• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০১৮, ০৯:০৬ এএম

সংসদে ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে

সংসদে ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে

 


জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।  দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা।  ধীরে ধীরে সংসদে ব্যবসায়ীদের হার বেড়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়ীর তোড়জোর লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জাগরণকে বলেন, সংসদে ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বৃদ্ধি কোনও ক্ষতির কারণ নয়। ক্ষতি হয় কোরাম সংকট হলে।

জানা গেছে, দশটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছেন ১০৭১ জন ব্যবসায়ী। এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে (মোট দশটি নির্বাচনে) তাদের সংসদ সদস্য হওয়ার হার দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা ৫৯ শতাংশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হবার আগে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ২৫ জন ব্যবসায়ী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদে যাওয়া ব্যবসায়ীর হার ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ৫২ জন ব্যবসায়ী। সেসময় এ হার দাঁড়ায় ১৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এছাড়া ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ৮৫ জন ব্যবসায়ী (২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ), ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ৬৯ জন ব্যবসায়ী (২৩ শতাংশ), ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ৫০ জন ব্যবসায়ী (১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ), ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ১০৫ জন ব্যবসায়ী (৩৫ শতাংশ), ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ৯১ জন ব্যবসায়ী (৩০ দশমিক ৩৪ শতাংশ), ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৩০ জন ব্যবসায়ী (৪৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ), ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৫৬ জন ব্যবসায়ী (৫২ শতাংশ), ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৫৬ জন ব্যবসায়ী (৫২ শতাংশ) এবং ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৭৭ জন ব্যবসায়ী (৫৯ শতাংশ)।

জানা গেছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দুই শতাধিক ব্যবসায়ী প্রচারণায় রয়েছেন। এ এস এম সামছুল আরেফিন সংকলিত ও সম্পাদিত ‘বাংলাদেশের নির্বাচন ১৯৭০-২০০১’ বইয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশ স্বাধীনের আগের ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছিলেন রংপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুর রহমান চৌধুরী, রংপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আমীন, রংপুর-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আবুল হোসেন, রংপুর-১৯ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. ওলিউর রহমান, বগুড়া-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কসিম উদ্দিন আহমেদ, রাজশাহী ১৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম (পরে সদস্যপদ বাতিল করা হয়), পাবনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সৈয়দ হায়দার আলী, পাবনা-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের রওশানুল হক মতি মিয়া, যশোর-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের শাহ হাদীউজ্জামান, বাকেরগঞ্জ-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. আমীর হোসেন আমু, ঢাকা-২৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মোসলেম উদ্দিন ভুইয়া, ঢাকা-৩০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের এম এ সাত্তার ভুইয়া, ফরিদপুর-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, সিলেট-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল জহুর মিয়া, সিলেট-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের তোয়াবুর রহিম, সিলেট-১৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আলতাফুর রহমান চৌধুরী, কুমিল্লা-১২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল আজিজ খান, কুমিল্লা-১৩ থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল হাকিম মিয়া, কুমিল্লা-১৯ থেকে আওয়ামী লীগের মৌ. জালাল আহমেদ, কুমিল্লা-২৩ থেকে আওয়ামী লীগের গোলাম মোর্শেদ ফারুকী, নোয়াখালী-১ থেকে আওয়ামী লীগের এ এফ কে সফদার, নোয়াখালী-১৩ থেকে আওয়ামী লীগের এম সিরাজুল ইসলাম, নোয়াখালী-১৪ থেকে আওয়ামী লীগের মৌ. আমিরুল ইসলাম (কালাম), চট্টগ্রাম-১২ থেকে আওয়ামী লীগের আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবু (সদস্যপদ বাতিল করা হয়) এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম-২ থেকে স্বতন্ত্র হিসেবে অং শু প্রু চৌধুরী। ওই নির্বাচনে অংশ নেন মোট ২৫ জন ব্যবসায়ী।

অপরদিকে ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে অংশ নেন ৫২ ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে ছিলেন- রংপুর-৯ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, রংপুর-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আবুল হোসেন, রংপুর-২০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. ওলিউর রহমান, দিনাজপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আলী আকবর, দিনাজপুর-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল হক সবুজ, বগুড়া-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কসিম উদ্দিন আহমেদ, রাজশাহী-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের শাহ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রাজশাহী-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সরদার মো. জাহাঙ্গীর, রাজশাহী-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল জলিল, পাবনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সৈয়দ হায়দার আলী, পাবনা-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের রওশানুল হক মতি মিয়া, কুষ্টিয়া-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. ছহিউদ্দিন, যশোর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের নুরে আলম সিদ্দিকী, যশোর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের জে কে এম এ আজিজ, যশোর-৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. আবুল ইসলাম, যশোর-৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের শাহ হাদীউজ্জামান, খুলনা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের এম আবুল খায়ের, খুলনা-৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের এম এ বারী, খুলনা-১১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ মহসীন, খুলনা-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকী, পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. হাবিবুর রহমান মিয়া, বাকেরগঞ্জ-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহম্মেদ, বাকেরগঞ্জ-৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. আমীর হোসেন আমু, বাকেরগঞ্জ-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের চিত্ত রঞ্জন সুতার, টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান, ময়মনসিংহ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. রাশেদ মোশাররফ, ময়মনসিংহ-৯ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. কুদরত উল্লাহ মণ্ডল, ময়মনসিংহ-২০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল মজিদ তারা মিয়া, ময়মনসিংহ-২৯ থেকে আওয়ামী লীগের এম এ কুদ্দুস, ঢাকা-১১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের বোরহান উদ্দিন আহমেদ গগন, ঢাকা-১২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের (উপনির্বাচন) মোহাম্মদ হানিফ, ঢাকা-১৬ আসন থেকে আওয়ামী লীগের শামসুল হক, ঢাকা-১৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আনোয়ার জং তালুকদার, ঢাকা-২৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের রবিউল আউয়াল খান কিরন, ঢাকা-২৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মোসলেম উদ্দিন ভূইয়া, ঢাকা-২৮ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মো. মোবারক হোসেন, ঢাকা-৩০ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের মো. শামসুজ্জোহা, ফরিদপুর-৭ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কে এম ওবায়দুর রহমান, ফরিদপুর-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, সিলেট-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের তোয়াবুর রহিম, সিলেট-১৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আলতাফুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-২১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল মান্নান, কুমিল্লা-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল কুদ্দুস মাখন, কুমিল্লা-১৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের আব্দুল হাকিম মিয়া, কুমিল্লা-১৯ থেকে আওয়ামী লীগের মৌ. জালাল আহমেদ, কুমিল্লা-২৩ থেকে আওয়ামী লীগের গোলাম মোর্শেদ ফারুকী, কুমিল্লা-২৪ থেকে আওয়ামী লীগের মিজানুর রহমান চৌধুরী, নোয়াখালী-১৩ থেকে আওয়ামী লীগের এম সিরাজুল ইসলাম, নোয়াখালী-১৪ থেকে আওয়ামী লীগের মৌ. আমিরুল ইসলাম কালাম, চট্টগ্রাম-১৫ থেকে আওয়ামী লীগের শাহ্-ই-জাহান চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-১৭ থেকে আওয়ামী লীগের মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী।

কেএ/এফসি