• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৮, ২০১৯, ০৬:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৯, ২০১৯, ১২:৩০ এএম

৪ বছর ধরে ভ্যাট ফাঁকি ইউনিয়ন ব্যাংকের

৪ বছর ধরে ভ্যাট ফাঁকি ইউনিয়ন ব্যাংকের

টানা চার বছর ধরে অভিনব কৌশলে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি গত চার বছরে একটু একটু করে ৪৭ লাখ টাকা ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) ফাঁকি দিয়েছে। যা সুদসমেত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। ভ্যাট গোয়েন্দার নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ১৬ পর্যন্ত সময়ে ইউনিয়ন ব্যাংক তাদের আর্থিক প্রতিবেদনসহ চালানে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার দাপুটে এসব অনিয়ম করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এই বছরের শুরুতে ইউনিয়ন ব্যাংকে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর। এরই প্রেক্ষিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ইউনিয়ন ব্যাংক সরেজমিন পরিদর্শন করে। আর প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষায় ইউনিয়ন ব্যাংকের চার বছর ধরে দেয়া ভ্যাট ফাঁকির চিত্র উঠে আসে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে ব্যাংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মামুন দৈনিক জাগরণকে বলেন, আমাদের এমডি স্যার এসব বিষয় দেখেন না। আর ভ্যাট-ট্যাক্সের বিষয়টি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল চৌধুরী জহির বিষয়টি ড্রিল করেন বলে জানান। ইকবাল চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি অসুস্থ অফিসে আগামী এক সপ্তাহ আসবেন না বলে জানান। পরবর্তীতে তার সেল নাম্বার চাইলেও তিনি দিতে রাজি হননি।

সূত্র আরও জানায়, জানুয়ারি ২০১৩-২০১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটি শুধু ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৪৭ লাখ ৬৫ হাজার ৯৪৬ টাকা। সময়মতো এই টাকা পরিশোধ না করা আয়কর আইন অনুযায়ী ২ শতাংশ হারে সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৩৮৬ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে ইউনিয়ন ব্যাংক সর্বমোট সুদ সমেত ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩২ টাকা। ব্যাংকটি মাসিক দাখিলপত্র পর্যালোচনা করে এমন চিত্র পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। এছাড়া যেসব বিষয়ে ব্যাংকটি ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে সেসব বিষয় খুবই পরিষ্কারভাবে এনবিআরের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানা গেছে, ইউনিয়ন ব্যাংকের মূলে রয়েছে দেশের বিখ্যাত শিল্পগোষ্টী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন এস আলম গ্রুপের ডিরেক্টর (টেকনিক্যাল) শহিদুল আলম। ব্যাংকটির আরেক পরিচালক হলেন এস আলম গ্রুপের ডিরেক্টর (প্রশাসন) রাশেদুল আলম। এছাড়াও ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে রয়েছেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, জাতীয় পর্টির সাবেক মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলুসহ অনেক প্রভাবশালীরা।

এনবিআর সূত্র জানায়, ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকটি অভিনব পন্থা অবলম্বন করে। এনবিআরের কর্মকর্তারা তাদের কাছে অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয় সিএ রির্পোটে উল্লেখ কেন করা হয় নাই এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা মূসক গোয়েন্দার কর্মকর্তাদের বলেন, এই ব্যাংকটি নতুন তাই এই বিষয়ে তাদের সম্যক ধারণা নেই। যদিও দেশের নতুন ব্যাংকে এমডি থেকে শুরু করে বেশিরভাগ অভিজ্ঞ লোকদের নিয়োগ দিয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে নতুন ব্যাংকগুলো।

এআই/এসএমএম