• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০১৮, ০৫:৫৯ পিএম

পাবনায় প্রকাশ্যে পাখি শিকার

পাবনায় প্রকাশ্যে পাখি শিকার
পাবনা উপজেলায় দিয়ার গাড়ফা এলাকায় অবস্থিত গড়াগড়ি বিলে বিভিন্ন ফাঁদ নিয়ে পাখি শিকারে যাচ্ছেন এক শিকারী।

 

পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে নানা রকম ফাঁদ পেতে প্রকাশ্যে পাখি শিকার করা হচ্ছে। আর লুকিয়ে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন হাটে-বাজারে। প্রচলিত আইনে পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ জেনেও এক শ্রেণীর অসাধু পাখি শিকারী তৎপর হয়ে উঠেছেন পাখি শিকারে।

তবে প্রকাশ্যে পাখি শিকার এবং বিক্রি হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। এভাবে পাখি শিকার চলতে থাকলে পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করছেন সবাই।

রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চাটমোহর উপজেলার কুড়িল বিল, পদ্ম বিল, ডিকশির বিল, গড়গড়ি বিল, বড় বিল, বগলা গাড়ি, খলিশা গাড়ি বিল, চাতরার বিলসহ বিভিন্ন বিলে খুব ভোরে পাখি শিকারীরা বিলের মাঝে বিভিন্ন ধরণের ফাঁদ পেতে রাখছেন। পাখি শিকার করতে ব্যবহার করছেন জমিতে দেয়া কীটনাশক। এছাড়া জাল বা বড়শিও ব্যবহার করা হচ্ছে। বেশিরভাগ পাখি কীটনাশক দেয়া মাছ খেয়ে মারা যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার মানুষ আকৃতির খড়ের পালা তৈরি করে তার মধ্যে অবস্থান করে পাখি শিকার করে। শিকারীদের হাতে সহজেই ধরা পড়ছে বক,পানকৌড়ি, ঘুঘু, শালিক, মাছরাঙা, রাতচরা, পানকৌড়ি, বালিহাঁস ও সারসসহ নানা জাতের অতিথি পাখি।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, হাটে-বাজারে প্রতিটি বক ও ঘুঘু ৮০-১০০, রাতচরা ১২০-১৫০, পানকৌড়ি ১০০-১২০ এবং বালিহাঁস ও সারস গড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে , এক শ্রেণীর সচেতন মানুষ অপরাধ জেনেও শিকারীদের কাছ থেকে অবাধে কিনছেন শিকার করা পাখি।

কথা হয় উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাঁটাখালি এলাকার গড়গড়ি বিলে আসা দুই পাখি শিকারীর সঙ্গে। পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ এমন কথা জানালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ‘অপরাধ তো জানি, কিন্তু বাজারে প্রচুর চাহিদা এবং ভাল দাম পাওয়া যায় বলে এ কাজ করছি।’

চাটমোহর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক আবদুল আলীম বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির পাখ-পাখালি। তার ওপর যেভাবে নিরীহ পাখি নিধন করা হচ্ছে, তাতে প্রকৃতির খাদ্যশৃঙ্খলের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি কীটনাশক ব্যবহার করে শিকার করা পাখি রান্না করে খেলে মানবদেহের ব্যাপক ক্ষতি হবে। প্রশাসনের এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করা উচিত এবং পাখি শিকার বন্ধে নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার বলেন, ‘পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাখি শিকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

টিএফ/আরআই