• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০১৯, ০৯:৫৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৬, ২০১৯, ০৪:০৫ পিএম

ফেনী থেকে নুসরাতের সহপাঠী শামীম ও মনি গ্রেফতার

ফেনী থেকে নুসরাতের সহপাঠী শামীম ও মনি গ্রেফতার
নুসরাত রাফি

ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার আসামি ও তার সহপাঠী  মোহাম্মদ শামীম (১৯) ও কামরুন্নাহার মনিকে গ্রেফতার করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ফেনী শহরের একাধিক এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের  গ্রেফতার করা হয়। আজ  পুলিশ রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হবে বলে জানায় পিবিআই।
 
ফেনী পিবিআই’র অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান জানান, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার মামলার আসামি হিসেবে শামীম ও মনিকে   গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা উভয়ই সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলীম পরিক্ষার্থী।

শামীম ও মনি’র গ্রেফতার নিয়ে গতকাল রাত পর্যন্ত নুসরাত হত্যাকাণ্ডে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

এছাড়া সংশ্লিষ্ট মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার রয়েছেন,কেফায়েত উল্লাহ জনি, সাইদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি, নূর হোসেন ও আলাউদ্দিন। এর আগে সহপাঠী উম্মে সুলতানা পপিকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখায় পিবিআই। 
   
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক শাহ আলম  জানান, নুসরাতের মতো পপিও এবার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। ঘটনার দিন পপি নুসরাতের কাছে এসে খবর দেয় ছাদে তার বান্ধবী নিশাতকে মারধর করা হচ্ছে। এ খবর পেয়েই নুসরাত দ্রুত ছাদে ছুটে যায় এবং সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অনুসারীরা নুসরাতের ওপর হামলা করে এবং তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় হামলাকারীরা পপিকেই শম্পা নামে ডেকেছিল। শম্পা ঘাতকদের সাহায্য করেছিল। পিবিআইয়ের ওই কর্মকর্তা আর জানান, নুসরাত মৃত্যুর আগে দেয়া জবানবন্দিতে (ডাইং ডিক্লারেশন) শম্পার নাম বলেছিলেন। যে চারজন বোরকা পরা নারী বা পুরুষ তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় শম্পা ও মনি থাকার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন দগ্ধ নুসরাত।

এ ঘটনার পরপরই এজাহারভুক্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া সন্দেহভাজন যে ছয়জনকে আটক করা হয় তার মধ্যে উম্মে সুলতানা পপি ছিল। তবে পপিই যে শম্পা তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত আক্তার রাফিকে যৌন হয়রানি করেছিল ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। এ ঘটনায় নুসরাত থানায় অভিযোগ করলে অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে নুসরাতের যৌন হয়রানির মামলা তুলে না নেয়ায় তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে তিনি ওই ভবনের তিনতলায় যান। সেখানে মুখোশধারী বোরকা পরিহিত ৪/৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। 

এইচ এম/বিএস