• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০১৯, ১২:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৭, ২০১৯, ০৭:০৭ পিএম

পানির জন্য ফুঁসে উঠেছে রাজধানীবাসী

পানির জন্য ফুঁসে উঠেছে রাজধানীবাসী

ঢাকা ওয়াসার পানির জন্য মানুষ ফুঁসে উঠেছে। নগরীর ১৪ স্থানে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পাইপলাইনের পানি ঠিক সময়ে সরবরাহ না থাকায় পানির জন্য হাহাকার করছে। যে কোনো মুহূর্তে নগরবাসী হাঁড়ি-পাতিল, বালতি হাতে নিয়ে পানির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসতে পারে। এ তথ্য জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার খামখেয়ালীর জন্য রমজান মাসে পানির জন্য দুর্ভোগ চরমে উঠেছে নগরবাসীর। 

জানা গেছে, নগরীর ১৫ স্থানে পানি সংকট মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এসব স্থানগুলো হচ্ছে- লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, শেখেরটেক, আদাবর, সুনিবিড়, উত্তরবাড্ডা, হাজীপাড়া, খিলগাঁও, শনির আখড়া, জুরাইন, যাত্রাবাড়ী, লালবাগ ও আজিমপুর এলাকার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পানি সংকটে এসব এলাকার মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে। গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে পানির চাপ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এ সব এলাকার মানুষজন রাতে ঠিকভাবে খাবারের পানিও পাচ্ছে না। নগরীর অনেক বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়াদের অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, বোতলজাত পানি কিনে ব্যবহার করতে।

অনুসন্ধানে, লালমাটিয়ার জোনায়েদ হাবির নামে একব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসার ধোঁয়া-মোছার কাজের পানিও মিলছে না। তিনদিন আগে এক গাড়ি পানির জন্য ওয়াসার লালমাটিয়া অঞ্চলে সিরিয়াল দেয়া হয়েছিল। কিন্ত সিরিয়ালে গাড়ি মিলছে না। এক গাড়ি পানির জন্য অতিরিক্ত টাকা বকশিষ দিয়েও পানি পাওয়া দায়। বাধ্য হয়ে অনেকে দোকান থেকে বোতলজাত পানি সংগ্রহ করে সেই পানি খেয়ে রোজা রাখতে হচ্ছে।

এছাড়াও রান্না, গোসল, হাঁড়ি-পাতিল ধোঁয়া মুছার কাজ নিয়ে মহিলারা মারাত্মক বিপাকে রয়েছে। আদাবর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হাজী আবদুস সোবাহান দৈনিক জাগরণকে জানান, বাসায় পানি নেই, বউ বাচ্চার যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে পানির জন্য ঢাকা ওয়াসার লালমাটিয়া পাম্পে গিয়ে ছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আড়াইশ সিরিয়াল দেয়া। আগের আড়াইশ মানুষের পরে আমাকে পানি দেবে। আর এখানে পানির গাড়ী মাত্র ছোট বড় মিলিয়ে মাত্র ৬টা। সারারাত দিন দিলেও আমার সিরিয়াল আসবে না। এ কারণে পানির আশা ছেড়ে দিয়ে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। 

বুধবার (১৫ মে) ১০টার সময় লালমাটিয়া পাম্পে সরেজমিন ঘুরে দেখা খেছে, পানির জন্য দুইদিন আগে সিরিয়াল দিয়েও পানি পাননি জাকারিয়া নামে একজন সাংবাদিক। তিনি চেচামেচি করচ্ছেন। দুই দিন আগে সিরিয়াল দিয়েছি।এখনো পানি দিচ্ছেন না। কারণ কি উত্তরে পাম্পের কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্যার এখন পানির স্তর নিচে চলে গেছে। আর পাম্পগুলো অনেক পুরোনো উত্তলন ক্ষমতা কম। এ কারণে চলমান সমস্যা।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ১১টি অঞ্চলে ৯০৮টি পানির পাম্প স্থাপন আছে। এর মধ্যে হয়তো দুই-চারটি পাম্প বিকল হতে পারে। কিন্তু সে কারণে পানির সংকট হওয়ার কথা নয়। তাই ওয়াসার এ সমস্যা দাবি ক্ষণিকের। সংকট নিরসনে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

ওয়াসার পরিচালক (কারিগরী) সহিদ উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে। নগরীতে প্রচুর পানির পাম্প বসানো হয়েছে। দ্রুত সংকট কেটে যাবে। 

এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, লালমাটিয়া জোনে পানি সরবরাহের চাপ বেশি। আর মাঝে মধ্যে কিছু পাম্প বিকল হওয়ার কারণে সমস্যা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেও কিছু এলাকায় পানির সমস্যা হতে পারে। তবে এসব সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে বলে জানান তিনি।

টিআই/এসজেড/টিএফ