• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০১৯, ১০:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৮, ২০১৯, ১০:০৪ পিএম

প্রাধ্যান্য পাবে ঢাকার স্থানীয়রা 

ঢাকায় চমকপূর্ণ কমিটি দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ 

ঢাকায় চমকপূর্ণ কমিটি দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ 
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ- ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নজিবউল্লাহ হিরু, সাঈদ খোকন, আবু আহমেদ মান্নাফি, গাজী আবু সাঈদ

গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে ঢাকায় চমকপূর্ণ কমিটি দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ)আওয়ামী লীগের সম্মেলন। দিন যতো ঘনিয়ে আসছে নেতা-কর্মীরা ততোই চাঙ্গা হয়ে উঠছেন। 

দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ জন্য সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে প্রাক প্রস্তুতি হিসেবেই এই সম্মেলনকে দেখছেন আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা। দলীয় সূত্রগুলো বলছে,ঢাকা মহানগরের নেতৃত্বের জন্য ঢাকার আদি বাসিন্দাদের খোঁজা হচ্ছে। এছাড়া এবারও নবীন-প্রবীণের সমন্বয় থাকছে। তবে তাতে বয়সের তারতম্য কমিয়ে আনার চিন্তা করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রগুলো বলছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আও য়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর ৩ বছর পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে উত্তর ও দক্ষিণে দুই ভাগে বিভক্ত করে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মহানগর দুই অংশের ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। এই কমিটিতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি করা হয় একেএম রহমতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় মোহম্মদপুর এলাকার সাদেক খানকে। আর দক্ষিণে সভাপতি করা হয় পুরান ঢাকার হাজি আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় শাহে আলম মুরাদকে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশনে ঢাকা দুই মহানগরের নতুন নেতাদের নাম ঘোষণা করা হবে।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলাতে যে রকম সম্মেলনের পর বিকেলে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে ঠিক তেমনি মহানগরীর কমিটির ক্ষেত্রেও তাই হবে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, যেহেতু আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে সেজন্য কাউন্সিল পর্যন্ত মহানগরের কমিটি ঘোষণা বিলম্বিত হতে পারে। কমিটি এখনই ঘোষণা করা হবে না।  

দলীয় সূত্র বলছে, আগামী জানুয়ারিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিকল্পনা মাফিক কমিটি করবে আওয়ামী লীগ। সিটি করপোরেশনের জন্য প্রার্থী রেখে মহানগরে প্রবীণ-নবীনের মেলবন্ধনে স্বচ্ছ ভাবমুর্তির কাউকে দায়িত্বে আনবেন শেখ হাসিনা। মহানগরের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য তিনি ইতিমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে ‘যোগ্য প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছেন। তিনিই শেষ সিদ্ধান্ত দেবেন। সে ক্ষেত্রে রাজনীতিতে সভাপতি পদে দীর্ঘদিনের রাজনীতির অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজনকে বেছে নেয়া হতে পারে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে ঢাকা মহানগরের কোনো থানার শীর্ষ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে উঠিয়ে এনে মহানগরের দায়িত্ব দিতে পারেন, যে বয়সে তরুণ এবং ছাত্রলীগের ব্যাবকগ্রাউন্ড রয়েছে। এর আগের কমিটিতেও এইভাবে নেতৃত্ব এসেছে। 
 
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগরের নেতৃত্বের জন্য ঢাকার আদি বাসিন্দাদের খোঁজা হচ্ছে। অর্থাৎ যারা ঢাকায় অনেক আগে থেকেই স্থানীয় তারা নেতৃত্ব চয়নে প্রাধান্য পাবেন এমন আলোচনা রয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতাও ঢাকার আদি বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র আলহ্বাজ সাঈদ খোকনও ঢাকার আদি বাসিন্দা। তবে তিনি নেতৃত্বে আসলে সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ঢাকাইয়া হিসেবে বিকল্প হিসেবে খোঁজা হচ্ছে।
        
আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, মহানগরের নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ফিল্টারিংয়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত। নেতা কতোটা কর্মী বান্ধব, সাংগঠনিক, স্বচ্ছ ইমেজের, ত্যাগী এসব বিবেচনায় সুনিবিড়ভাবে বিশ্লেষন করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের কয়েকটি অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনে চলমান শুদ্ধি অভিযানের বড় প্রভাব দেখা গেছে। কমিটিতে স্থান পেয়েছেন পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারকরা। সেই সূত্রে এবার মহানগরেও ত্যাগী, পরীক্ষিত, ক্লিন ইমেজের নেতারা পদ পাবেন। মহানগরের পদ পাওয়ার জন্য প্রভাবশালী অথচ বিতর্কিত এমন নেতারা ছিটকে পড়েছেন নেতৃত্বের রেস থেকে। দলীয় সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের মধ্যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন এতে দীর্ঘদিন কোণঠাসা ও বঞ্চনার শিকার নেতারা এবার আশার আলো দেখছেন।

