• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০১৯, ০৯:৩৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৬, ২০১৯, ০৯:৩৪ পিএম

ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের দাবি মানা সম্ভব নয়: গয়েশ্বর 

ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের দাবি মানা সম্ভব নয়: গয়েশ্বর 
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা উঠিয়ে দেয়ার যে দাবি বিক্ষুব্ধরা করছে তা মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিপির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, যারা এ দাবিতে কর্মসূচিতে দিচ্ছে, তারা যদি তাদের দাবিতে অনড় থাকেন যে, আমরা ছাত্রদলই করবো-সেই ক্ষেত্রে এই দাবি মানাটা দলের পক্ষে কষ্টকর। অন্যায় দাবি তো মানা সম্ভব না কারও পক্ষে। যেমন অতীতে যেটা হয়েছে-তাই হতে হবে। এটা থেকে আমরা পরিবর্তিত হবো না। তাদের এমন অঙ্গীকার থাকা তো ভালো না। 

রোববার (১৬ জুন) পুরান-নতুনের সমন্বয়ে স্বল্প মেয়াদি কমিটি গঠনের দাবিতে আবারও ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর এই বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা নয়াপল্টনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নিজ অফিসে প্রশ্ন করলে তিনি এসব বলেন। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমি বলতে চাই, যারা অবস্থান নিয়েছে তাদেরকে দল পরিত্যক্ত ঘোষণা করেনি। যারা অবস্থান নিয়েছে তারা রাজনৈতিক ক্ষেত্র, রাজনৈতিক অবস্থানে তারা রাজনীতি করতে পারবে,  করতে চাইবে-আমরা সেই সুযোগটা তৈরি করে দেবো এবং সেই ক্ষেত্রে তাদেরকে আমরা শতভাগ সহযোগিতাও করবো। এটা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান (তারেক রহমান) তিনিও দেবেন।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রোববার দুপুর ১২টা থেকে দুই ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির বিক্ষুব্ধ নেতা ও তাদের অনুসারী কর্মীরা। তাদের দাবি ছাত্র দলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নেতৃত্বে আসতে বয়সসীমা নির্ধারণের যে শর্তারোপ করা হয়েছে তা তুলে দিতে হবে। একই সঙ্গে আগামীকাল সোমবার একই দাবিতে তারা আবারও নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে।

প্রসঙ্গত যারা ২০০১ সালে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তারা ছাত্রদলের আগামী কমিটি গঠনে কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবে বলে গত ৩ জুন ছাত্রদলের রাজীব আহসান ও আকরামুল হাসানের নেতৃত্বে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি।

ছাত্রদলের চলমান সংকট উত্তোরণের বিষয়ে জানতে চাইলে গয়েশ্বর রায় বলেন, ছাত্রদলের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তটা আমরা নেইনি। গত ৪০ বছর ধরে যারা ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের সমন্বয়ে এবং তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়েছে। তারাই ভালো বুঝেন, ‘ছাত্রদের জন্য কী করা দরকার?’

তিনি বলেন, ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে এবং তার পরিসমাপ্তি ঘটে। পরবর্তী পর্যায়ে তারা অন্য রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। আমরাও ছাত্র রাজনীতি করেছি, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি এবং একাত্তরের যুদ্ধের পর আমাদেরও ছাত্রত্ব ছিলো না। আমরা যুব রাজনীতিতে এসেছি। তারপরে জাতীয় রাজনীতিতে পর্দাপন করেছি। সুতরাং রাজনীতির পথ চলা সামনের দিকে লক্ষ্য। এখন আমি যদি পণ করি আজীবন ছাত্রদল করবো  তাহলে আমি ছাত্রদল করলাম । তাহলে আমি তো রাজনীতির লক্ষ্যে পৌছালাম না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যারা ছাত্র নেই  তাদের ছাত্র রাজনীতি করার ইচ্ছাটা সঠিক না। যারাই দীর্ঘদিন ছাত্রদল করছে, আগামী দিন করতে পারবে না। তারা রাজনীতিতে তাদের ক্ষেত্র, তাদের অবস্থান সৃষ্টি করার দায়িত্ব আমাদের আছে।

তিনি বলেন, তারা যেন আগামীদিনে রাজনীতিতে আরও তাদের শ্রম মেধা দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারে-সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন। এই যৌক্তিক কথাগুলো তাদের (বিক্ষুব্ধদের) বুঝতে হবে। ছাত্ররা ছাত্র রাজনীতি করবে এটাই সাধারণ মানুষের ইচ্ছা। যারা ছাত্র না তারা ছাত্র রাজনীতি করলে আপনারা (সাংবাদিকরা) মিডিয়ার মাধ্যমে নানা সমালোচনা করেন। এমন যদি চলতে থাকে,  সেখান থেকে আমরা আমাদের এই সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে পারবো না, তাতো না। একদিন না একদিন উদ্যোগ নিয়ে আমাদেরকে যার যেখানে মানায় সেখানে থাকতে হবে-সেই সিদ্ধান্ত নিতেই হবে বলেও জানান বিএনপির অন্যতম এই নীতি নির্ধারক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ঃ

টিএস/বিএস