কৃষিঋণ

৫ মাসে লক্ষ্যের এক-তৃতীয়াংশ বিতরণ

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৯:৪৫ পিএম ৫ মাসে লক্ষ্যের এক-তৃতীয়াংশ বিতরণ
কৃষিঋণ নিয়ে বহু কৃষক উপকৃত হচ্ছেন-ছবি : সংগৃহীত

হালনাগাদ প্র তি বে দ ন

● কৃষকদের মাঝে ২ শতাংশ বিতরণ করা বাধ্যতামূলক
● সুদের সর্বোচ্চ হার ৯ শতাংশ
● ঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করায় অর্থের সঞ্চালন বেড়েছে

৫ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলো এখনও তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কাছাকাছি যেতে পারেনি। এ পর্যন্ত ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৩ ভাগের ১ ভাগ বা শতকরা ৩৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে পেরেছে মাত্র। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় টাকার পরিমাণে ঋণ বিতরণ বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম ৫ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ৮ হাজার ৩০৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) এর হালনাগাদ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন থেকে চিত্র পাওয়া গেছে।

তথ্যমতে, বরাবরে মতো এবারও কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। এ পর্যন্ত বিতরণ হওয়ায় ৮ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৪ হাজার ৪৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

দেশি-বিদেশি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা অনেকগুণ বেশি হলেও তারা বিতরণ করেছে মাত্র ৪ হাজার ২৫৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা।

ঋণ-বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসের (জুলাই-নভেম্বর) ফসল উৎপাদনে ৪ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা, সেচ ও সেচযন্ত্র ক্রয়ে ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, কৃষিখামারে ১ হাজার ২৫১ কোটি ২৭ লাখ টাকা, শস্য সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণে ৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা, দারিদ্র্য দূরীকরণে কর্মোদ্যোগে ৬৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং কৃষি সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক কর্মকাণ্ডে ঋণ বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।​

আশা কথা হলো, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় টাকার পরিমাণের বিচারে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। গত অর্থবছরে একই সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ৭ হাজার ৪৭৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ওই বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

দুই অর্থবছরের একই সময়সীমার মধ্যে কৃষিঋণ বিতরণের হার প্রায় সমান দেখা গেছে তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে।

খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে। এই লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যাংকিংখাতের মোট বিতরণ করা ঋণের কমপক্ষে ২ শতাংশ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা বাধ্যতামূলক করা হয়। একই সঙ্গে সুদের সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেয়া হয়েছে ৯ শতাংশ। অনেক ব্যাংকই এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না। যেসব ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ কম করে, জরিমানা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। পরের বছর অনর্জিত টাকা পুনরায় বিতরণ করলে কেটে রাখা টাকা ফেরত দেয়া হয়।

সূত্র জানায়, ঋণ বিতরণে ২ শতাংশ বাধ্যতামূলক করে দেয়ায় কৃষিখাতে অর্থের সঞ্চালন বেড়েছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানমতে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে যখন কৃষিঋণ বিতরণ ২ শতাংশ হারে বাধ্যতামূলক করা হয়, সেই বছর কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকার কিছু ওপরে। ১০ বছরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় দেড়শ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

এসএমএম

আরও সংবাদ