জানা গেছে, মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ) আওয়ামী লীগে পদপ্রত্যাশী নেতারা এখন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে গিয়ে লবিং-তদবিরে ব্যস্ত। অনেকেই নিজেদের জনপ্রিয়তা জানান দিচ্ছেন দলের নীতি নির্ধারকদের কাছে। তারা অবশ্য যোগাযোগ রাখছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীর সঙ্গেও। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু ৩২ এভিনিউ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভিড়ছেন। সম্মেলনেই নির্ধারিত হবে পদপ্রতাশীদের ভাগ্য। আলোচনায় নেই এমন নেতারা গভীর রাত পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন।

দলীয় সূত্র বলছে, সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যে ধরনের দুরদর্শিতা দেখিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড এর ধারাবাহিকতা থাকছে মহানগর দক্ষিণেও। অর্থাৎ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এমন ব্যক্তিত্বই মহানগরের দায়িত্ব পাচ্ছে। মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ‘ঢাকাইয়া’ ট্যাগ থাকলে এগিয়ে থাকার যে রেওয়াজ প্রচলিত ছিলো, সেটিও ভাঙতে যাচ্ছে এবার। এ ক্ষেত্রে ঢাকাইয়া বা ঢাকার বাইরে নয়, যোগ্য নেতৃত্বকেই বেছে নিতে চাইছে আওয়ামী লীগ। 
 
জানা গেছে, এর আগে দীর্ঘদিন ঢাকা মহানগরের শীর্ষ দুই পদের দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত মোহাম্মদ হানিফ (সভাপতি) এবং মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম (সাধারণ সম্পাদক)। তারা নেতৃত্বে ছিলেন প্রায় ২৯ বছর। এই সময়ে ওই পদে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করা যায়নি। যে কারণে সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন অনেক যোগ্য নেতৃত্বও। দীর্ঘ মেয়াদে পদ আটকে থাকার কারণে মহানগরে নতুন নেতার বিকাশ ঘটেনি। মহানগরের শীর্ষ নেতৃত্বের মতো বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড শাখায়ও দীর্ঘদিন চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। নেতাদের পদ আকড়ে থাকার মানসিকতায় সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ আর বিভেদের। এবার মহানগর উত্তর-দক্ষিণের চমক জাগানিয়া কমিটির দিয়ে মহানগরকে ঢেলে সাজাতে চাইছে আওয়ামী লীগ।

নেতৃত্ব বাচাইয়ের প্রক্রিয়া জানাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, পরিচ্ছন্ন নেতাদের যে জয়জয়কার শুরু হয়েছে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। নেতৃত্ব অভিজ্ঞতার যেমন প্রয়োজন রয়েছে তেমনি তারুণ্য দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। যারা কোনো ধরনের বিতর্কিত নয়, স্বচ্ছ ভাবমুর্তি রয়েছে, দলের জন্য ত্যাগ শিকার করেছেন তারাই মহানগর আওয়ামী লীগে নেতৃত্বে আসবে।
 

মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ - সাদেক খান, এম এ কাদের খান,আসলামুল হক, শেখ বজলুর রহমান, এস এম মান্নান কচি,  এম সাইফুল্লাহ সাইফুল

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে ও পদ ধরে রাখতে দৌঁড়ঝাপ চালাচ্ছেন নেতারা। আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তিনি ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বড় অবদান রাখা এই নেতা ‘৬৯ -এর গণঅভ্যুত্থান কালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন জিএস  হিসাবে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে লাইম লাইটে উঠে আসেন। আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট নজিবউল্লাহ হিরু। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন এবং যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আলোচনায় রয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন। এ কারণে দক্ষিণে দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে তার বেশ জনপ্রিয়তা আছে।

