• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০১৯, ০৮:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৫, ২০১৯, ০৮:১০ পিএম

মাদক নির্মূলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে

মাদক নির্মূলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে

মাদক সমস্যা আজ বিশ্বব্যাপী প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত। মাদকের কুপ্রভাব আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যে তরুণ প্রজন্ম আগামীতে দেশ ও জাতির হাল ধরবে তারাই আজ  মাদকের ভয়াল থাবায় নিজের জীবনকে নষ্ট করছে। মাদক সমস্যা দূরীকরণে আমাদের সঙ্গবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সবাইকে হাতে হাত রেখে ঐকবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস ২৬ জুন উপলক্ষে বাংলাদেশ এন্টি-ড্রাগ ফেডারেশনের (বিএএফ) উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনার বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর ২৬ জুন মাদক বিরোধী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপ্রাদ্য বিষয় হলে হলো ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’। বিশ্বে অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে দেশব্যাপী পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে - Health for Justice, Justice for Health. যার অর্থ হচ্ছে : সুস্বাস্থেই সুবিচার, মাদক মুক্তির অঙ্গীকার।

মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচার সম্পর্কে সমাজের সর্বস্তরের জনসাধারণকে অবহিত করা, এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করে মাদকের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে গণজাগরণ সৃষ্টি করাই এ দিবস উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য।

বক্তারা বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা আমাদের যুব সমাজের দিকে দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। অথচ এই যুব শক্তিই দেশের উন্নয়নের চালিকা শক্তি। বর্তমান সরকার ঘোষিত ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রয়োজন প্রত্যয়দীপ্ত, কর্মনিপুন, সুস্থ ও দক্ষ যুব সমাজ। এই যুব সমাজকে রক্ষাকল্পে বাংলাদেশ এন্টি-ড্রাগ ফেডারেশন (বিএএফ) মাদকবিরোধী বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

মাদকের ভয়াবহ পরিসংখ্যান তুলে ধরে বক্তারা বলেন, বর্তমানে মাদকাসক্তদের পরিসংখ্যানের কোনো তথ্য না থাকলেও বেসরকারিভাবে দেশে প্রায় ৭৫ লাখের বেশি মাদকাসক্ত রয়েছে এবং মাদকসেবীদের মধ্যে ৮০ শতাংশই যুবক, তাদের ৪৩ শতাংশ বেকার। ৫০ শতাংশ অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। কিছুদিন আগেও যারা ফেনসিডিলে আসক্ত ছিলো তাদের অধিকাংশই এখন ইয়াবা আসক্ত। সম্প্রতি ইয়াবা আমাদের দেশের তরুণ যুবসমাজকে গ্রাস করেছে। প্রতিদিন যেমন ইয়াবা ধরা হচ্ছে তেমনি প্রতিদিন হাজার হাজার পিস ইয়াবা তরুণরা গ্রহন করছে। আরও একটি ভয়ঙ্কর চিত্র হচ্ছে- সারাদেশের ছড়িয়ে পড়া ইয়াবার শতকরা ৮৫ ভাগই ভেজাল। যার ফলে এসব ইয়াবা গ্রহণকারী মাদকাসক্তরা নানান ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তার মধ্যে কিডনি, লিভার ছাড়াও মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এন্টি-ড্রাগ ফেডারেশন মাদকাসক্তি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ভিশন বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। মাদকাসক্তি একজন ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি তার জীবনের সকল সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়। বস্তুত এ ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি জীবন থেকে জীবন কেড়ে নেয়। যে পরিবারে একজন মাদকাসক্ত রয়েছে সে পরিবারের দুঃখ-দুর্দশা অন্তহীন। মাদকাসক্ত এই তরুণরা জাতির ভবিষ্যৎ না হয়ে ক্রমশ বোঝা হয়ে পড়ছে। তাই মাদকাসক্তি মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকলের সম্মিলিত প্রয়াস অপরিহার্য।

বাংলাদেশ এন্টি-ড্রাগ ফেডারেশনের সভাপতি নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব মো. জাহিদ আহসান রাসেল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। 

এছাড়াও অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ এন্টি-ড্রাগ ফেডারেশন (বিএএফ) এর প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য খবির উদ্দিন আহমেদসহ প্রমুখ।

টিএস/বিএস