কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, কৃষিকে লাভজনক করতে ভালো বীজ ব্যবহারের বিকল্প নেই। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা যেন ভালো মানের বীজ ব্যবহার করে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
শুক্রবার (২৮ জুন) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) চত্বরে জাতীয় বীজ মেলার উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। কৃষি মন্ত্রণালয় এ মেলার আয়োজন করেছে।
মন্ত্রী বলেন, কৃষিকে লাভবান করতে হলে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন খরচও কমিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে বীজ বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো অক্লান্ত পরিশ্রম করে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করছে। এ জাতের যে উৎপাদনশীলতা তা যদি রক্ষা করতে হয়, তাহলে ভালো বীজ লাগবে। গবেষকরা যে বীজটা উদ্ভাবন করলো তা যেন একদম ঐ মান নিয়ে চাষিরা জমিতে যায়। সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সজাগ থাকতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, গ্রাম এবং শহরের ধনী ও গরিবের মধ্যে বৈষম্য কমাতে হবে। কৃষি যদি উন্নত ও আধুনিক হয়, চাষিরা লাভবান হয় এবং কৃষিকে যদি বাণিজ্যিকীকরণ করতে পারি তাহলে বাংলাদেশে চিরদিনই কৃষি মূল জীবিকা হিসেবে থাকবে।
ধানের দামের বিষয় উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এবার ধানের দাম অস্বাবিকভাবে কমে গিয়েছে। ফলে কৃষকরা লাভবান হতে পারছে না। আগামী দিনে ধান করে কৃষককে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। কৃষক ধান করে যদি দাম না পান তাহলে ধান কেন করবেন। তাই আমরা সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি যেন আগামী বোরো মৌসুম থেকে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পায়।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, খুব শিগগিরই পূর্বাচলে দুই একর জমির উপরে আধুনিক ল্যাবরেটরি এবং শাকসবজি প্রসেসিং জোন করা হবে। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়ে আসা যে কোনো সবজির মান পরীক্ষা করা যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গেই সবজি বাজারজাতকরণে সার্টিফিকেট পেয়ে যাবেন। এতে করে কৃষকের ভোগান্তি কমবে।
‘খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে মানসম্মত বীজের ব্যবহার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী জাতীয় বীজ মেলা শুরু হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো জাতীয় বীজ মেলায় ১১টি সরকারি ও ২২টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৬২টি স্টল রয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বিভিন্ন ফসলের বীজ সম্পর্কে নানাবিধ তথ্য জানার পাশাপাশি বীজ কিনতেও পারবেন।
মেলা উদ্বোধন ও স্টল পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী বিএআরসি অডিটেরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বীজ অনুবিভাগের মহাপরিচালক আশ্রাফ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. ফজলে ওয়াহেদ খোন্দকার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খোন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ।
টিএইচ/ এফসি