তিউনিশিয়া থেকে দেশে ফেরা ১৫ জনকে মানসিক এবং আর্থিক সহযোগিতা দেবে রেডক্রিসেন্ট। ভাগ্য বদলের জন্য এই হতভাগ্যরা অবৈধ পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। উপরন্তু কয়েক মাস নিদারুন দুঃখ কষ্ট ভোগ এবং পরিশেষে নৌকাডুবিতে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেছেন তারা। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) তত্ত্বাবধানে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করেছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।
রেড ক্রিসেন্টের পরবর্তী পদক্ষেপ বিষয়ে জানাতে চাইলে সংস্থাটির ঢাকা সদর দফতরের পরিচালক (পারিবারিক পুনঃযোগাযোগ স্থাপন বিভাগ) ইমাম জাফর সিকদার দৈনিক জাগরণকে বলেন, সকল আনুষ্ঠানিকতা পালন শেষে মঙ্গলবার (২১ মে) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সবাই নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেয় এবং যথাযথভাবে নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। তারা সবাই এখন মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত। এ প্রেক্ষিতে আমাদের প্রথম কাজ হলো- তারা যাতে মানসিক ধকল কাটিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবন শুরু করতেন পারে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করা। শিগগিরই মধ্যে আমরা আমাদের শাখাসমূহের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবো এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবো।
তিনি জানান, এর আগেও তারা ইজিবাইক ও অটোরিক্সা দিয়ে সহযোগিতা করছেন। তবে এই ১৫ জনের ব্যাপারে তারা আরও ভালো কিছু করার চিন্তা-ভাবনা করছেন।
মঙ্গলবার (২১ মে) ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের টিকে-৭১২ ফ্লাইটে করে দেশে ফিরেছেন তারা। গত ১০ মে অবৈধ পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে তিউনিশিয়া উপকূলে একটি নৌকা ডুবে যায়। ওই নৌকায় ৫৭ জন আরোহী ছিল বলে জানা গেছে। তাদের মধ্য থেকে ১৫ বাংলাদেশিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আইএমও উদ্যোগ নিয়ে রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এবং তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসে। বেঁচে ফেরা ১৫ বাংলাদেশি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে যাত্রাপথে নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। তারা জানান, ৬ মাস আগে তারা বিমানে করে দুবাই যান। সেখান থেকে তাদের তুরস্কের ইস্তাম্বুলে নেয়া হয়। সেখান থেকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে নেয়া হয়। পরে তাদের লিবিয়ার একটি দুর্গম অঞ্চলে নেয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে ৮০ জন বাংলাদেশিকে একসঙ্গে রাখা হয়। তাদের সারাদিনে মাত্র একবার খাবার দেয়া হতো। নিয়মিত পানি পাওয়া যেত না। তাদের নির্মম নির্যাতন করা হতো। সেখানে দীর্ঘদিন রাখার পর তাদের নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে পাঠানো হয়।
জেডএইচ/এসএমএম