আকাশ পথকে নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে সোনা চোরাচালানীরা। প্রতিনিয়তই বিমান বন্দরগুলোতে ধরা পড়ছে সোনা। রোধ করা যাচ্ছে না স্বর্ণ চোরাচালান।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের কাস্টম ও গোয়েন্দা বিভাগ গত ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত আড়াই কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সিভিল এভিয়েশনের ২ কর্মচারীসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাসকাট ফেরত এক বিমান যাত্রীর কাছ থেকে পৌনে এক কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। ওই যাত্রীর সঙ্গে থাকা লাগেজ স্ক্যানিংয়ের সময় পান-সুপারি গুঁড়ো করার একটি হামানদিস্তায় স্বর্ণবারগুলো পাওয়া যায়।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে ৯টায় রিজেন্ট এয়ারওয়েজের (আরএক্স ৭২৪) ফ্লাইটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। জাহিদুল ইসলাম নামে এই যাত্রীকে আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার (এসি) নাসির উদ্দিন মাহমুদ খান জানান, মাসকাট ফেরত যাত্রী জাহিদুল ইসলামের লাগেজ স্ক্যানিংয়ের সময় পান-সুপারি গুঁড়ো করার একটি হামানদিস্তা পাওয়া যায়। পরে সেটি বের করে তল্লাশি করে স্বর্ণবারগুলো উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, জাহিদুল ইসলাম অবৈধভাবে স্বর্ণ আনার কথা স্বীকার করেছে। হামানদিস্তার তলায় গোলাকৃতির একটি এবং দণ্ডের মধ্যে লুকানো দণ্ডাকৃতির স্বর্ণ পাওয়া যায়। স্বর্ণবারের ওজন ৬৯৮ গ্রাম। বাজারমূল্য ৩০ লাখ টাকা।
অপরদিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিযান চালিয়ে দেড় কেজি স্বর্ণ ও ২০০ কার্টন সিগারেটসহ এক যাত্রী ও সিভিল এভিয়েশনের দুই কর্মচারীকে আটক করেছে ঢাকা কাস্টমস হাউজ। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়। এ ব্যাপারে কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, কাস্টম হাউসের একটি দল বিমানবন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছিল। পরে দুবাই থেকে আসা ইকে৫৮৪ ফ্লাইটে আগত যাত্রী মাহবুবুর রহমান এবং তাকে প্রটোকল দেয়া সিভিল এভিয়েশনের দুই কর্মচারীকে আটক করা হয়। আটক যাত্রীর নাম মাহবুবুর রহমান। তার বাড়ি ঢাকায়। তার কাছে সিভিল এভিয়েশনের বৈধকার্ডও পাওয়া যায়, তিনি আগে সিভিল এভিয়েশনের কনসালটেন্ট এবং বর্তমানে এয়ারলাইন্স ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আটক অপর দুই জন হলেন- সিভিল এভিয়েশনের মালি শহীদুল্লাহ ও হেলপার হাবিবুর রহমান।
অথেলো চৌধুরী আরও জানান, গ্রিন চ্যানেল অতিক্রমের পরে যাত্রীর নিকট শুল্ককর আরোপযোগ্য পণ্য থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে যাত্রী অস্বীকার করেন। তার দেহ তল্লাশি করলে কিছু পাওয়া যায়নি, কিন্তু তার নিকটে থাকা চারটি লাগেজ ভর্তি সিগারেট পাওয়া যায়। আরও তল্লাশির পর লাগেজে থাকা দরজার কব্জার মধ্যে ও মানিব্যাগের মধ্যে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় দেড় কেজি ওজনের ১৩টি স্বর্ণবার উদ্ধার করা হয়। আটককৃত সিগারেটসহ স্বর্ণের মূল্য ৮৫ লাখ টাকা।
দি কাস্টমস অ্যাক্ট-১৯৬৯ এবং স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট-১৯৭৪ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাত্রী ও চোরাচালানে সহযোগিতা করায় সিভিল এভিয়েশনের ওই কর্মচারীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
এইচএম/এসএমএম