচ্ছি। তার স্বাস্থ্য নিয়ে তার পরিবার, আমরা, দেশবাসী সবাই চরম উদ্বিগ্ন। 

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একটি সাজানো বিচারে তাকে সাজা দিয়ে বিগত প্রায় ১৮ মাস ধরে কারাগারে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একের পর এক ৩৭টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি যখন কারাগারে যান তখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ছিলেন। অথচ এখন তিনি এত অসুস্থ যে এ নিয়ে আমরা চরম উদ্বিগ্ন।  

ফখরুল বলেন, কয়েকদিন আগে আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তিনি একটি চেয়ারে বসে ছিলেন। অনেক চেষ্টা করেও তিনি সেই চেয়ার ছেড়ে উঠতে পারছিলেন না। তাকে দেখভালের যে সাহায্যকারী তিনি তাকে ধরে চেয়ার থেকে উঠিয়েছেন। তিনি নিজে খেতে পারেন না, তাকে মুখে তুলে খাওয়াতে হয়। তাও সব খাবার তিনি খেতে পারেন না। এ বয়সে তার যা খাওয়া উচিত তা তিনি পান না। 

তিনি বলেন, তার প্রতিটি মামলায় আইন অনুযায়ী জামিন পাওয়ার কথা। অথচ সরকার তার জামিনে প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালতে তার মামলার কাগজ পাঠানো হয় না। হেন কোনো কাজ নেই যে, এই সরকার তার মামলায় হস্তক্ষেপ করছে না।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা চিকিৎসক সমাজের নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস কখনও ১৮/২০ এর নিচে নামেনি। তিনি হাঁটতে পারেন না। খেতে পারেন না। 

ডা. জাহিদ বলেন, তার চিকিৎসার জন্য গঠিত চিকিৎসক বোর্ড তাকে নিয়মিত দেখছেনও না। কোনো সপ্তাহে সর্বোচ্চ একদিন। কোনো সপ্তাহে দুদিন বা কোনো সপ্তাহে তিনদিন তারা দেখেছেন। এর বেশি নয়। তার বয়স ৭৫। এই বয়সে তার যে শারীরিক অবস্থা তা একজন চিকিৎসক হিসেবে আমাদের কাছে খুব ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় একটি অঘটন ঘটে যেতে পারে। পরিণতি মারাত্মক রূপ নিয়ে পারে। আমরা চিকিৎসক হিসেবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে মারাত্মক উদ্বিগ্ন। 

মির্জা ফখরুল আবারও বলেন, আমি বুঝতে পারি না যে, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারের এ ধরনের অমানবিক আচরণের উদ্দেশ্য কী? তাকে চিকিৎসাবঞ্চিত করে সরকার মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা জোরালো দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার সুযোগ দিন। তিনি যেখানে চিকিৎসা নিতে চান সেখানে তাকে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দিন। তা না হলে কোনো ধরনের অঘটন ঘটলে এর জন্য সরকারকেই দায়ী থাকতে হবে।    

টিএস/ এফসি

আরও পড়ুন