হাইকোর্টের নির্দেশনা মানছে না বহু প্রতিষ্ঠান

কমছে না শিশুদের ‘অতিরিক্ত’ বইয়ের বোঝা

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২০, ০৯:১৯ পিএম কমছে না শিশুদের ‘অতিরিক্ত’ বইয়ের বোঝা
‘অতিরিক্ত’ বইয়ের চাপে ব্যাগ নিয়ে শিশুরা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরাও করতে পারছেন না ● সংগৃহীত

‘অতিরিক্ত’ বইয়ের কারণে শিশুদের ব্যাগের ওজন কমানোর বিষয়ে হাইকোর্টের যে নির্দেশনা রয়েছে তার মানছে না রাজধানীর বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর নির্ধারিত বইয়ের চেয়ে অতিরিক্ত বই শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ১০ থেকে ১২টি বই পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। বাধ্য করা হচ্ছে অতিরিক্ত বইগুলো বেশি দাম দিয়ে কিনতে। এ কারণে তাদের খরচ বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়ে গেছে শিশুদের ওপর মানসিক চাপও। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য বলছে, এ অবস্থা কাটাতে নজরদারি টিম গঠন করা হয়েছে। বাস্তবে তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

এনসিটিবি নির্ধারিত পাঠ্যবই প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে একটি, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে তিনটি, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম পর্যন্ত ১৪টি এবং নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের ১৮টি আর মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের ১৭টি।

সম্প্রতি ইন্ডিপেনডেন্ট টিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বোর্ড নির্ধারিত বইয়ের বাইরে ৮টি বই কেনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে স্কুল থেকে। অথচ এই শ্রেণিতে বোর্ড নির্ধারিত বই মাত্র ৬টি। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিটি শ্রেণিতেই অতিরিক্ত বই কিনতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের এক অভিভাবক বলেন, অতিরিক্ত বইয়ের বোঝার কারণে মানসিক চাপে থাকতে হয় আমার বাচ্চাকে।

মতিঝিলি কেন্দ্রিক নাম করা একটি স্কুলের এক শিক্ষার্থীর মা লাওফাতুল হাসান বলেন, অতিরিক্ত বই বাচ্চাদের অনেক চাপ বাড়াচ্ছে। অতিরিক্ত বইগুলো অনেক টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

স্কুল কর্তৃপক্ষও বিষয়টি স্বীকার করছে। তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তারা।

মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন বলেন, ইংরেজির ভিত্তি বাড়ানোর জন্য নিচের ক্লাসে অতিরিক্ত কিছু ইংরেজি বই দেয়া হয়েছে। তবে ওপরে ক্লাসে নাই অতিরিক্ত কোনও বই নেই।

মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজই নয়, রাজধানী এমন বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বোর্ড নির্ধারিত বইয়ের বাইরে অতিরিক্ত বই যুক্ত করছে।

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সাথে গোপন আর্থিক চুক্তির কারণেই স্কুলগুলো এসব বই কিনতে বাধ্য করছে।

অভিভাবকরা আরও বলছেন, মন্ত্রণালয়ের নজরদারির অভাবেই স্কুলগুলো এমন অনিয়ম করছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, অভিযোগ পাওয়া গেলে আর যদি প্রমাণিত হয় তবে মান্থলি পে-অর্ডার (এমপিও) বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেবে তারা।

ছবি ● সংগৃহীত

এসএসএম

আরও সংবাদ