• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২, ২০১৯, ১২:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২, ২০১৯, ১২:৫২ পিএম

সরকারের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময় : মান্না

সরকারের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময় : মান্না
মাহমুদুর রহমান মান্না

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন- সরকারের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার এখনই সময়। একথা সত্য দেশের বিরোধীদলীয় রাজনীতি আজ চোরাবালির কানাগলিতে আবদ্ধ। সে দলগুলোর মধ্যে নেই ঐক্য। যে কারণে ভোট ডাকাতির সরকার সুবিধা গ্রহণ করছে। বিরোধী রাজনীকদের কেউ কেউ আপোসকামী ও স্বার্থান্ধ মানসিকতার কারণে অবৈধ সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। যা প্রকৃত পক্ষে গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

শুক্রবার (০২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমা মান্না বলেন, একটি রাষ্ট্রে নৈরাজ্য তখনই দেখা দেয় যখন সেখানে গণতন্ত্র অনুপস্থিত থাকে। সেজন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ব্যক্তি, পরিবার ও দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে এ নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সেজন্য ভোট ডাকাতির লুটেরা সংসদ অবিলম্বে ভেঙ্গে দিতে হবে। সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সকলের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
 
তিনি বলেন, ডেঙ্গু আজ দেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে। রাজধানী থেকে ডেঙ্গু এখন দেশের ৬৪টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ এই ভয়াবহ সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পারিবারিক প্রমোদ ভ্রমণে বিদেশ সফর করেছে। সমালোচনার মুখে বাধ্য হয়ে সে বিদেশ থেকে দেশে ফিরলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের কারণে সাংবাদিকদের সে ধমক দিয়েছে। সিটি করপোরেশন মশা মারতে কার্যত নাটক করেছে। 

তিনি বলেন,পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ডেঙ্গু পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। যদিও সরকার বলছে মাত্র ৫ জন কিন্তু পত্রিকান্তরে খবরে প্রকাশ এ পর্যন্ত ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার বাইরে প্রায় সব জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ মাত্র ৩/৪ দিন আগে আমরা দেখেছি এই ডেঙ্গু নিয়ে সরকারের স্বাস্থমন্ত্রী এবং সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র কি বাগাড়ম্বর করেছেন, অনর্থক বিরোধী দলীয় রাজনীতি কে দোষারোপ করেছেন। একথা নিশ্চিত করেই বলা যায় এদের হাতে দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। এরা এখন পর্যন্ত মশা মারার ওষুধ আমদানি করতে পারেনি। কিন্তু মশা মারার  নামে নান ধরনের নাটক করছে। ঢাকা মহানগরের সব হাসপাতাল ডেঙ্গু রোগীতে ভর্তি হয়ে গেছে। আগামীতে আরো যারা আক্রান্ত হবেন তাদের জায়গা দেয়া হবে কোথায়, চিকিৎসা হবে কিভাবে?

মান্না বলেন, একটা জাতীয় সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছি আমরা। নাগরিক ঐক্যের আজকের জরুরি সভা সরকারের দায়িত্বশীল লোকদের প্রতি আহবান জানাচ্ছে যে - ক. এই প্রতারণামূলক আচরণ থেকে বিরত থাকুন খ. কোন কিছুতে ব্যর্থ হলেই প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। 'মশা মারতে হবে' - প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের কোন নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করে অকালকুষ্মাণ্ডরা।
এই জাতীয় দূর্যোগ মোকাবেলায় নাগরিক ঐক্যর পক্ষ থেকে কিছু দাবি জানানো হয়। সেগুলো হচ্ছে - ১. প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্যাম্প স্থাপন ও প্রতিদিন মশা মারার ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে; এবং ২. প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বিনা পয়সায় পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষের জীবন মৃত্যুর এই সন্ধিক্ষণে সরকারের যেকোন অবহেলা ও অব্যবস্থাপনা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মান্না আরও বলেন, এদিকে সারাদেশ ভয়াবহ বন্যার কবলে পতিত। এখন পর্যন্ত ১২১জন মানুষ বন্যায় মারা গেছেন। দুর্গতরা কোনো ত্রাণ পাচ্ছেন না। অথচ সরকার বন্যার্তদের পাশে না দাড়িয়ে অহেতুক বিরোধীদলকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে। সারাদেশে এখন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, চাপাতির কোপে খুন, ধর্ষন, সরকারী দলের নেতা ও মাস্তানদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এসবের সঙ্গে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও জড়িত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে রিফাত হত্যার পর সরকারী দল ও পুলিশ বাহিনী যে ভূমিকা পালন করেছে, তা ভয়াবহ। সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। তারা যতই উন্নয়নের ঢাকঢোল বাজাক না কেন, ইতোমধ্যেই সরকারের সব জারিজুরি মানুষের কাছে ধরা খেয়েছে।

মান্না বলেন, খাদ্যে ভেজাল আজ মানুষকে নিজের জীবন সম্পর্কে ভাবিয়ে তুলেছে। সবাইকে ভলতে শোনা যাচ্ছে, আমরা কি খেয়ে বাঁচব। সব কিছুতেই ভেজাল ! দুধের ভেজাল, ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও এন্টিবায়েটিক আছে গবেষনার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিজ্ঞানী ড. আবদুস সামাদ প্রমাণ করলেও তাকে এজন্য চরম মানসিক পীড়ন ও হেয় করা হয়েছে। সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা অধ্যাপক সামাদের উপর এমন নিপীড়ন চালিয়েছে যে, ভবিষ্যতে কাউকে এ ধরণের দেশহিতকর গবেষণায় আর উদ্ভুদ্ধ করবে না। অথচ সভ্য দেশ হলে রাষ্ট্র তাকে উপযুক্ত সন্মান ও পুরস্কৃত করতো। কিন্তু এক ক্ষেত্রে ঘটেছে ঠিক উল্টো।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যর উপদেষ্টা এসএম আকরাম, সমন্বয়ক শহিদুল্লাহ কায়সার, কেন্দ্রীয় নেতা মমিনুল ইসলাম, ডা. জাহিদুর রহমান রহমান, মোফাখারুল ইসলাম নবাব, জিন্নুর রহমান দিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

টিএস/বিএস 


 

আরও পড়ুন