• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৬, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৬, ২০১৯, ০৬:৩১ পিএম

বেফাঁস মন্তব্য করছেন মন্ত্রীরা : বাম গণতান্ত্রিক জোট

বেফাঁস মন্তব্য করছেন মন্ত্রীরা : বাম গণতান্ত্রিক জোট

 

বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেছেন, কৃষক ধানের দাম না পেয়ে খেতে আগুন দিচ্ছে। ধানের বস্তায় আগুন দিচ্ছে। অথচ খাদ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী কেউই দায় না নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করছেন। ব্যর্থতার দায় নিয়ে এই সব মন্ত্রীদের পদত্যাগ করা উচিত। রোববার (২৬ মে) পুরানা পল্টনে মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতারা বলেন, কৃষকের মনের আগুন নেভাতে সরকার ব্যর্থ হলে সরকারের গদিতে আগুন লেগে যাবে। আর দাম না পেয়ে যদি কৃষক উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হয় তাহলে দেশ খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে বলেও তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

তারা অবিলম্বে ধানের লাভজনক দাম নিশ্চিত, ধান ক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি ও ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবি জানান।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ। বক্তব্য রাখেন শাহ আলম ও সাইফুল হক। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মানস নন্দী, হামিদুল হক, লিয়াকত আলী, রুহিন হোসেন প্রিন্স, জুলফিকার আলী, খালেকুজ্জামান লিপন, শম্পা বসু প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, সরকার ঋণ খেলাপীদের শাস্তি না দিয়ে উল্টো ২% ডাউন পেমেন্টে রিসিডিউল করে ১০ বছরের জন্য পুনরায় লুটপাটের সুযোগ করে দিচ্ছে। এটা দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাতকে ছোবড়া করে দেবে। তিনি ব্যাংক ও আর্থিক খাতে শৃংখলা আনতে ঋণখেলাপীদের পুরষ্কৃত নয় শাস্তি দিতে হবে এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান।

সাংবাদিকদের এক অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুল হক বলেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটের জন্য দায়ী গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অধিষ্ঠিত সরকার। ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দেশে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। এর অবসানের জন্য দ্রুত বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে দল নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধিনে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহ আলম বলেন, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকেরা তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। সরকার বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তাদের দাবি মানছে না। ষড়যন্ত্র করছে পাটকলগুলো বিক্রির। তিনি অবিলম্বে পাটকল শ্রমিকদের ৯ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশে নারী-শিশু নির্যাতন ভায়বহ রূপ নিয়েছে। এটা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার। প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়ন ও দল মত নির্বিশেষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ভেজালমুক্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়। এতে আরো লিখিত বক্তব্যে বলা হয় দুর্নীতি আজ মহামারী রূপ নিয়েছে। যত বড় পকল্প তত বড় দুর্নীতি, মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতি, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বালিশ কা- দুর্নীতিার একটি প্রতীক মাত্র। সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ২৯ মে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রগতি সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেট নিয়ে ‘জনগণের জন্য কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানের এবং আগামী ২৮ মে এর মধ্যে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন সহ ৯ দফা দাবি মেনে না নিলে আগামী ৩০ মে বিজিএমসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। একই সাথে কৃষকের ধানের লাভজনক দাম নিশ্চিত, ঋণখেলাপীদের এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ঈদের পর বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক কার্যালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাও সহ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।

টিএস/ এসজেড