• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০১৯, ০৩:৩৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩১, ২০১৯, ০৩:৩৬ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন সফর নিয়ে প্রশ্ন ড. মোশাররফের

প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন সফর নিয়ে প্রশ্ন ড. মোশাররফের
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘদিন লন্ডন সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনা বিনা কারণে লন্ডনে অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রীর লন্ডন সফরের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে দেশে বন্যা ও ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতির আকার ধারণ করেছে যদি তিনি গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতেন তাহলে তিনি দেশের এমন পরিস্থিতিতে বিদেশে অবস্থান করতে পারতেন না। আমরা অতীতে দেখেছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের কোন দুর্যোগের সময় সরকারি সফরে বিদেশে থাকলেও তিনি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন। অথচ আজকে প্রধানমন্ত্রী দেশে নেই, স্বাস্থ্যমন্ত্রীও দেশে নেই।

বুধবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জ এ ডেঙ্গুরোগ, বর্তমান প্রেক্ষাপট ও আমাদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের মহাসচিব স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং দুই মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন কারণ তারা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের নেতারা বললেন ব্যর্থতা যাদের ঘাড়ে তাদের পদত্যাগ চাওয়া মানায় না। আমাদের সময় আমরা সতর্ক ছিলাম বলেই এই ধরনের ডেঙ্গুর বিস্তার বেশি ছিল না। সেই সার্থকতাটা নিয়েই আমরা বলছি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং দুই মেয়র ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে। অবশ্যই এই ব্যর্থতার দায়দায়িত্ব তাদেরকে নিতে হবে।

বিএনপির অন্যতম এই নীতিনির্ধারক বলেন, বাংলাদেশ যদি একটি গণতান্ত্রিক দেশ হতো, দেশে যদি একটি জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার থাকতো, তাহলে এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং দুই মেয়রের পদত্যাগ করার কথা ছিল। আজকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোথায়? আমি শুনতে পেরেছি তিনি স্বস্ত্রীক দেশের বাইরে। আজকে দুই মেয়র অতিকথন বলে এই ডেঙ্গুজ্বর নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তারা ব্যর্থ হয়ে এখন আর মিডিয়ার সামনে আসতে পারছেন না।

দেশে গুজব নয়, গজব নেমেছে মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, শিশু ধর্ষণ, বন্যা পরিস্থিতি, গণ পিটুনীতে মানুষ হত্যা করা, নারী হত্যা করা, ডেঙ্গু কোনটাই গুজব না। এগুলো আসলে গজব। সরকার তার ব্যর্থতা আড়াল করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুজব বলে চালিয়ে যাচ্ছে। যদি জনগণের নির্বাচিত সরকার হতো, গণতন্ত্রের সরকার হতো তাহলে তারা দেশের মানুষের প্রতি আন্তরিক হতো। সরকার আন্তরিক হলে এগুলোকে গুজব বলতে পারতো না। 

সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রীও দেশের বাইরে। দুই  সিটি করপোরেশন হাইকোর্টের নির্দেশও তারা মানেনি। হাইকোর্ট আবারও জানতে চেয়েছে কত দিনের মধ্যে ওষুধ আসবে। আইসিডিআরবির গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য হিসেবে বর্তমান ওষুধকে অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরও তারা এসব ওষুধ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সিটি করপোরেশনের কমিশন বাণিজ্য করার জন্য নিম্ন মানের ওষুধ আসছে। 

দেশের বন্যাও নিয়ন্ত্রণ করা যেতো উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়ির এই নেতা বলেন, ৫৪টা নদী ভারত থেকে আমাদের দেশে ঢুকেছে। সেগুলোতে বাধ আছে। যদি ভারতের সঙ্গে কথা বলে পর্যায়ক্রমে গেইট গুলো ছেড়ে দিত তাহলে বন্যাও নিয়ন্ত্রণ করা যেতো। জনগণের সরকার না হওয়ায় এ সরকার শক্তিশালী নয়। সরকার যদি আন্তরিক ও শক্তিশালী হতো, তাহলে এমন বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষকে পড়তে হতো না। এ সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ। অতিদ্রুত জরুরি একটা অবস্থা ঘোষণা করা দরকার। অযথা জনগণকে আতঙ্কিত না করে সরকারি বেসরকারি সকল ডাক্তারকে ব্যবহার করা হোক। জরুরি ডেঙ্গু সেবা সেন্টার ঘোষণা করা দরকার। জনগণের সরকার ছাড়া স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধান সম্ভব না।

আলোচনা সভা শেষে ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে ড্যাব নেতারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ডেঙ্গু সচেতনামূলক একটি র‌্যালি করেন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. হারুন হাল রশিদেরর সভাপতিত্ব আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম, সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, ড্যাব নেতা ডা. দিদারুল ইসলাম, ডা. নিলুফার ইয়াসমিন, ডা. একেএম কবির রিয়াজ প্রমুখ।


টিএস/টিএফ
 

আরও পড়ুন