• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০১৯, ০৬:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৪, ২০১৯, ০৬:৩৬ পিএম

বৈষম্যের দৈত্য থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই: মেনন

বৈষম্যের দৈত্য থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই: মেনন

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, “সমৃদ্ধির পথ চলায় বৈষম্যের যে সিন্দাবাদের দৈত্য জাতির ঘাড়ে চেপে বসে আছে তা থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় বাজেটে নেই। বরং মধ্যবিত্তকে চাপে রেখে ধনীদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

শুক্রবার (১৪ জুন) বিকালে নারায়গঞ্জের চাষাড়ায় ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত জেলা সদস্যদের সাধারণ সভায় প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় রাশেদ খান মেনন বাজেট প্রসঙ্গে আরও বলেন, একদিন এই নারায়ণগঞ্জের সভাতেই ঋণ খেলাপীদের বিশেষ ছাড় দিয়ে জারি করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদ করেছিলাম। হাইকোর্ট সেই প্রজ্ঞাপন আটকে দেয়ায় তা এখনও কার্যকর হয়নি। কিন্তু ঐ ব্যবস্থা ঘোষণার পরিণতিতেই গত এক মাসে ঋণ খেলাপীর পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে একলক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা বাজেট পরিমাণের এক-পঞ্চমাংশ। অর্থমন্ত্রী খেলাপীদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থার কথা বলছেন, ব্যাংক খাতের সংস্কারের কথাও বলেছেন; কিন্তু এ সবই ভবিষ্যৎবাচক, বর্তমান এখনও ব্যাংক লুটেরা ও ঋণ খেলাপীদের হাতেই বন্দী।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিক বৈষম্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মেনন বলেন, “কেবল আয় বৈষম্যই নয়; আঞ্চলিক বৈষম্য, গ্রাম-শহর বৈষম্য অর্থনীতির ভারসাম্যকে নষ্ট করছে। বাংলাদেশের সম্পদ এখন কেন্দ্রীভূত মুষ্টিমেয় ধনীর হাতে। 

মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের বাইশ পরিবারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এদেশের মানুষ। এখন এদেশে ‘সুপার ধনী’দের সংখ্যা আরও কম। তারাই ক্ষমতার চার পাশে  বলয় তৈরী করে রেখেছে। বঙ্গবন্ধু সেই ‘শোষিতের গণতন্ত্র’র কথা বলতেন। ২০২১ সালের সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনীতির বর্তমান উদারবাদী ধারা সেই গণতন্ত্রকে কোন পরিণতি দেবে- এই বাজেট পাঠে তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয় না।

মেনন আরও বলেন, স্মার্ট ফোন আর ফিচার ফোনের মধ্যে শুল্ক কার্যকর করে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও ডিজিটাল ডিভাইসকে আরও রাঙিয়ে তুললেন অর্থমন্ত্রী। পোশাক শিল্পের মালিকদের জন্য প্রণোদনা বাড়লেও এ মূল চালিকা শক্তি শ্রমিকরা সেই তিমিরেই পড়ে রইলেন। আর যে কৃষক ধানসহ তার উৎপাদিত ফসলের দাম না পেয়ে চরম দুরবস্থায়, তাদের পণ্যমূল্য সহায়তারও কোন ব্যবস্থা নেই এই বাজেটে। বাংলাদেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধির পেছনে যারা মূল শক্তি সেই কৃষক, শ্রমিক, নারী উদ্যোক্তা অবহেলিতই রয়ে গেলেন।

রাশেদ খান মেনন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীদের জনজীবনের প্রতিটি ইস্যুতে জনগণকে আন্দোলন ও সংগঠনের ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে মেনন বলেন, দেশের অর্থনীতি ও দেশকে রাহুমুক্ত করতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সাম্য, মানবিক মর্যাদাবোধ ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার বিষয়টিকে বিশেষভাবে তুলে ধরতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা, আবুল বাশার, মহম্মদ নাসির হোসেন, মাইনুদ্দিন বারী, বাহারউদ্দীন, আবুল হোসেন পাঠান প্রমুখ। সভার শুরুতে ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য শফিউদ্দিন আহম্মদের স্ত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।

জেডএইচ/এমএইউ