ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে- এই ঘোষণায় দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। একদিন আগেও বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজের বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তবে দেশে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ আছে বলে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভারত সরকারের পেঁয়াজ রফতানি না করার সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়েছে দেশের এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। সাধারণ ক্রেতাদের পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। 

এদিকে, নিত্যপণ্য পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ দাবি জানান।

আবারো পেঁয়াজের দাম বাড়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, ‘পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে বারবার ‘ব্যর্থ’ বাণিজ্যমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদে থাকেন কী করে?’

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে পুরনো সিন্ডিকেটের কবলে। অন্যদিকে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে পরিপূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বাণিজ্যমন্ত্রী। অতীতেও তিনি পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন।’

তারা বলেন, ‘ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয়াতে বাংলাদেশের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। কারণ ভারত থেকেই বেশিরভাগ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ফলে পেঁয়াজের পুরোনো সিন্ডিকেট আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকার টিসিবির মাধ্যমে ট্রাক সেলের ব্যবস্থা করেও বাজার সামাল দিতে পারছে না। গত বছর এই সময়ে পেঁয়াজের বাজার উত্তপ্ত হয়েছিল। এবারো অসাধু ব্যবসায়ীরা যেকোনো অজুহাতে পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে ফায়দা লুটতে চান।’

ন্যাপ নেতারা আরো বলেন, ‘পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। জনগণের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। জনগণের মনে প্রশ্ন- পেঁয়াজের বাজার কারা নিয়ন্ত্রণ করছে? তারা কী এতই শক্তিশালী যে, সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না? অসাধু ব্যবসায়ীদের কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়।’

নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন করেন, ‘পেঁয়াজের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। নাকি পেঁয়াজের অসৎ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের প্রভাবশালীরা জড়িত? সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায়- হয়তো সরকারের একটি অংশ এই পেঁয়াজ সংকটের সঙ্গে জড়িত হয়ে লুটপাটের অংশ হয়েছে, অথবা এটি সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভয়ঙ্কর একটা অদক্ষতার স্বাক্ষর।’

তারা বলেন, ‘পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের বারবার চরম ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’

জাগরণ/এমআর