• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০১৯, ০৭:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ০২:২৬ এএম

বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে : অর্থমন্ত্রী

বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে : অর্থমন্ত্রী

আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

রোববার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্যদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যেহেতু পুঁজিবাজার আর আমাদের অর্থনীতি ইন্টারওভেন অ্যান্ড ইন্ট্রিগ্রেটেড। সঙ্গত কারণেই পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে, অবশ্যই থাকবে। সেখানে কতটা থাকবে আমি এই মুহুর্তে বলতে পারছি না। তবে অবশ্যই পুঁজিবাজারকে শক্তিশালীভাবে চালানোর জন্য যা কিছুই উপযোগ্য আমরা তাই কিছুর ব্যবস্থা করবো।

ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেট সিঙ্গেল ডিজিটে আনার বিষয়ে সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই জানি আমাদের ব্যাংকিং খাত অনেকের ধারণায় একটা নাজুক অবস্থায় আছে, এটা আমাদের স্বীকার করতে দোষ নেই। আমাদের প্রত্যেক দেশেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে। উন্নয়নশীল দেশে সকল খাতগুলোকে সমভাবে দেখে সুন্দরভাবে, সাবলিলভাবে পরিচালনা অনেক সময় হয়তো সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তিনি বলেন, তারপরেও আমাদের ব্যাংকিং খাত খারাপ করছে সেটা বলা যাবে না। যদি খারাপ করতো তাহলে গত পাঁচ বছরে পৃথিবীর অর্থনীতিতে যে দেশগুলো জিডিপি অর্জন করেছে তার মাঝে বাংলাদেশ হচ্ছে অন্যতম। সারা বিশ্বে সবার উপরে বাংলাদেশ, আমাদের সমকক্ষ হচ্ছে চীন আর ভারত। এই যে অর্জন ব্যাংক বাদ দিয়ে হয় না। ব্যাংক আমাদের বড় এলাকার। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির একটা বড় এলাকা হচ্ছে ব্যাংক। ব্যাংক খাত বাদ দিয়ে এই অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের রেট অফ ইন্টারেস্ট অনেক বেশি। যে পরিমাণ রেট অফ ইন্টারেস্ট ধরা হয় আসলে এইগুলো কিন্তু ব্যাংক পায় না। এইগুলোকে কয় দিন পর পর অবলোপন করতে হয়। ব্যাংক এবং ঋণ গ্রহীতা সবার স্বার্থে যেটা সুন্দর হয় আমরা একটা ইকুরিটিয়াম বের করবো। উভয়কে একটা উইন উইন সিচুয়েশন নিয়ে একটা সমাধান করবো।

মন্ত্রী বলেন, এত ইন্টারেস্ট রেট রাখলে, ১৪/১৫ শতাংশ ইন্টারেস্ট রেট পৃথিবীর কোথাও নেই। প্রধানমন্ত্রী অনেক বুঝে-শুনে শিল্প-বাণিজ্য সব কিছু রক্ষা করার জন্য তিনি যে সিঙ্গেল ডিজিটের কথা বলেছিলেন, এইটাই গ্রহণযোগ্য ছিল। যদি সিঙ্গেল ডিজিটের উপরে হয় তাহলে যিনি ঋণ নিয়েছেন তিনি শোধ দিতে পারবেন না। আর যারা ঋণ দিয়েছেন তারাও পাবেন না। দিন শেষে হিসেব করলে দেখা যাবে যেটা ৯ শতাংশ ধরা হচ্ছে সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আমি মনে করি, আমরা কাজ করছি এর উপরে। শিগগিরই কম্পিটিটিভ রেট, অত্যন্ত কম্পিটিটিভ রেট সারা বিশ্বের সাথে সমন্বিত করে আমরা সেই রেটটি করবো। সেটা যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে আমি মনে করি বাংলাদেশের ইতিহাসে আর্থিক খাতে এটা হবে একটা টার্নিং পয়েন্ট। এর উপর আমরা কাজ শুরু করেছি, শুধু বাস্তবায়নের পালা।

সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের ঋণখেলাপি সংক্রান্ত এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি আমাদের ব্যাংকিং খাত স্বাভাবিকভাবে চলতে না পারে আর ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে যায় আর নন-পারফর্মিং লোনের পরিমাণ যদি বেড়ে যায় তাহলে আমরা আমাদের অর্থনীতিতে যে গতিশীলতা সেখান থেকেও আমরা বিচ্যুত হব। রেট অফ ইন্টারেস্ট আমরা কমাবো। আর যদি রেট অফ ইন্টারেস্ট করা না যায় তাহলে নন পারফর্মিং লোন কখনো কমবে না। নন পারফর্মিং লোন তখনই হয় যখন ঋণ গ্রহীতা ঋণ পরিশোধ করতে পারে না। নন পারফর্মিং লোন হওয়ার কারণটিই হচ্ছে রেট অফ ইন্টারেস্ট ইজ টু মাচ হাই। তিনি বলেন, রেট অফ ইন্টারেস্ট কমাতে পারলেই আমাদের শিল্প-কারখানাগুলো বেচে যাবে। আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমি সকলের স্বার্থে এই কাজটি করতে চাচ্ছি। এরই মাঝে অনেক বিতর্ক হচ্ছে, অনেকে অনেক রকম কথা বলছে। আমরা মাফ করে দিচ্ছি। মাফ কিন্তু সারা বিশ্বে করে দেয়। আমার দেশে কিন্তু মাফ করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সকল ব্যবসায়ীকে জেলে পাঠিয়ে দিয়ে দেশের অর্থনীতি চালানো যাবে না। আবার সবাইকে মাফও করা যাবে না। ইচ্ছাকৃতভাবে যারা খেলাপি হয়ে যায় তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অ্যাকশন অবশ্যই নিতে হবে। আমাদের ব্যাংক খাতগুলোর রেট অফ ইন্টারেস্ট কমানো না গেলে নন পারফর্মিং লোন কমানো যাবে না।

সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমানের রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১০০ মিলিয়ন ডলারের মতো আমাদের হ্যাকিং হয়েছিল। এর মধ্যে ৩০ মিলিয়নের মতো আমরা ফেরত পেয়েছি। এখন আমাদের ৬০ মিলিয়ন ডলারের উপরে পাওয়া বাকী রয়ে গেছে। এ বিষয়ে একটা মামলা করা হয়েছে। মামলাটি এখন চলমান রয়েছে।

বেসরকারি ইন্সুরেন্স দেয়ার পরিকল্পনা নেই

'বেসরকারি ইন্সুরেন্স দেয়ার পরিকল্পনা নেই’ সংসদ সদস্য নূর নবী চৌধুরী শাওনের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বেসরকারিখাতে ৩১টি লাইফ ইন্সুরেন্স, ৪৫টি কোম্পানি নন-লাইফ ইন্সুরেন্স ব্যবসা পরিচালনা করছে। আপাতত নতুন কোনো বেসরকারি লাইফ বা নন-লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি অনুমোদনের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। ফারমার্স ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা ফেরত পাবেন পদ্মা ব্যাংক থেকে সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের পদ্মা ব্যাংক সংক্রান্ত এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে লোটাস কামাল বলেন, ফারমার্স ব্যাংক এখন পদ্মা ব্যাংকে ট্রান্সফার হয়েছে। আমরা দেশের কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাক এটা চাই না। আমরা চাই প্রত্যেকটা ব্যাংক সাবলিলভাবে দেশে কাজ চালিয়ে যাক। সেখানে তাদের যে পরিমাণ সাহায্য সহযোগিতা সরকারের পক্ষ থেকে করা দরকার সরকার সেটা অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, ফারমার্স ব্যাংক ফেল করেছে তার অর্থ এই নয় যে পদ্মা ব্যাংক ফেল করবে। আমি মনে করি, পদ্মা ব্যাংক আবার ঘুরে দাড়াবে। যারা ফারমার্স ব্যাংকে বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা পদ্মা ব্যাংক থেকে অবশ্যই সেই টাকা ফেরত পাবেন। পদ্মা ব্যাংক সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য। ফারমার্স ব্যাংক যা দিতো পদ্মা ব্যাংকও তাই দেবে।

এইচএস/এসএমএম