• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০১৯, ০৭:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১১, ২০১৯, ০৭:৫৫ পিএম

বিকল্প ব্যবস্থা না করে রিকশা বন্ধ করা উচিত নয় : বিআইপি

বিকল্প ব্যবস্থা না করে রিকশা বন্ধ করা উচিত নয় : বিআইপি
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত সম্মেলনে বক্তারা-ছবি : জাগরণ

সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা বন্ধ করা উচিত নয় বলে মত দিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাজধানীর বীরউত্তম সি আর দত্ত রোডে বিআইপির কনফারেন্স হলে ‘ঢাকা শহরে রিকশা ও অযান্ত্রিক বাহনের চলাচল সম্পর্কে নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনাবিদরা এসব কথা বলেন।

বিআইপির সভাপতি এ কে এম আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, সহ-সভাপতি আক্তার মাহমুদ, বুয়েটের অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক মুসলে উদ্দিন, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মারুফ হোসেন, ইউএন-হ্যাবিটেট এর নগর পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ পরিকল্পনাবিদ সোহেল রানা প্রমুখ।

পরিকল্পনাবিদরা বলেন, রিকশায় প্রতিদিন ট্রিপ পড়ে ২৫-৩০টি। গড়ে ৪০জন যাত্রী প্রতিদিনই যাতায়াত করে। অন্যদিকে প্রাইভেটকারে প্রতিদিন যাতায়ত করে ২-৪জন যাত্রী। যা রিকশা চেয়ে সড়ক দখল করে বেশি। আর রিকশায় পরিবেশ দূষণ হয় না, প্রাইভেট কারে পরিবেশ দূষণ হয়, প্রাইভেট কার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করুন। একইসঙ্গে সড়কে বিকল্প গণপরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে।

বক্তারা বলেন, গাবতলী-আজিমপুর সড়কের আশপাশের ওয়ার্ডসমূহে আবাসিক এলাকা ৩৯ভাগ। জনসংখ্যা ১৫ লাখ, প্রতি একরে জন ঘনত্ব ৬৬০জন। আর কুড়িল-সায়েদাবাদ সড়কের আশপাশের ওয়ার্ডসমূহে আবাসিক এলাকা ৫৭ভাগ। জনসংখ্যা ২১ লাখ, প্রতি একরে জন ঘনত্ব ৫৩০জন। একইসঙ্গে গাবতলী-আজিমপুর সড়কের ২০০ মিটার পরিসেবায় আবাসিক এলাকা ৩৩ভাগ। আর কুড়িল-সায়েদাবাদ সড়কের ২০০ মিটার পরিসেবায় আবাসিক এলাকা ৫৮ভাগ। গাবতলী-আজিমপুর সড়কের চেয়ে কুড়িল-সায়েদাবাদ সড়কের আশপাশে জন ঘনত্ব বেশি। এই সড়কে গণপরিবহনও কম। সুতারাং বিকল্প ব্যবস্থা না করিয়ে রিকশা বন্ধ করা ঠিক হবে না।

বক্তারা বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বলেন, শহরের রাস্তার সক্ষমতা বিবেচনাপূর্বক রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ ও ব্যবহার সুনির্দিষ্ট করতে হবে। জোনভিত্তিক গণপরিবহন পরিকল্পনা দরকার। চক্রাকার বাস সার্ভিসের মতো সব শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য মানসম্মত কমিউনিটি ভিত্তিক ট্রানজিট ব্যবস্থা চালু করতে হবে যেন মানুষ রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ির বিকল্প খুঁজে পায়।

অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানে প্রাইমারি রোডে রিকশা নিষিদ্ধ করার কথা বলা হলেও সাধারণ যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত বিকল্প ব্যবস্থা না করে সড়কে রিকশা চলাচল নিষদ্ধ করার বদলে ধাপে ধাপে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। শহরের অধিকাংশ সড়কেই পথচারীবান্ধব অবকাঠামো নেই, অথচ এসটিপি তে এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘমেয়াদী সুফল পেতে হলে সামগ্রিকভাবে কাজ করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়ির পরিমাণ না কমিয়ে শহরের সুষ্ঠু পরিবহণ পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন।

সম্মেলনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রেজেন্টেশনে বলেন, ব্যয়, সময় ও মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও পরিকল্পনা ছাড়া যানজট ও পরিবেশ দূষণের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সামনের দিনগুলোতে ঢাকার মানুষের জীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তুলবে।

তিনি বলেন, কম দৈর্ঘ্যের পথে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রিকশাকে বেছে নিয়েছে অনেকেই। ১৯৮৬ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ রিকশা ভ্যানের নিবন্ধন দেয়া হয়। তারপর থেকে রাজধানীতে কাগজে কলমে আর কোনও নতুন রিকশার লাইসেন্স বা অনুমোদন দেয়া হয়নি। দুই সিটি মিলিয়ে বৈধ রিকশার সংখ্যা ৭৯ হাজার ৫৪৭টি। তবে রাস্তাই চলাচলকারী রিকশার সংখ্যা বিভিন্ন তথ্যমতে ৮-১০ লাখ।

টিএইচ/এসএমএম

আরও পড়ুন