• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০, ০৫:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০, ০৫:৪৬ পিএম

নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ 

নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ 

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১টা ৫০ মিনিটে প্রথমে দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আশপাশের এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হয়। 

এর আগে সকাল থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘিরে রাখা হয় বিএনপির কার্যালয়। 

পুলিশের পল্টন জোনের উপ-কমিশনার এনামুল হক মিঠু বলেন, আমাদের কাছে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেয়ার অনুমতি নেই। সেজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নয়াপল্টনে অবস্থান নিয়েছি। 

এদিকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের অবস্থান বাড়লে পুলিশ হোটেল ভিক্টোরিয়া ও আশপাশে অবস্থান নেয়। এসময় নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কয়েক হাজার নেতাকর্মী নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছিল। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।      

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৬ কোটি মানুষের নয়নের মনি খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বিক্ষোভ মিছিল। এতে পুলিশ বাধা দিয়েছে, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে, কার্যালয়ের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দিয়েছে। 

তিনি বলেন, সরকার মনে করেছে এভাবে দমন-নিপীড়ন ও বাধা দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করবে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এভাবে কখনও ক্ষমতায় থাকা যায় না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করেছে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এটা ফেব্রুয়ারি মাস, ১৯৫২ সালে এদেশের মানুষ মায়ের ভাষার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দাবি আদায় করেছে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার বেআইনি, দখলদারী সরকার, জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়া তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। একদলীয় শাসন কায়েম করতে সমস্ত দমন-নিপীড়ন, নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। আজ সরকারের উপর জনগণের কোনো আস্থা নেই, আমাদের ২৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এদেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তাকেও ২ বছর ৭ দিন যাবত কারাগারে আটকে রেখেছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, আমরা তার মুক্তির মাধ্যমে সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছি।  কিন্তু সরকার কোনো সহযোগিতা করেনি। আমরা আবারও বলছি বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তাকে মুক্তি দিন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু নেতাকর্মীদের সাহসিকতার ফলে আজকের এ সমাবেশ সফল হয়েছে। 

তিনি বলেন, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনোবাজি করে দেশকে শেষ করে দিয়েছে। আজ দেশে সব কিছুতে পচন ধরেছে। এ থেকে এ দেশকে মুক্ত করতে হবে। জনগণকে মুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এসব অর্জন করতে হলে সবার আগে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে। তার নেতৃত্বে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। 

মির্জা আব্বাস বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শত প্রতিকূলতার মাঝেও আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। আমাদেরকে খালেদা জিয়ার প্রতি ভালবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের জেলে নিক, নির্যাতন করুক, গুম খুন করুক কোনো কিছুতেই প্রতিবাদ থামবে না। আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে। 

তিনি বলেন, আজ খালেদা জিয়া নয়, দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, আইনের শাসন ও জনগণ বন্দি। তার মুক্তির মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা মুক্তি পাবে। আমরা ইনশাআল্লাহ আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। 

আবদুল মঈন খান বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে খালেদা জিয়াকে জামিন দিচ্ছে না। কারণ সরকার জানে খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে রাজপথে নামলে জনগণের স্রোতে সরকার ভেসে যাবে। তাই খালেদা জিয়ার জামিন বাধাগ্রস্ত করছে। তাকে আটকে রাখছে। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠ করব। 

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা মায়ের মুক্তির জন্য সমবেত হয়েছে। মায়ের মুক্তির সংগ্রাম কেউ থামাতে পারে না। কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না।  মায়ের মুক্তি জনগণ, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও স্বাধীনতার মুক্তি৷ মায়ের মুক্তির আন্দোলনে আমাদের যোগ দিয়ে মাকে মুক্ত করতে হবে। 

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আন্দোলন করতে হবে, সবাইকে একত্রিত করতে হবে। প্রয়োজনে জীবন দিতে হবে। তাহলেই পারব জেলের তালা ভেঙে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে।                    

টিএস/ এফসি