• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:৪৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৮:৫৪ পিএম

সড়ক আইন ২০১৮

‘আইন মেনে চলুন, জরিমানা-জেল কোনওটাই হবে না’

‘আইন মেনে চলুন, জরিমানা-জেল কোনওটাই হবে না’
ফার্মগেট ট্রাফিক পয়েন্টে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন সার্জেন্ট রিয়াদ - ছবি : রিকু আমির

স রে জ মি ন

নতুন আইন চালুর তৃতীয় দিন

.......

‘আইন মেনে চলুন, নিরাপদে পথ চলুন’, ‘গাড়ি চালানোর সময় ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির লাইসেন্স, ইন্সুরেন্স কাগজ, ট্যাক্স টোকেন, রেজিস্ট্রেশন সনদ সাথে রাখুন’— এরকম সচেতনতামূলক তথ্য প্রচার করা হচ্ছে ঢাকা নগরীর ট্রাফিক পয়েন্টগুলোতে। পাশাপাশি কাগজপত্র পরীক্ষা করার সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট সংশ্লিষ্ট পরিবহন চালককে নতুন আইন ও এর জেল-জরিমানা সম্পর্কে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

রোববার (৩ নভেম্বর) ছিল মোটরযান আইন ২০১৮ কার্যকরের তৃতীয় দিন। এদিন নতুন আইন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ট্রাফিক বিভাগকে কর্মব্যস্ত দেখা গেছে।

সোনারগাঁও ট্রাফিক বক্স থেকে মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছিল সচেতনতামূলক তথ্য। এখানে কর্তব্যরত এএসআই সুরুজ মিয়া বলেন, মামলা করা আপাতত বন্ধ রয়েছে। উপরে নিদের্শ রয়েছে মানুষকে সচেতন করতে। আইন সম্পর্কে জানাতে। সেটাই আমরা করে যাচ্ছি।’

সরেজমিনে নগরীর বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওরান বাজার, জাতীয় সংসদ, ফার্মগেট, খামারবাড়ি, আসাদগেট, ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর ট্রাফিক পয়েন্ট দেখা গেছে, সিগন্যাল দেয়া-ছাড়া সবই কাজ চলছে আগের মতো করেই। শুধু যোগ হয়েছে নতুন আইন নিয়ে সচেতন করার কার্যক্রম। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি সচেতনতা কার্যকর্ম পরিচালনা করতে দেখা গেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগকে। 

ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের পুলিশ বক্সে বিকাল ৪টার দিকে একটি মোটর সাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন সার্জেন্ট রিয়াদ মোর্শেদ। ওই মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন আনোয়ার। সার্জেন্ট রিয়াদ আনোয়ারে কাছে জানতে চান- নতুন আইন সম্পর্কে তিনি কি জানেন? আনোয়ার না সূচক উত্তর দেন। এ সময় সার্জেন্ট রিয়াদ মোর্শেদ বলেন, আপনার যে অপরাধ তাতে নতুন আইন জরিমানা কিন্তু অনেক বেশি। জেল দেয়ার নিয়মও আছে। এখন থেকে সব আইন মেনে চলবেন। আপনার ইন্সুরেন্সের মেয়াদ চলে গেছে এক মাস হলো। তখন আনোয়ার বলেন, সময় পাই না।করে ফেলব।

নতুন সড়ক আইন সম্পর্কে ট্রাফিক বিভাগের সচেতনতামূলক ব্যানার

ট্রাফিক সার্জেন্ট রিয়াদ ওই চালককে উপদেশমূলক নিদের্শনা দিয়ে ছেড়ে দেন। আর বলেন, গাড়ি চালান প্রয়োজনে, কাগজও করবেন প্রয়োজনে। সময় থাকবে না বলবেন, এটা কিন্তু আইন মেনে নেবে না। 

পরে সার্জেন্ট রিয়াদ মোর্শেদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, আপাতত নানাভাবে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। আইন সম্পর্কে মানুষকে জানানো হচ্ছে। কিছুদিন পর থেকে মামলা দেয়ার কাজ শুরু হবে।

একাধিক ট্রাফিক সার্জেন্ট জানালেন, মোটরযান আইন ২০১৮ প্রাথমিকভাবে প্রয়োগ শুরু হবে একটি ফরম পূরণের মাধ্যমে। এভাবে মাসখানে চলতে পারে। এ সময়ের মধ্যে সফটওয়্যার আপডেট করা হবে। তারপর ইলেট্রনিক ডিভাইস পস মেশিনের মাধ্যমে মামলার কাজ শুরু হবে।

গ্রিনরোডে মোটরসাইকেল চালক ইসলাম জামানকে থামান কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট। এ নিয়ে জামানের একটু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হচ্ছি সার্জেন্টে। জামান সার্জেন্টকে বলেন- সরকার আইন করছে ভাল কথা। কিন্তু এই যে বললেন, জেল, তারপরে ৫ হাজার টাকা জরিমানা। এইটা কেমন। এটা তো আমাদের জন্য জুলুম।

ওই সার্জেন্ট জামানকে বলেন, গাড়ি চালাবেন, আইনও মানবেন, কিচ্ছা শেষ। আপনাকে সরকার বলেছে- ড্রাইভিং লাইসেন্স, ডিজিটাল নম্বরপ্লেট, ট্যাক্স টোকেন, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ও ইন্সুরেন্স করতে। এতো লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কিনবেন কিন্তু এসব করার সময় অলসতা-অবহেলা করবেন কেন? আইন মানেন- আপনার জরিমানা-জেল কোনওটাই হবে না। আইন মানতে সমস্যা কোথায়? মানুষের ক্ষতি করার জন্য তো আইন তৈরি করা হয় নি।

আরএম/এসএমএম

আরও পড়ুন