• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০১৯, ০৯:৪১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৪, ২০১৯, ০৪:০৯ পিএম

সুন্দরবনে মধুমাস শুরু, বনে ছুটছেন মৌয়ালরা

সুন্দরবনে মধুমাস শুরু, বনে ছুটছেন মৌয়ালরা
মধু রাখার কন্টেইনার নিয়ে নৌকা নিয়ে সুন্দর বনে যাচ্ছেন মৌয়ালরা

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মধুমাস। এপ্রিল মে, জুন এই তিন মাস সুন্দরবনের মধু আহরণের সময়। পহেলা এপ্রিল থেকেই মধু আহরণের জন্য বনে ছুটতে শুরু করেছেন মৌয়ালরা। প্রথম দিনে বাগেরহাটের শরণখোলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌয়ালরা পাস (বনবিভাগের অনুমতি) নিয়ে বনে প্রবেশ করেছেন। কেউ কেউ মধু ভাঙার প্রস্তুতি নিয়ে যাবার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে আগের তুলনায় সুন্দরবনে মধুর পরিমাণ কমে গেছে বলে মৌয়ালদের কাছ থেকে জানা গেছে।

বনবিভাগ সূত্রে জানা, এ বছর মধু খাত থেকে গত বছরের চেয়ে প্রায় দেড়গুণ রাজস্ব আয় হবে। প্রতি কুইন্টাল মধু থেকে ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোম থেকে এক হাজার টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। পনেরো দিনের মধ্যে জনপ্রতি ৫০ কেজির বেশি মধু আহরণ করতে পারবেনা মৌয়ালরা। প্রথম দিনে তিন শতাধিক মৌয়াল পাস নিয়ে বনে প্রবেশ করেছেন।


 
গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বনসংগ্ন খুঁড়িয়াখালী গ্রামের মধু আহরণকারী জামাল ফরাজী, হারুন ফরাজী, মজিদ ফরাজী, এমাদুল তালুকদার, শাহজাহান আকন এবং শরণখোলা গ্রামের রতন মোল্লা, আসাদুল কবিরাজ, ইউসুফ মাতুব্বর, বাদল হাওলাদারের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, বনে এখন আর আগের মতো মধু পাওয়া যায়না। এখন গরান ও খলসী ফুলের মৌসুম এবং শেষের দিকে আসবে কেঁওড়া ফুল। কিন্তু বনে গরান ও খলসী এই দুই জাতের গাছের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। যার ফলে মধুও কমে হচ্ছে।

 


মৌয়ালরা আরো জানান, তাদের মধু আহরণ করতে বনের গহীনে ঝোঁপঝাড়ে প্রবেশ করতে হয়। এতে জীবনের ঝুঁকি থাকে অনেক। বাঘ,সাপ, কুমির ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণির কাছে জীবন বাজি রেখে তাদের মধু আহরণ করতে হয়। প্রতি বছর তাদের দু-একজন সঙ্গী এসব প্রাণির আক্রমনে মারা যান। পেটের টানে তারপরও তাদের পুরনো পেশা আঁকড়ে ধরে জীবীকা নির্বাহ করতে হচ্ছে।

খুঁড়িয়াখালী গ্রামের যুবক ও সমাজকর্মী মো. রাসেল আহমেদ জানান, মধু আহরণ করতে গিয়ে অনেক সময় মৌয়ালদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। দুর্গম বনে কেউ অসুস্থ হলে বা বণ্য প্রাণির আক্রমনের শিকার হলে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা থাকেনা। তার মতে, মৌসুমে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ও শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, সোমবার (১ এপ্রিল) মৌসুমের প্রথম দিনে শরণখোলা ও বগী স্টেশন থেকে ৩০টি নৌকার পাস দেয়া হয়েছে। তিন শতাধিক মৌয়াল ২ সপ্তাহের পাস নিয়ে বনে প্রবেশ করেছে। বনবিভাগের তত্বাবধানে তাদেরকে বনের কোকিলমনি এলাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে বনের ২৪ নম্বর কম্পপার্টমেন্টের মরাভোলা, তেঁতুলবাড়িয়া, দাসের ভারানি এবং অভয়ারণ্য এলাকার বাইরে গিয়ে তারা মধু আহরণ করবে।
 
তিনি বলেন, গতবছর শরণখোলা রেঞ্জে চার লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। এ বছর ৬ লাখ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে মৌয়ালদের নিরাপত্তাসহ সব ধরণের সহযোগিতা দেয়া হবে।

এএস/বিএস