কুমিল্লার ভাষা সৈনিক আবদুল জলিল গুরুতর অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন। গত ১৩ জানুয়ারি তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে ১৫ জানুয়ারি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে সিসিইউতে কয়েকদিন রাখার পর অর্থের অভাবে তাকে আবারো গ্রামের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান জলিল পুত্র নূরুদ্দীন জালাল আজাদ।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবার উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু অর্থের অভাবে তা করানো সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের সামর্থ অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব হয়েছে ততটুকু দিয়েই চেষ্টা করেছি। আর খরচ চালাতে না পারায় তাকে আবার গ্রামের হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাষা সৈনিক বাবাকে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারেন আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতে। আমার পরিবার এখন প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি সহযোগিতা চায়।’
ভাষা সৈনিক আবদুল জলিল ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার চন্দনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি লাকসাম নওয়াব ফয়জুন্নেসা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার তাগিদে যোগদান করেছিলেন ভাষা আন্দোলনে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষেও তিনি প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেন। আবদুল জলিল একাধারে শিক্ষক, নাট্যকার, সংগঠক, লেখক ও সাংবাদিক। তিনি স্থানীয় উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি লেখালেখি, নাট্যচর্চা, সাংবাদিকতা ও শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা, খেলাঘর, সুজন মজলিশের আঞ্চলিক সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫৮ সালে তার প্রতিষ্ঠিত ‘লাকসাম লেখক সংঘের মাধ্যমে তিনি সৃজনশীল লেখক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক তৈরির প্রচেষ্টায় সফল হন। বর্তমানে আবদুল জলিল দক্ষিণ কুমিল্লার প্রাচীন সংবাদপত্র ‘সাপ্তাহিক লাকসাম’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক। ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদান রাখায় তিনি টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক ট্র্যাব অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পুরস্কার, বাংলাদেশ বেতার কুমিল্লা কেন্দ্র প্রদত্ত পুরস্কারে ভূষিত হন।
এসজে/এএস