• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০১৯, ০৯:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৬, ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন ও শপথ প্রশ্নে ক্ষোভ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন ও শপথ প্রশ্নে ক্ষোভ

প্রায় দেড় মাস পর দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী কমিটি জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেছে বিএনপি।

শনিবার ( ১৫ জুন) সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে অংশ নেন। তবে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়াই বৈঠক মূলতবি ঘোষণা করা হয়।

আগামী শনিবার (২২ জুন) স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠক হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় জানান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, দলের সাংগঠনিক কাঠামো এবং ছাত্রদলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।

তিনি জানান, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বয়স-সীমা উঠিয়ে দেয়ার যে দাবি বিক্ষুব্ধরা করছে তা মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে বৈঠক একমত হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও আগের রাতে ভোট কাটার অভিযোগ করে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার পরও বিএনপির শপথ গ্রহণ, সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন এবং বগুড়া উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত স্থায়ী কমিটিতে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির এক নেতা।

এ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভূমিকার সমালোচনা করলে দুই নেতার মধ্যে মৃদু বাদানুবাদও হয় বৈঠকে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে বৈঠকে সংযুক্ত থাকলেও তিনি এ সময় কোনও মন্তব্য বা হস্তক্ষেপ করেননি। পরে স্থায়ী কমিটির অপর সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতে স্থায়ী কমিটির সিনিয়র এক সদস্য দলের সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন। বিশেষ করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ ও তার পরিবর্তী পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মহাসচিবের ভূমিকার সমালোচনাও করেন ওই নেতা।

বৈঠকে অংশ নেয়া এক নেতা বলেন, দুই নেতার মধ্যে বাদানুবাদ চলতে থাকলে স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা তাদের থামান ও পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বক্তব্য উপস্থাপনকারী বৈঠকের শুরুতেই বলেন, ‘‘আমরা বলেছিলাম আমরা শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাব না। কিন্তু তারপরও গিয়েছি। আমরা বলেছিলাম, আমরা খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাব না। কিন্তু তারপরও গিয়েছি। তিনি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে বলেন, সিদ্ধান্ত আমরা পরিবর্তন করতেই পারি। আপনি শপথ নিলেন না। তাহলে দাঁড়ালোটা কী? ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কি একই বিষয়ে দুই ধরনের সিদ্ধান্ত দিলেন? আবার আপনি বললেন (ফখরুল) শপথ না নেয়ার বিষয়ে আমাদের আগের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। এ কথা কেন আপনি বলতে গেলেন?’’ 

স্থায়ী কমিটির অপর এক নেতা বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হলে দলের ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তিনি বলেন, বৈঠকে কিছুটা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হলেও বিষয়টি একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। কারণ সবার মধ্যে ক্ষোভ ছিল। যা আলোচনার মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও কমেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপির অন্যতম সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির আন্দোলন ও বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থায়ী কমিটির নেতাদের বলেন, ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তি ও বয়স-সীমা নির্ধারণ বিষয়ে তিনি সাবেক ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছাত্রদলের সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করবেন। আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে এ বিষয়ে তাদের সহায়তা করবেন।

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কর্মসূচি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। তবে কর্মসূচির বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। পরের শনিবার আবারও স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসবে। সেই বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে।

টিএস/এসএমএম