• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০১৯, ০৮:১৭ পিএম

সিএনজি চালিত অটোরিকশা ডিলারের প্রতারণায় ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা

সিএনজি চালিত অটোরিকশা ডিলারের প্রতারণায় ক্ষুদ্ধ ব্যবসায়ীরা

 

সিএনজি চালিত অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারি খরচের চেয়ে তিনগুনের বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। উত্তরা মটরসের ডিলার রাজধানীর মগবাজারে ‘বাংলাদেশ মটরস’ একটি প্রতিষ্ঠান বেশ কিছুদিন ধরে এ কাণ্ড চালিয়ে আসছে। এ কাজে ইন্ধন যোগাচ্ছেন উত্তরা মটরসেরই দুই কর্মকর্তা। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

জানা গেছে, সিএনজি চালিত অটোরিকশা সরকারি রেজিষ্ট্রেশন ফি ১৩ হাজার ২শ’ টাকা, ট্রেজারি চালান দেড় হাজার, রেভিনিউ স্ট্যাম্প ৪শ’ এবং বিমার জন্য খরচ ৫শ’ টাকা। এতে খরচ দাড়ায় ১৫ হাজার ৬শ’ টাকা। কিন্তু  বাংলাদেশ মটরস ক্রেতাদের কাছে অটোরিকশা বিক্রির পর রেজিষ্ট্রেশনের জন্য কখনো ৪২ কখনো ৪৫ আবার কখনো ৪৮ হাজার টাকা দাবি করছে। বিআরটিএর ঝামেলা এড়াতে অনেকেই এই টাকা গুনছেন। তবে বেশিরভাগ ক্রেতাদের অভিযোগ তাদের উত্তরা মোটরসের দোহাই দিয়ে বাধ্য করা হচ্ছে টাকা দিতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মটরসের প্রকৃত ঠিকানা টাঙ্গাইল। তারা উত্তরা মটরস থেকে অটোরিকশা কিনে টাঙ্গাইলে বসে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু মগবাজার মোড়ের দিগন্ত এন্টারপ্রাইজ ও শীতক প্রকৌশলীসহ একাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে বসে অটোরিকশা বিক্রি ও রেজিষ্ট্রেশনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ক্রেতাদের টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকার মানি রিসিটও দেয়া হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশ মটরসের প্রোপাইটর রাজীব খানের সঙ্গে অটোরিকশা ক্রেতাদের সঙ্গে বচসা চলছে। কারও অভিযোগ মাত্রাতিরিক্ত টাকা নিয়েও অটোরিকশা  সরবরাহ করছেনা, আবার কেউ বলছেন সরকারি রেজিষ্ট্রশন ফি এর তিনগুন বেশি টাকা আদায় করছেন তারা। জুরাইনের সিএনজি ব্যবসায়ী রেজউল করিম, যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, মিরপুরের পাপ্পু, খিলগাঁওয়ের ফারুক হোসেন, মোহাম্মদপুরের আব্দুর রহিম, জীবন, পলাশীর বাচ্চুসহ আরও অনেকের অভিযোগ প্রায় একই।
  
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মটরসের স্বত্বাধিকারী রাজিব খান বলেন, সরকারি চাকরি নিতে মানুষ ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ করছে। আর বিআরটিএ অফিস থেকে অটোরিকশা রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে এনে কিছু বেশি টাকা নিতে সমস্যা কোথায়। তাছাড়া উত্তরা মটরসের নুরুদ্দীন জাহাঙ্গীর ও সাইফুল ইসলামকেও একটা টাকার অংশ দিতে হয়। যে কারণে কিছু বাড়তি টাকা নিতে হচ্ছে। 

ঢাকায় বসে টাঙ্গাইলের গাড়ি বিক্রি প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকায় তাদের শো রুম রয়েছে, সেখানে বসে তারা বিক্রি করছেন। অথচ বাংলাদেশ মটরস শো রমে বসেই অটোরিকশা বিক্রি করতে দেখা গেছে তাদের। ছোট একটি দোকান হলেও ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে সাইনবোর্ড রয়েছে চারটি। এগুলো হলো- এলপিজি অটো বাংলাদেশ, পিয়াজিও কমার্সিয়াল ভেহিকেল, দিগন্ত এন্টারপ্রাইজ, শীতক প্রকৌশলী ও বাংলাদেশ মটরস। এর পাশেই সুলতান মটরস ও দ্বীন ইসলাম মটরসে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও সেখানে বাড়তি টাকা নিয়ে কোন ঝামেলা লক্ষ করা যায়নি। 
এ বিষয়ে উত্তরা মটরসের কর্মকর্তা নুরুদ্দীন জাহাঙ্গীর এ নিয়ে তিনি কথা বলতে রাজী হননি। বিক্রয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেছেন, তারা শুধুমাত্র ডিলারদের কাছে অটোরিকশা বিক্রি করেন। বাংলাদেশ মটরস টাঙ্গাইলের ডিলার। রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে যদি কেউ বাড়তি টাকা নেয় তা বিআরটিএ দেখবে। কোনো ডিলারকে বাড়তি টাকা নেয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। 

এদিকে রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে এমন বাড়তি টাকা প্রসঙ্গে বিব্রত বিআরটিএর কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এটা কখনোই হতে পারেনা। উত্তরা মটরস অটোরিকশা আমদানি করে ডিলারদের কাছে সরবরাহ করছে। 

বিএস