• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৮:২৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৮:২৩ এএম

বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমাঝোতা চান রব

বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমাঝোতা চান রব
জেএসডি লোগো ও আ স ম আব্দুর রব

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) নেতৃত্ব নিয়ে ভাঙনের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। বিগত একাদশ জাতীয় সংদ নির্বাচনে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন ও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা অনৈতিক লেন-দেনের অভিযোগে এ ভাঙন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

জেএসডির নেতৃত্ব নিয়ে ভাঙনের বিষয়ে সর্বপ্রথম দৈনিক জাগরণে গত ১২ নভেম্বর সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেদিন জেএসডির ভাঙনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেন, আমাদের দাবি মেনে না নিলে দল ভাঙতেও পারে। ভাঙাটাই স্বাভাবিক। 

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন বা সম্পর্ক উন্নয়নকে আমরা মেনে নিতে পারি না।’

দল ভাঙার মূল অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রতন বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দল চলবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। সেখানে কোনো ব্যক্তিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র ও স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত থাকবে না। দল চলবে নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে।’

এদিকে, ভাঙন ঠেকাতে আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির পক্ষ থেকে দলের বিদ্রোহীদের কাছে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি আপাতত দলের এসব বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

এ ব্যাপারে  জেএসডির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এবং ঢাকা-১৮ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী হয়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়া শহীদ উদ্দিন মাহমুদ (স্বপন) দৈনিক জাগরণকে বলেন, সব্বোর্চ ছাড় দিয়ে হলেও ওদের সঙ্গে সমঝোতায় প্রস্তুত আমরা। কারণ সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাতেই আমরা পারর সিরাজুল আলম খানের ১৪ দফা বাস্তবায়ন করতে। তাছাড়া সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে  দলের মধ্যে কোন বিভক্তি কারও জন্য ভালো হবে না। আমরা ওনাদের বিভিন্নভাবে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছি। আর আমরা দলের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলের আগে কোন কঠোর সিদ্ধান্তও নিতে চাই না। তবে সব্বোর্চ ছাড় কি কি সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।  

জানা গেছে, আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডির বিদ্রোহীদের ব্যাপারে আপাতত কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা  না নেয়ার পেছনে অন্য কারণ রয়েছে। আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডির পক্ষ থেকে মাঠ জরিপ করে তারা ভিন্ন পরিস্থিতি লক্ষ্য করেছে। এতে দেখা গেছে, সারা দেশে দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনের নেতৃত্বে সংগঠিত হচ্ছে নেতাকর্মীরা। তারা দলের শীর্ষ নেতার (আ স ম রব) কর্মকাণ্ডকে আগের মত সমর্থনও দিচ্ছে না। এজন্য রতনের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডি কোন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। সে কারণে সমঝোতার প্রস্তাব নিয়েই তারা ব্যস্ত। 
জানা গেছে, আ স ম আব্দুর রবের নেতৃত্বাধীন জেএসডির বিদ্রোহীরা পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতনের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়ে নতুন জাসদ করার পক্ষেই অগ্রসর হচ্ছেন। সভা সমাবেশে করছেন। নিজেদের ঘোষিত কনভেনশন সফল করতে আলাপ অলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। ১১ জানুয়ারি জাতীয় কনভেনশন ডেকেছেন বিদ্রোহীরা।  

এদিকে, জেএসডির কাউন্সিলকে অবৈধ ঘোষণা করে  ১১ জানুয়ারী ২০২০ কনভেনশন ডাকা বিদ্রোহী ৮ নেতার ঘোষণার প্রতি ২০ কেন্দ্রীয় নেতার সমর্থনের পর আরও ৭ নেতা সমর্থন জানিয়েছেন। সমর্থন দানকারী  নেতারা হলেন, জেএসডি  কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি  মুক্তিযোদ্ধা খোশ  লেহাজ উদ্দিন খোকা, মায়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (বাকসু) সাবেক  সাধারণ সম্পাদক  জেএসডি  কেন্দ্রীয়  সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্বা সায়দুর রহমান স্বপন , ময়মনসিংহ  জেলা কমিটির  যুগ্ম আহ্বায়ক  সদস্য কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা  ফেরদৌস আলম খোকা, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক বেলায়েত হোসেন, রিয়াজুল মোর্শেদ টিটু, কেন্দ্রীয়  সহ- সম্পাদক মোহাম্মদ  সহিদ উল্ল্যা, কেন্দ্রীয় সদস্য  নুরুল ইসলাম খোকন।

টিএস/বিএস