• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০১৯, ০৯:১০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৮, ২০১৯, ০৯:১০ এএম

ঝিলপাড়ে নিঃস্ব মানুষের আহাজারি

ঝিলপাড়ে নিঃস্ব মানুষের আহাজারি


আগুনের ভয়াবহ তীব্রতায় মিরপুর রূপনগরের ঝিলপাড় বস্তি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। নিঃস্ব মানুষদের আহাজারিতে ঝিলপাড় বস্তির বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে কাঁচা টিনের ঘরগুলো এবং ঘরের সব সরঞ্জাম। সর্বস্ব হারিয়ে বস্তির বাসিন্দারা অপেক্ষায় আছেন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। 

গত শুক্রবারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিজেদের আশ্রয়স্থল হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব, বাকরুদ্ধ। নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন আগত বিত্তবান মানুষের দিকে। তাদের কাছে নিঃস্ব মানুষের প্রত্যাশা অনেক। কিন্তু ক’জন আছেন সমাজে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন। তাদের কথা, সামনের দিনগুলোতে তারা কিভাবে কী করবেন, সে দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই তাদের।

অটোরিকশাচালক ইদ্রিস বলেন, উত্তর দিকে যখন আগুন লাগে মানুষ সব দৌড়াদৌড়ি কইরা বাইর হইছি। এর মইধ্যে কোনমতে এক কাপড়ে বউ-ছেলে নিয়া বাইর হইছি। কিছু লগে লইয়া বাইর অইতে পারি নাই।

আগুনে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া আবদুল মালেক বলেন, এ ঘটনার পর থেকে আইজও দুপুর হইতে লাগলো এহনো কিছু খাইতে পারি নাই। কিছু কিন্না খাওনের মতো কাছে একটা টাকাও নাই। এহন আমরা কই যামু, কই থাকমু, কেমনে খামু? এসব বলতেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি।
 

কান্না বিজড়িত কণ্ঠে মালেক বলেন, দীর্ঘদিনের আবাস এই বস্তির সংসারে তিলে তিলে খাট, টিভি-ফ্রিজ, আলমারিসহ বিভিন্ন আসবাব জুড়িয়েছিলাম। কোনও কিছুর কমতি ছিল না। যার সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে চিৎকার করতে থাকেন মালেক। 

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটের দিকে মিরপুরের চলন্তিকা মোড় সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ধরে ২৪টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত সাড়ে ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। রাত দেড়টার দিকে আগুন পুরোপুরি নির্বাপন করা সম্ভব হয়।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনে প্রায় ৫০০-৬০০ ঘর পুড়ে গেছে, আর এতে প্রায় তিন হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনের উৎস নিশ্চিত করতে এরইমধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের স্থানীয় ৫টি স্কুলে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিদিন তাদের খাবার সরবরাহ করছেন ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। আহতদের চিকিৎসা করাচ্ছেনও তিনি। 

এইচএম/আরআই

আরও পড়ুন