• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৬:২০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম

পাপের ভারে আওয়ামী লীগ খুব শিগগিরই ক্ষমতাচ্যুত হবে : অলি

পাপের ভারে আওয়ামী লীগ খুব শিগগিরই ক্ষমতাচ্যুত হবে :  অলি
এলডিপির সভাপতি ও জাতীয় মুক্তিমঞ্চের সমন্বয়কারী ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম

এলডিপির সভাপতি ও জাতীয় মুক্তিমঞ্চের সমন্বয়কারী ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, আমরা এদেশ স্বাধীন করেছি। সুতরাং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেকের তাড়নায়, চুপ করে বসে থাকতে পারি না। এদেশের জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এবং সে দায়িত্ব পালনে আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, পাপের ভারে আওয়ামী লীগ খুব শিগগিরই ক্ষমতাচ্যুত হবে। অতীতেও অনেকের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। সুতরাং সময়ক্ষেপন করে লাভ হবে না। যত দ্রুত সম্ভব সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করুন। তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্নেল অলি আহমদ বলেন, ‘‘গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ সরকার জানতে পারল, ঢাকাসহ দেশের সর্বত্র ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও কৃষকলীগের কিছু সদস্যরা জুয়া, মদ এবং অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এর সাথে জড়িত ঢাকা মেট্রোপলিটনের কিছু কিছু কর্তা-ব্যক্তি ও থানার ওসিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব এবং প্রধান প্রকৌশলীরা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কয়েক লক্ষ হাজার কোটি টাকা ঘুষ হিসাবে গ্রহণ করে বিদেশে পাচার করেছে। জি কে শামীমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বস্তায় বস্তায় টাকা মন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে এবং টিআইবির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছে। অনুরূপভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখন জনগণের মনে প্রশ্ন হল, তাদের কষ্টার্জিত এই টাকা গুটি কয়েক অসাধু রাজনীতিবিদ এবং সরকারি কর্মচারীরা কিভাবে আত্মসাৎ করেছে, কিভাবে বিদেশে পাচার করেছে। সরকার কি আদৌ জানত না। তাহলে গোয়েন্দা বা পুলিশের কি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা মনে করি, এই ধরনের জঘন্য রাষ্ট্রদ্রোহী অনৈতিক কাজ কখনও সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সম্ভব নয়।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘আজ দেশের যুব সমাজ ও ছাত্র সমাজ হতাশ, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। কারণ প্রায় ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগের দাবিতে অথবা অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত আছে। ফলে লেখাপড়ার মানও নিম্নগামী। আমাদের মধ্যে মনুষ্যত্বও বিলোপ পেয়েছে। সামাজিক অবক্ষয় ঘটেছে। ধর্মীয় অনুশাসনকেও কেউ মানছে না। সর্বত্র অরাজকতা এবং অনিশ্চয়তা। ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা। দেশে অনৈতিক ও অসমাজিক কার্যকলাপ শহরসহ গ্রামাঞ্চলে বিস্তার লাভ করেছে। উত্তরণ প্রয়োজন।’’

কর্নেল অলি আরও বলেন, ‘‘অনেক অবৈধ মন্ত্রী বলছেন জুয়া ও মাদক জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানের সময় থেকে আরম্ভ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- গত ১১ বছর এইগুলো বন্ধ করার জন্য আপনারা কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য অনেকগুলো আইন বাতিল করা হয়েছে এবং নতুন নতুন আইন পাস করা হয়েছে অথচ জুয়া ও মাদক বন্ধ করার জন্য কোনও আইন পাস করা হয় নাই। শুধু অন্যকে দোষারোপ করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চায়।’’ 

জাতীয় মুক্তিমঞ্চের সমন্বয়কারী আরও বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা সকলে সরকারি দলের নেতা। সুতরাং অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন ক্লাবে কেন অভিযান করা হল। উচিত ছিল পরিকল্পিতভাবে সমগ্র দেশে একইদিন এবং একইসময়ে অভিযান পরিচালনা করা। তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহীরা গা ঢাকা দিতে পারত না। এর অর্থই হল সরকার তাদের নেতা-কর্মীদের পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। মালামাল ও টাকা-পয়সা সরানোর জন্য সময় দিয়েছে।’’

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত খালেদ, শামীম, লোকমানদের দোসররা/পার্টনাররা কেন গ্রেফতার হল না। যে সমস্ত মন্ত্রী, এমপি এবং নেতাদের নাম খালেদ ও শামীম প্রকাশ করেছে তাদের কেন জেলে নেয়া হচ্ছে না। এছাড়াও যে সমস্ত এমপি স্বনামে বেনামে ঠিকাদারি করছে, তাদের কেন খুঁজে বের করা হচ্ছে না। এর দায়িত্ব কার। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দিন। রাজনীতিকে কলুষিত করতে দেয়া যাবে না। দুদকের ভূমিকা আরও স্বচ্ছ হওয়া উচিত ছিল। নেপথ্যের নায়করাও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। গত কয়েকদিনে অনেক এমপি ও নেতা ভারতের ভিসা নিয়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের বাস্তব অবস্থা হচ্ছে, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা এবং খুনিরা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় পার পেয়ে যাচ্ছে ও পুরস্কৃত হচ্ছে। কিভাবে অনেক মন্ত্রী, এমপি এবং তাদের স্ত্রী রাতারাতি ব্যাংক, বিমা, বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় বড় হোটেলের মালিক হল, তা খুঁজে বের করা উচিত। আমরা মনে করি, সন্দেহভাজন এসব মন্ত্রী ও এমপি’র স্ত্রীদের আয়কর রিটার্নের ফাইলগুলো পরীক্ষা করা উচিত।’’

টিএস/এসএমএম