খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএসএমএমইউ’র পরিচালকের বিবৃতিকে অসত্য, মনগড়া ও ফরমায়েসি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়া পল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, বিএসএমএমইউ’ পরিচালকের এসব বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া ও ফরমায়েসি। সেখানে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই বলেই তো কাদের সাহেবরা বিদেশে চিকিৎসা নেন। শেখ হাসিনা কারাবন্দি থাকা অবস্থায় স্কয়ার কিংবা বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। গণভবনে বসে শেখ হাসিনার তৈরি করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি বিএসএমএমইউ হাসপাতালের নামে প্রচার করা হয়েছে। সেখানে ইনিয়ে বিনিয়ে খালেদা জিয়াকে সুস্থ বলে প্রচারের অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এর প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি লাইন শুধু মিথ্যাই নয়, একজন চিকিৎসকের পেশাদারী এথিকসের পরিপন্থী। পরিচালক নিজে একজন ডাক্তার হয়ে এরকম কুৎসিত মিথ্যাচার করতে পারেন, যেটি এই মহান পেশাকে কলঙ্কিত করে। দেশের চারবারের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে পরিচালকের বিবৃতি গণভবনে তৈরি, আমি এই জীবন্ত কল্পকাহিনির বিবৃতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।
তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ এর পরিচালক খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক বিবৃতি দিয়েছেন। ওই বিবৃতি মূলত শেখ হাসিনারই ফরমান।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কোনও কোনও ক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নতি হলেও কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্থিতিশীল রয়েছে, তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে, মুখের ঘা সেরে গেছে, দাঁতের ব্যথা ভাল হয়েছে, শারীরিক দুর্বলতার উন্নতি হয়েছে, আর্থারাইটিসের ব্যথা কমানোর জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে তাকে পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু বেগম জিয়া নাকি আর্থারাইটিসের চিকিৎসা নিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেননি ফলে আর্থারাইটিসের আশানুরুপ উন্নতি হচ্ছে না।’’
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে বন্দি রেখে হত্যার আয়োজন সম্পন্ন করেছেন নিশিরাতের অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী। তাকে দেখে এসে তার স্বজনরা কান্নাভেজা কণ্ঠে জানিয়েছেন, দিন দিন বেগম জিয়ার অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। সারাক্ষণ বমি করছেন। তার গায়ে প্রচণ্ড জ্বর। সারাক্ষণ তীব্র ব্যাথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বাম হাত সম্পূর্ণ বেঁকে গেছে। পিজি হাসপাতালে নামকাওয়াস্তে যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, তাতে কোনও কাজ হচ্ছে না। তার যে ভয়াবহ অবস্থা, দ্রুত উন্নত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। তার শরীর খুবই খারাপ। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে বেগম খালেদা জিয়া কথা বলতে পারছেন না। সেখানে ভর্তির পর এখনও তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না, কিছু খেতে পারছেন না, হাত পা নাড়াতে পারছেন না।
তিনি বলেন, বেগম জিয়া স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। সরকারপ্রধানের প্রতিহিংসার আগুনে খালেদা জিয়া কারাবন্দি, আর এই কারাবন্দি অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসার অভাবে তার শারীরিক অসুস্থতা গভীর সংকটাপন্ন। অথচ বিএসএমএমইউ হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডও তার অসুস্থতা যে দেশে নিরাময়যোগ্য নয় সেটি উল্লেখ করলেও আদালত তাকে জামিন দেয়নি। ন্যায়-বিচারহীনতার এই বিপজ্জনক ছবি পৃথিবীতে বিরল।
টিএস/এসএমএম