• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০১৯, ০১:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৩, ২০১৯, ০১:০৮ পিএম

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির নতুন কর্মসূচি

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির নতুন কর্মসূচি
নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রোববার (২৪ নভেম্বর) সমাবেশের ঘোষণা করেছে বিএনপি। 

নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অথবা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ২টায় বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব (দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত) রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। 

তিনি জানান, ওই দুই স্থানের মধ্যে যেকোন একটিতে সমাবেশ করার জন্য বিএনপি ইতোমধ্যে পুলিশের কাছে আবেদন করেছে। সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার জন্য জনগণসহ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। 

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী। 

রিজভী আহমেদ সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, শুক্রবার ওবায়দুল কাদের বলেছেন-‘সরকার দেশের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, কিন্তু বিএনপির মুখ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই’। এই বক্তব্যের মাধ্যমে ওবায়দুল কাদের নিজের অজান্তেই স্বীকার করে নিলেন-আইন আদালত, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছেন। মানুষের ভোটাধিকারও নিয়ন্ত্রণ করে রেখে ভোটের আগের রাতের ভোট প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দিতে সক্ষম হয়েছেন, কারারুদ্ধ করে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি গোরস্থানকে নিয়ন্ত্রণ করে লাশের বিরুদ্ধে মামলা দিতে সক্ষম হয়েছেন। আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে সম্রাট, জি কে শামীম, খালেদ হোসেনদের মতো চুনোপুটিদের নাম জানা গেছে, কিন্তু রাঘব-বোয়ালদের লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মুক্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। গুম-খুন-ক্রসফায়ারের মুখেও বিএনপি যেটুকু বলছে সেটিকেও তিনি স্তদ্ধ করে দিতে ইঙ্গিত হচ্ছে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য। তার বক্তব্য একচেটিয়া স্বৈরশাসকদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বণি।

রিজভী আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার পানি নিয়ে একটা সুরাহা করে আসবেন। অথচ শেখ হাসিনা ও মমতা ব্যানার্জির সাক্ষাৎ কেবলমাত্র শাড়ি আদান-প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।  ফেনী নদীর পানি বিনিময় ছাড়াই উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল উষর মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। সেচ মৌসুম চলছে অথচ এখনই নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ অন্যান্য এলাকায় সেচের পানি সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেই বিষয়ে কোন আলোচনাই করেননি। প্রায় প্রতিদিন সীমান্ত হত্যা চলছে, এ নিয়েও শেখ হাসিনা মুখ বন্ধ রেখেছেন। সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা যেন নৃশংস দস্যুতার নামান্তর। দেশ মরুভূমি হয়ে যাক, সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশী মানুষ মরুক তাতে শেখ হাসিনার কিছু আসে যায় না। তিনি নিজ দেশের জনগণের অন্তুরুদ্ধ ক্ষোভ টের পান না। তিনি শুধু দিতেই জানেন, নিতে জানেন না। তার ক্ষমতার সোনার হরিণটি নিশ্চিত হলেই তিনি সন্তুষ্ট। আওয়ামী লীগের ভাবাদর্শ হচ্ছে নিজ দেশে অত্যাচারী আর অন্য দেশের প্রতি নতজানু থাকা।

তিনি বলেন, গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন-মানুষ বিমানে চড়তে পারে না, আর আমি বিদেশ থেকে বিমানে পেঁয়াজ নিয়ে আসছি। অবৈধ সরকারের গবুচন্দ্র মন্ত্রীদের মুখে এধরণের কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যই শোভা পায়। জনশ্রুতি আছে-ব্যবসায়ী মন্ত্রীদের নেতৃত্বেই নাকি বাজার সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা লোপাট চলছে। পেঁয়াজের যখন ভয়াবহ সংকট চলছে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার যখন নিয়ন্ত্রণহীন তখন তার দেখা মেলে না। গতকাল হঠাৎ হাজির হয়ে তিনি উদ্ভট মন্তব্য করলেন। তার এধরণের বক্তব্য জনগণের সঙ্গে ইয়ার্কি ছাড়া কিছু নয়। 

‘এদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয়’ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা দিনের পর দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলে দাবি করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেন, অথচ তার জামিন কিংবা সুচিকিৎসার ব্যাপারে প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকারের নিষ্ঠুরতা যেন থামছেই না। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার নীল নকশা বাস্তবায়নের পথে সরকারপ্রধান দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন। কারণ তার বিপুল জনপ্রিয়তা শেখ হাসিনা সহ্য করতে পারেন না বলেই মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মামলায় তাকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছেন। 

টিএস/বিএস 
 

আরও পড়ুন