• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০১৯, ০৯:৫৩ এএম

টাকা না পেয়ে আখ চাষ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন গাইবান্ধার চাষীরা

টাকা না পেয়ে আখ চাষ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন গাইবান্ধার চাষীরা
রংপুর চিনি কল

 

গাইবান্ধা জেলার একমাত্র কৃষিভিত্তিক ভারিশিল্প কারখানা উপজেলার মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলে দীর্ঘদিনেও সরবরাহ করা আখের সাড়ে ১৬ কোটি টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে আখ চাষ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন আখ চাষীরা।

বরং আখ রোপণ ও পরিচর্যার এ মৌসুমে আবাদ বাড়ানোর পরিবর্তে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক চাষিই তাদের জমিতে পূর্বে রোপণ করা আখ তুলে ফেলছেন। এর পাশাপাশি গত চার মাস ধরে বেতন ভাতার প্রায় চার কোটি টাকা না পাওয়ায় চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরাও খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

প্রতিদিন চিনিকলে এসে হাজিরা খাতায় সই করলেও কাজ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন তারা।

এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, বেসরকারি চিনিকলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার কারণে রংপুর চিনিকলসহ সকল সরকারি চিনিকলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় টাকার অভাবে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তার বেতন এবং চাষিদের পাওনা বিপুল অংকের টাকা পরিশোধ করা যায়নি। তবে অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের সাত ডিসেম্বর এ চিনিকলে ২০১৮-১৯ আখ মাড়াই মৌসুমের সূচনা করে এ বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭০ দিনে ৫৬ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করা হয়েছে ২ হাজার ২৪৩ মেট্রিক টন।

মিলস গেটসহ আটটি সাবজোনের চাষিদের সরবরাহ করা এ আখের মূল্য ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকার মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম সপ্তাহে সরবরাহ করা আখের মূল্য বাবদ চাষিদের মাত্র পৌনে দুই কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকী ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা এখনও পরিশোধ করা যায়নি।

পাশাপাশি শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের নভেম্বর মাসের পর থেকে বেতন-ভাতাও পরিশোধ করা হয়নি টাকার অভাবে।

 এ মাস (মার্চ) পর্যন্ত বেতন-ভাতার বকেয়া টাকার পরিমাণও দাঁড়িয়েছে চার কোটি টাকায়। এ ছাড়াও চিনিকলের নিজস্ব খামারের আখ উৎপাদন ও পরিচর্যার কাজে বকেয়া রয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।

 এ সব কারণে চিনিকলের সামগ্রিক কর্মকান্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে রংপুর চিনিকলের গুদামে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে আছে ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যের সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন চিনি।

 এ ছাড়াও বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থার আমদানি করা বিপুল পরিমাণ চিনিও বিক্রি না হওয়ায় পড়ে আছে গুদাম ভর্তি হয়ে। সরকারি চিনিকলগুলোতে দেশীয় আখ থেকে উৎপাদিত স্বাস্থ্যসম্মত বিপুল পরিমাণ চিনি বিদেশ থেকে আমদানি করা নিম্নমানের চিনির গাদ থেকে বেসরকারি চিনিকলে উৎপাদিত চিনির দাম কম হওয়ায় এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অবিক্রিত থাকায় সারা দেশের সকল চিনিকলেই একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ আনোয়ার হোসেন আকন্দ সকল অভিযোগেরই সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারের হস্তক্ষেপে দ্রুতই সমাধান হচ্ছে এ সমস্যার।

আগামি দুই-চার দিনের মধ্যেই চাষীদের সরবরাহ করা আখের বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হবে। পাশাপাশি বেতন-ভাতার টাকাও প্রদান করা হবে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের। 

বিএস