• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২০, ০৩:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৬, ২০২০, ০৩:৫৩ পিএম

প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে : কাদের  

প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে : কাদের  
মটর চালক লীগের সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের - ছবি : জাগরণ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঢাকা সিটি নির্বাচন সরকারের সম্পূর্ণ হস্তক্ষেপ বিহীন, নিরপেক্ষ নির্বাচনে জয় পেতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য দলের মনোনীত প্রার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। সরকারের সব এজেন্সি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন ঢাকা সিটি নির্বাচনে সরকারের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ যেন কেউ না করে। এই ব্যাপারে ক্লিয়ার ম্যাসেজ সবাইকে তিনি দিয়েছেন।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মটর চালক লীগের সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের সংশয়ের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বলছে, সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সরকারি সংস্থাকে বাধ্য করে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই দল আন্দোলনেও ফেল, নির্বাচনেও ফেল। আন্দোলনে ফেল করলে নির্বাচনেও ফেল করে। বিএনপি ফেলের মধ্যেই আছে, তাদের ভাগ্যে বিজয় কবে আসবে জানি না। নেতিবাচক রাজনীতির কারণে মানুষ আর তাদের সঙ্গে নেই। শেখ হাসিনার উন্নয়ন অর্জন বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির উপর সংকটের যে কালো ছায়া ফেলেছে, এ থেকে বিএনপির নিস্তারের কোনো উপায় নেই। 

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনাদের যত নালিশ যত অভিযোগ। নির্বাচন আর আন্দোলনে পারেন না, এখন শুধু নালিশ আর নালিশ। নির্বাচন কমিশনে তাদের একজন স্থায়ী প্রতিনিধি আছে, আপনাদের এই নালিশের কোনো বাস্তবতা নেই। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে বিদেশে যাওয়ার সময় সরকারের সকল সংস্থার প্রধানদের বলেছেন এই নির্বাচনে আমি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ, কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি চাই না। কোনো এজেন্সি কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ যেন না করে। সেই ব্যপারে ক্লিয়ার মেসেজ দিয়েছেন। কাজেই এখানে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে জনগণ যা চায় তা-ই হবে। এত কাজ করে জনগণ যদি ভোট না দেয়, জোরাজুরি-জবরদস্তি করে জনসমর্থন আদায় করে ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।

আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চেয়ে নির্বাচিত হওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমাদের পার্টিকেও একই মেসেজ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, ঘরে ঘরে যাও, জনগণ যাকে ভোট দেবে সে-ই নির্বাচিত হবে। কাজেই আমরা সরকারে পক্ষ থেকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করব না। আমরা এটাতে পরিষ্কার। আগেও বলেছি এখনও স্পষ্টভাবে বলছি।

তিনি বলেন, আসলে নির্বাচনে তাদের অবস্থা কী হবে সেটা তারা বুঝে গেছেন, তারা বুঝে গেছেন এই নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট সন্ধিহান। বিজয়ী হতে পারবে না বলেই তারা আজকে বিভিন্ন ধরনের নালিশ করার পথ বেছে নিয়েছে। তারা যত অপপ্রচারই করুক, দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই চায়, আওয়ামী লীগকেই চায়।

বাকশাল নিয়ে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সংকটময় মুহূর্তে জাতির পিতা সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে একটা দল করেছিলেন। যার নাম হচ্ছে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ সংক্ষেপে যাকে বাকশাল বলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক যুক্ত হয়েছে, এটাই অনেকের গাত্রোদহের কারণ। 

তিনি বলেন, মওদুদ সাহেব আপনি কি ভুলে গেছেন, ওই দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আপনার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সাহেবের নামটাও ছিল। ভুলে গেছেন, এটা কোনো একদলীয় ব্যবস্থা নয়। এটা ছিল জাতীয় দল কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের শোষিত মানুষের পক্ষের একটা সুশৃঙ্খল জাতীয় দল। এবং এটা ছিল, একটা সাময়িক ব্যবস্থা। অপরাধ একটাই- কৃষক আর শ্রমিকের নাম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনর্বিন্যাস করেছে, এতেই তাদের গাত্রোদাহ। এটা আগেও ছিল, এখনও আছে।

বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে আবার রক্তস্রোত বইবে- দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপরাজনীতির হোতা বিএনপি নামক অপশক্তি যেন আর ক্ষমতায় না আসতে না পারে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই অপশক্তি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, এই অপশক্তি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক, এরাই এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতির সূচনা করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির, জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি, এদের নেতিবাচক রাজনীতিকে এদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলাদেশে এই অপশক্তি যদি আবার ক্ষমতায় আসতে পারে দেশ আবারও অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। বিএনপি নামক অপশক্তি যদি আবারও ক্ষমতায় আসে এই দেশে রক্তস্রোত বইয়ে দেবে। এরা যদি আবারও ক্ষমতায় আসে এদেশ বিশ্বে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসে চ্যাম্পিয়ন হবে। কাজেই এই দলকে আজ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রত্যাখ্যাত হয়ে ষড়যন্ত্র করছে, চক্রান্তের চোরাই পথ দিয়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। এদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
 
এএইচএস / এফসি