• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯, ১০:৪০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯, ১০:৪০ এএম

বনানীতে চীনের নাগরিক খুন, নারী অংশীদারকে জিজ্ঞাসাবাদ

বনানীতে চীনের নাগরিক খুন, নারী অংশীদারকে জিজ্ঞাসাবাদ
চীনের ব্যবসায়ী গাওজিয়ান

রাজধানী বনানীর বাসায় চীনের নাগরিক গাওজিয়ান হুই হত্যাকাণ্ডের তিনদিন অতিবাহিত হলেও ঘাতকদের শনাক্ত করতে পারেনি গোয়েন্দারা। এছাড়া নিহতের শিকার চীনা নাগরিকের গাড়ি চালক সুলতান আহমেদ ও গার্ডসহ আটক ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তে সফলতা আসতে পারে, এমন কোন তথ্য পায়নি গোয়েন্দা পুলিশ। শুধু তাই নয়, নিহত চীনা ব্যবসায়ির স্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছেন গোয়েন্দারা। জানতে চেয়েছেন, তার স্বামীর ব্যবসায়িক পার্টনার ও ব্যবসায়িক অর্থ নিয়ে কারো সঙ্গে কোন বিরোধ রয়েছে কিনা। তবে হত্যারহস্য উদ্ঘাটনে গতকাল শুক্রবার গাওজিয়ানের ব্যবসায়িক অংশীদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তার সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য ব্যক্তিদেরও পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া বলেন, গাওজিয়ানের ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন এক নারী। হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি ঢাকার বাইরে অবস্থান করছিলেন। হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় এসেছেন। শুক্রবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। নিহতের সঙ্গে কারও ব্যবসায়িক বা অন্য বিষয়ে বিরোধ ছিল কি-না তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য কিছু জানা যায়নি।

বনানী এ-ব্লকের ২৩ নম্বর সড়কের ৮২ নম্বর বাসার ছয়তলায় ৬/বি ফ্ল্যাটে থাকতেন পাথর ব্যবসায়ী গাওজিয়ান। গত বুধবার বাসার পেছনের ফাঁকা স্থানে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ওই রাতে তার ঘনিষ্ঠজন ঝাং শু হং বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, গাওজিয়ানের বাসা থেকে কিছু খোয়া না যাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। তবে এখনও সেই বিরোধের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। নিহতের গৃহকর্মী, গাড়িচালক ও বাসার নিরাপত্তাকর্মীসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সম্ভাব্য সবগুলো সূত্র ধরেই কাজ করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দারা।
  
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, গাওজিয়ান পদ্মা সেতু প্রকল্পে পাথর সরবরাহের কাজ করতেন। এর আগে তিনি কাপড়ের ব্যবসা করতেন। গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ৮২ নম্বর বাড়ির ছয়তলার ৬বি ফ্ল্যাটে ফিরেছিলেন তিনি। রাতের কোনো একসময় তাকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া হয়। গতকাল বেলা ১১টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘঁটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির পেছনের ফাঁকা জায়গায় মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। মাটিচাপা দেওয়া হলেও তার চুল ও পা বাইরে বেরিয়ে ছিল। কান ও মুখে রক্ত ছিল। গলায়ও কালো দাগ ছিল। তার বাসার একটি কক্ষে জুতার ওপর কয়েক ফোটা রক্ত দেখা গেছে। মূল দরজা খোলা ছিল। 

সুদীপ কুমার জানান, চীনা নাগরিকের এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন। তিনি গত ২৩ অক্টোবর চীন থেকে সর্বশেষ ঢাকায় আসেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় পৌছেছেন।  এ ঘটনায় গাড়িচালক ও নিরাপত্তাকর্মীসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহতের পাসপোর্ট নম্বর ই-০৫৪৭৫১০১। জন্ম তারিখ লেখা ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭২। আর ঠিকানা লেখা ফুজিয়ান। তিনি বনানীর ওই বাড়ির ছয়তলায় থাকতেন।

এইচ এম/বিএস