রাজধানীর গুলশানের সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে করোনাভাইরাস শনাক্তে ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর জালিয়াতি ঢাকতে হাসপাতালটি বিলের তথ্য পর্যন্ত গায়েব করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব জানায়, অভিযানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বেশকিছু বিলের ডকুমেন্ট হাতে পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত বিল বাণিজ্যের অনেক তথ্য হাসপাতালের অ্যাকাউন্ট বা বিল বিভাগের কম্পিউটার থেকে ডিলিট করে দিয়েছে। চলতি বছরের জুনের কোনো ডাটাই হাসপাতালের সার্ভারে নেই। অভিযানের আগেই সমস্ত ডাটা ডিলিট করে ফেলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কার নির্দেশে, কে এই কাজটি করেছেন সেটি খতিয়ে দেখছেন র্যাব কর্মকর্তারা।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এই হাসপাতাল রোগী ভর্তি রেখে অতিরিক্ত বিল বাণিজ্য করছিল। এছাড়া রোগীদের বিল বাড়াতে একই টেস্ট দুই থেকে তিন বার দেখানো হতো। কোভিড-১৯ নেগেটিভ রোগীদের ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে তাদেরও ভর্তি করা হতো। পাশাপাশি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত নানা টেস্ট দেখিয়ে তাদের আইসিউ ও কেবিনে রেখে বানানো হতো মোট অঙ্কের বিল।
অতিরিক্ত বিল ও টেস্ট বাণিজ্য বন্ধে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, এই বাণিজ্য যারাই করছেন, দ্রুত বন্ধ করুন। নয়তো, এসব অপরাধীকে কঠোর আইনের আওতায় আনা হবে।
সারোয়ার আলম বলেন, হাসপাতালটি জুন মাসের সমস্ত বিলের ডাটা ডিলিট করে দিয়েছে। এছাড়া সহকারী পরিচালক ডা. মো. আবুল হাসনাতের তথ্যমতে, ৯টি র্যাপিড টেস্ট কিট উদ্ধার করা হয়েছে। আরো কিট ছিল, সেগুলো তারা সরিয়ে ফেলেছে। মামলা দায়ের হলে আমরা আরো তথ্য উদ্ধার করব।
রোববার বিকেলে সাহাবুদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ঔষুধ প্রশাসনের সমন্বয়ে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন।
অভিযানে দেখা যায়, এক বছর ধরে এই হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই, নবায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সরকারের অনুমোদন পাওয়ার আগেই হাসপাতালটি কোভিড-১৯ টেস্ট করছিল। কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য হাসপাতালটি অনুমোদন পেলেও এখানে আর্টিফিসিয়াল মেশিন না থাকায় এক সপ্তাহ আগে অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।