আলোচনায় আছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির, আবু আহমেদ মান্নাফি, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলিপ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক হেদায়েত উল্লাহ স্বপন, মহানগর দক্ষিণের কার্যনির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদ। এক-এগারোতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে যখন নিম্ন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন আদালতের সামনে তার মুক্তি চেয়ে মিছিল বের করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। এতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন সাঈদ। তবে মহানগর দক্ষিণের বর্তমান সভাপতি আবুল হাসনাত আবারও একই পদে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ পদোন্নতি না পেলেও মহানগরের একই পদে থাকার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বেশ আলোচনায় আছেন মহানগর দক্ষিণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ওমর বিন আব্দাল আজিজ তামিম। তার বাবা অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম এম এম আজিজ। তামিম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও। লন্ডন থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী তামিমের দাদা মরহুম পিয়ারো সরদার ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে প্রথম শহীদ মিনার তৈরি করেছিলেন। আলোচনায় আছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির নেতা অ্যাড. কাজী মোর্শেদ হোসেন কামালও।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের প্রত্যাশার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওমর বিন আব্দাল আজিজ তামিম বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আমরা দক্ষ, সহসী নেতৃত্বে আশা করছি। আমরা ঢাকায় এমন নেতৃত্বেই দেখতে চাই তাদের যোগ্যতা নিয়ে কখনও কোন প্রশ্ন উঠবে না।

নেতৃত্বের প্রত্যাশার বিষয়ে জানাতে গিয়ে অ্যাডভোকেট নজিবউল্লাহ হিরু বলেন, সময়ে দাবি অনুযায়ী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভালো মানুষদের সামনে নিয়ে আসছেন, তাদের ওপর দায়িত্ব অর্পন করছেন। সহযোগী সংগঠনগুলোতে বিষয়টি দেশবাসী দেখেছে। রাজনীতিতে এর গুনগত ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে। এতে স্বচ্ছ ভাবমুর্তির নেতাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। ভবিষ্যতেও ক্লিন ইমেজের নেতারা নেতৃত্ব আসবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘এবার নেতৃত্ব বাছাইয়ের সম্মেলনগুলো কিন্তু গতানুগতিক ধারায় হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে একটা চমক জাগানিয়া পরিবর্তন এবং তারুণ্য নির্ভর পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিরা নেতৃত্বে আসছেন। এজন্য আমি আশাবাদী। নেত্রী অবশ্যই যোগ্য ও ত্যাগী নেতৃত্ব আনবেন এবার মহানগরের সম্মেলনে।’

গাজী আবু সাঈদ বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা যখভন যেখানে দায়িত্ব দিয়েছেন, বুক চিতিয়ে দলের জন্য কাজ করেছি। এক-এগারোতে পুরান ঢাকায় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি। নেত্রী ছাড়া আমি কিছু বুঝি না। এখন সুত্রাপুর থানার দায়ি‌ত্ব দি‌য়ে‌ছেন নেত্রী। সেই দায়িত্ব নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী পালন করছি। ‌তি‌নি যেখানেই দায়িত্ব দে‌বেন জীবন বাজি রেখে সেই দায়িত্ব পালন করবো।’

সূত্র জানায়, মহানগর উত্তরে আলোচনায় যারা- সভাপতি হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের নাম আলোচনায় রয়েছে। বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি শেখ বজলুর রহমানও সভাপতি প্রার্থী বলে তার নিজস্ব লোকজন প্রচারণা চালাচ্ছেন। শেখ বজলুর রহমান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

এছাড়াও শীর্ষ পদে আলোচনায় আছেন মহানগরের দুই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, হাবিব হাসান। দুইজনই ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে পরিচিত। আসলামুল হক সভাপতি হতে পারেন বলেও আলোচনা রয়েছে। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক আজিজুল হক রানা। সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান কমিটির দপ্তর সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ সাইফুল। এম সাইফুল্লাহ সাইফুল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ও  কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ১/১১ প্রেক্ষাপটের সময়ে তিনি দলের জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তিনি ঢাকার আদি বাসিন্দা।  শেখ বজলুর রহমান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন ও দুইবার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সিনিয়র নেতা হিসেবে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব তিনি। এস এম মান্নান কচি অবিভক্ত ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান ১৯৮৮ সালে হরিরামপুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এরপর বৃহত্তর উত্তরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন দীর্ঘদিন। ঢাকা মহানগর ভাগ হলে তিনি যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

নেতৃত্বের প্রত্যাশা জানতে চাইলে এম সাইফুল্লাহ সাইফুল দৈনিক জাগরণকে বলেন, নেত্রী যে ধরনের স্বচ্ছ নেতৃত্ব আনতে চান আমি আশা করি ঢাকা মহানগরের এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছ নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। যারা জননেত্রী শেখ হাসিনা ভ্যানগার্ডের কাজ করবে, মহানগর আওয়ামী লীগ আরও সংগঠিত হবে এবং ভবিষ্যতের নেতৃত্বে আরও ভাল হবে।    

নেতৃত্বের প্রত্যাশার বিষয়ে কাদের খান বলেন, আগামীতে ত্যাগী, সৎ ও পোড়খাওয়া নেতাদের নেতৃত্বে আসা উচিত। তবে নেত্রীর  (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

এএইচএস/বিএস