• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০, ১১:৫৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০, ১১:৫৯ এএম

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি

এক বছরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি নিহতের পরিবার 

এক বছরেও ক্ষতিপূরণ পায়নি নিহতের পরিবার 

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সেখানে চলছে এলাকাবাসীর দোয়া মাহফিল। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সেখানে কোরআনখানি ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে যোগ দিয়েছেন অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত ও দগ্ধ পরিবারের সদস্যরা।
 
মিলাদ শেষে ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, ঘটনার পর পরই নিহতদের মরদেহ নেয়ার সময় দাফনের জন্য বিশ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল। এরপর নিহতদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা এবং উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানে ব্যবস্থা বা চাকুরী দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও তারা কোন আর্থিক সহায়তা পাননি।
 
এর আগে চড়িহাট্টার ব্যবসায়ী হতাহতদের স্বজনরা এলাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন সরানো এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবিতে মৌণ মিছিল করেছে। পাশাপাশি শোকার্ত স্বজনরা কালো ব্যাজ ধারন করেছে। এলাকায় শোক দিবসে কালো পতাকা উড়ানো হয় চুড়িহাট্টা ওয়াহেদ ম্যানসনের আশপাশের ভবনগুলোতে।  

এদিকে নিহতের স্বজনরা জানান, লাশ হস্তান্তরের সময় যে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল এর বাইরে তারা আর কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি। এখন ক্ষতিপূরণসহ চুড়িহাট্টায় অগ্নিকান্ডের পেছনে দায়ি ব্যক্তিদেরও শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৭১ জন মারা যান। 

তাদের মধ্যে একজন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মুজিবুর হাওলাদার। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা মুজিবুর হাওলাদারের মৃত্যুর পর পরিবারে অভাব অনটন নেমে আসে বলে জানান তার ভাতিজা মুহাম্মদ আসলাম হোসেন।

তিনি বলেন, আমার চাচার বড় ছেলে সুমন পটুয়াখালীতে কলেজে পড়ছে। দ্বিতীয় ছেলে মামুন চকবাজারে একটি প্লাস্টিক কারখানায় চাকরি করছে। ছোট ছেলে এখনো মায়ের কোলে। এক মেয়ে বিয়ে দিলেও আরেক মেয়ে ঘরে আছে আছে। তাদের পরিবারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। মেঝো ছেলের আয়, আর এলাকায় কাজ করে যা আসে তাতে তাদের পরিবার চলে। অথচ এত বড় দুর্ঘটনার পর সরকার থেকে কোনো অনুদান বা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি।

তিনি আরো বলেন, চাচা তো আর ফেরত আসবে না। কিন্তু তার সন্তানরা যেন মানুষের মতো মানুষ হয়, সে বিষয়টা তো সরকারের দেখা উচিত। বিনা অপরাধে একজন মানুষ মরে গেল, কিন্তু সাজিয়ে-গুছিয়ে লাশ দেওয়া ছাড়া আর কোনো খবর নেয়া হলো না।

এই ঘটনায় ছেলে হারানো নাসির উদ্দীন জানান, লাশ হস্তান্তর করার সময় দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল। এরপর ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা শোনা গেলেও দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, যা গেছে তা ফেরত পাব না। সামনে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য এ ঘটনার দায়ীদের বিচার করে দৃষ্টান্ত তৈরি করা হোক। পাশাপাশি সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

চুড়িহাট্টার আগুনে নিহত শাহাবুদ্দীনের স্ত্রী ছকিনা বেগমেরও একই অবস্থা। অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন শাহাবুদ্দীন। তার অকাল মৃত্যু সংসারে শুধু অভাবই বাড়ায়নি, বেঁচে থাকার আশাও কমিয়েছে। অগ্নিদুর্ঘটনায় স্বামী হারালেও সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।

এইচএম/এমএইচবি