• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০১৯, ০২:৩৩ পিএম

ভুয়া চাকরিদাতা ১৩ প্রতারক গ্রেফতার

ভুয়া চাকরিদাতা ১৩ প্রতারক গ্রেফতার

 

রাজধানীতে বেকার যুবকদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ১৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) বিভাগ।

প্রতারক এই চক্রটি এমএলএম পদ্ধতির মতো একেকজনকে ভর্তি করানোর পর প্রশিক্ষণের নামে সময়ক্ষেপণ করে, তারপর চাকরিপ্রার্থীকে আরও কিছু ব্যক্তিকে যুক্ত করার মাধ্যমে অধিক টাকা আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। ভুক্তভোগী কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে এই চক্রের ১৩ সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির (বিশেষ) পুলিশ সুপার মো. এনামুল কবির সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আশরাফুল ইসলাম (২৭), আল আমিন মণ্ডল রতন (৩০), উজ্জ্বল হোসেন (২৩), শিমুল মোল্লা (১৯), জহিরুল ইসলাম ওরফে পাপ্পু মিয়া (২০), আব্দুল মোমিন (২৪), শাহীন আলম (২৪), নুর আলম সিদ্দিকী (২৫), মাজেদুল ইসলাম (২৫), ইমরুল হাসান (২৩), মনিরুজ্জামান (২৪), রিঙ্কু কুমার দাস (৩০) ও অভিজিত পাণ্ডে (২৪)।

পুলিশ সুপার বলেন, গত অক্টোবর মাসে লাইফওয়ে নামে একটি কোম্পানির ১৭ সদস্যকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ঐ কোম্পানির ২-৩ জন প্রতারক এই কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

এই খবরের ভিত্তিতে কয়েকজন ভুক্তভোগী সিআইডির কাছে অভিযোগ করে জানায়, রাজধানীর বারিধারা এলাকায় এরকম একটি কোম্পানি আছে যাদের কাজই হচ্ছে সহজ সরল ছেলেমেয়েদের চাকরি দেয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেয়া। টাকা নেয়া হয়ে গেলে তারা প্রশিক্ষণের নাম করে টালবাহানা করে, কোনো চাকরি দেয়না। একসময় এমএলএম পদ্ধতির মতো আরও চাকরিপ্রার্থী যোগাড় করতে বলে। তাদের ফাঁদে পড়ে নিরুপায় বেকাররা এক পর্যায়ে চাকরিপ্রার্থী যোগাড় করে এনে দেয়, বিনিময়ে তারা সামান্য কিছু কমিশন পায়। চাকরিপ্রার্থী না দিলে কমিশনও আসেনা। ফলে তাদের সেখান থেকে ফিরে যেতে হয়। এভাবে শত শত ছেলে মেয়ে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে।

এনামুল কবির বলেন, এসব জানার পর সিআইডি তদন্ত শুরু করে। বারিধারার ভাটারা নতুন বাজার এলাকার প্রাইম অর্কেড বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলায় এক্সিলেন্ট ট্রেড মার্কেটিং লিমিটিড নামে একটি কোম্পানির অফিসে অভিযান চালিয়ে ১৩জন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে কোম্পানির প্যাডে ১১৫টি অঙ্গীকারনামা, কোম্পানির নামে পূরণ করা ৪২টি আবেদনপত্র ও এগ্রিমেন্ট ফরম এবং পূরণকৃত ৩০ টি ট্রেডিং কার্ড উদ্ধার করা হয়।

সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করে যে, একজন চাকরিপ্রার্থী ভর্তি হলে তার মাধ্যমে আরেকজন সদস্য সংগ্রহ করা হয়। এভাবে তারা অনেক চাকরিপ্রার্থীকে ভর্তির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, কারও কাছ থেকে ৩০ হাজার, কারও থেকে ৪৫ হাজার, কারও থেকে ৮০ হাজার আবার কারও কাছ থেকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। এভাবে ১৩০ জনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এর পেছনে আরও কোনো চক্র জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় ১৮ জনের নামে মামলা হলেও বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই চক্রের মূলহোতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম পরিচয় সবকিছু জানা গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

 

আরআর/সাইসে