• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৮:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৮:১৬ পিএম

অলির এলডিপি আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙছে সোমবার !

অলির এলডিপি আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙছে সোমবার !
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট (অব.) কর্নেল অলি আহমদ

বিএনপির সাবেক নেতা বর্তমানে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট (অব.)কর্নেল অলি আহমদের দল আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙছে সোমবার। জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরম খা হলে এলডিপির ব্যানারে ‘সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে’ এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্যদিয়ে দলটির ভাঙন চূড়ান্ত হচ্ছে। 

সোমবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলের গত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

রোববার (১৭ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপিতে সেলিম এলডিপির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন।

সংবাদ সম্মেলন ও এলডিপির ‘ভাঙন’ সম্পর্কে জানতে চাইলে সেলিম দৈনিক জাগরণকে বলেন, সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এলডিপি ভাঙছে। আমাদের সঙ্গে এলডিপির প্রতিষ্ঠাকালীন তিন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আব্দুল করিম আব্বাসী, সাবেক এমপি আবদুল্লাহ ও সাবেক এমপি আবদুল গণিসহ আরও নেতারা থাকবেন।

সেলিম আরও জানান, মূলত: জাতীয় মুক্ত মঞ্চ নিয়ে মতানৈক্যের জেরেই  এলডিপির নবগঠিত কমিটিতে স্থান হয়নি। অবমূল্যায়ণের কারণে আমিসহ অন্য নেতারাও এলডিপিতে আর ফিরছেন না।তিনি জানান, রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমরা রাতে বৈঠক করব। সেখানে আমাদের পরবর্তী উদ্যোগ সম্পর্কে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।  

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো প্রেসরিলিজ

 চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করা সেলিম এলডিপি থেকে বের হয়ে বিএনপির রাজনীতিতে ফিরতে চাচ্ছেন বলে জানান। এ বিষয়ে সেলিম জানান, যৌবনের স্বর্ণ সময়টি বিএনপির রাজনীতিতে ছিলাম। এখনও মনেপ্রাণে বিএনপির রাজনীতিই ধারণ করি। খালেদা জিয়া আমার নেত্রী। তারেক রহমান এদেশের রাজনীতির যোগ্য উত্তরসূরী। 

এলডিপি সূত্রে জানা যায়, এলডিপির প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে শুরু করে সর্বশেষ সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন সেলিম। হঠাৎ করে কোন সম্মেলন ছাড়া নতুন কমিটি করেন কর্নেল অলি আহমেদ। সেই কমিটিতে সেলিমকে রাখা হয়নি। এ নিয়ে নানা আলোচনার জন্ম হয়। এলডিপির সভাপতি কর্নেল অলি আহমেদের সঙ্গে সেলিমের মতানৈক্যের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

কর্নেল অলির সমালোচনা করে সেলিম বলেন, এলডিপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আমি। নীতিনির্ধারকদের একজন হিসেবে দীর্ঘ ১৩ বছর দল করছি। অর্থ ও শ্রম দিয়েছি। দলের নামকরণ থেকে শুরু করে গঠনতন্ত্র-ঘোষণাপত্র তৈরি করার সঙ্গে ছিলাম আমি। ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেছি। হঠাৎ করে তিনি (অলি আহমেদ) যে নতুন কমিটি গঠন করেছেন, এটা তার এখতিয়ারবহির্ভূত, অসাংবিধানিক, অগঠনতান্ত্রিক। আমাদের যে গঠনতন্ত্র আছে, তাতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে নিতে হয়। তিনি যেটা করেছেন সেটা অনেকটা প্রতিহিংসামূলকভাবে করেছেন। আমাকেসহ কয়েকজনকে বাদ দেয়ার জন্য কমিটি করেছেন কোনো সম্মেলন ছাড়া। এটা এলডিপির নেতাকর্মীরা কেউ মেনে নেয়নি। অনেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হঠাৎ করে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি এ কাজ করতে পারেন না।
 
জাতীয় মুক্ত মঞ্চের সমালোচনা করে সেলিম বলেন, নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক সংকট যাচ্ছিল। তখন কর্নেল (অব.) অলি আহমদ জাতীয় মুক্তি মঞ্চ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ২০ দলীয় জোটের মধ্যে থেকে জাতীয় মুক্তি মঞ্চ আমাদের কাছে পরিষ্কার ছিল না। অলি আহমদ একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে হঠাৎ জামায়াতের পক্ষে স্ট্যান্ড নেয়াটা আমরা ভালো চোখে দেখিনি। জাতীয় মুক্তি মঞ্চের এজেন্ডা হলো বিরাজনীতিকরণ। বিএনপি নেতাদের চরিত্রহনন। বিএনপি নেতাদের ব্যর্থ প্রমাণিত করা। বিএনপি নেতাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, সন্দেহ সৃষ্টি করে দুর্বল করাই জাতীয় মুক্তি মঞ্চের লক্ষ্য। যদিও জাতীয় মুক্তি মঞ্চ গঠনের সময় আমরাও ছিলাম। কিন্তু পরে যখন বিভিন্ন রকম ধোঁয়াশা তৈরি হলো, তখন দেখতে পেলাম এর মধ্যে কোনো সঠিক রাজনীতি নেই, জাতীয়তাবাদের রাজনীতিকে ধ্বংস করা ছাড়া। আসলে মুক্তি মঞ্চ একটা লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যহীন মঞ্চ। জাতীয় মুক্তি মঞ্চের পক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করলেও বিএনপির নেতৃত্বকে খাটো করা ছাড়া মুক্তি মঞ্চের আর কোনো রাজনীতি নেই। দলীয় প্রধানের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে আমার মনোমানিল্য সৃষ্টি হয়।
 
টিএস/বিএস