রাজধানী থেকে ঈদযাত্রায় ঘরমুখী মানুষ পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। টার্মিনাল ও কাউন্টার থেকে সময়মতো বাস ছাড়ছে না। ট্রেনের একই অবস্থা। বেলা ১২টার ট্রেন, বিকাল ৪টায়ও দেখা মিলছে না। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর শ্যামলী, কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকা থেকে ছেড়ে যায় বিভিন্ন রুটের বাস। অসংখ্য যাত্রী অপেক্ষায় থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে কোনো বাসই ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। সর্বনিম্ন ৩ ঘণ্টা থেকে শুরু করে কখনও ৮ ঘণ্টা পর বাসের দেখা মিলছে। সকালে সূর্য ওঠার আগেই যাদের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করার কথা ছিল তাদের বাসের পরিবর্তিত সময় হিসেবে কারোর বেলা ১২টা, কারোর সাড়ে ১২টা বা দুপুর ১টা ঘোষণা করা হয়েছে।
কারণ জানতে চাইলে গাবতলীর আলহামরা পরিবহনের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন দৈনিক জাগরণকে বলেন, রাস্তায় যানজটের কারণে বাস আসতে দেরি হয়। এটাকে ভোগান্তি বলা ঠিক নয়।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভোলার যাত্রী লাইজু আকতার দৈনিক জাগরণকে বলেন, ঈদের সময় একটু ভোগান্তি হবেই। তবে লঞ্চে ভোগান্তি অন্য পথের চেয়ে কম।
বাড়ি ফেরা মানুষের চাপে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে তীব্র যানজট। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ি ধীরগতিতে চলায় দূরপাল্লার বাস সঠিক সময়ে রাজধানীতে প্রবেশ করতে পারছে না। এসব কারণে নির্দিষ্ট সময়ে দূরপাল্লার কোনো বাসই ঢাকা থেকে যাত্রা শুরু করতে পারছে না।
বগুড়ার উদ্দেশ্য বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় রওনা দেন আলী ইব্রাহীম। তিনি বলেন, ভোগান্তির শেষ নেই। ৪ ঘণ্টার পথ যেতে লাগছে ১০/১২ ঘণ্টা। চেয়ে বড় দুর্ভোগ আর কী আছে।
বৈরি আবহাওয়ায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। সেখানে তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, শুক্রবার ভোর থেকেই পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায়। যাত্রীবাহী বাসের চেয়ে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির চাপই সবচেয়ে বেশি। ছোট-বড় ১৯টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার চলছে। থেমে থেমে বৃষ্টি ও বাতাসে নদী উত্তাল থাকার কারণে ফেরি পারাপারে লাগছে বেশি সময়। সকালে বাস, ছোট প্রাইভেট কার, ঢাকা থেকে ফিরে আসা গরুর ট্রাকসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৬ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে সাধারণ যানবাহনের পাশাপাশি পশুবাহী ট্রাকের চলাচল কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি মো. রায়েজুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে যানজট থাকলেও আজ সকাল থেকে মির্জাপুরের ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় ধীর গতিতে চলাচল করছে। রাতভর বৃষ্টি হওয়ায় মহাসড়কে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাজ করতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে।
কমলাপুর রেল স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক দৈনিক জাগরণকে বলেন, আমরা ইচ্ছা করে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলছি না। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে সারাদেশের মানুষ বাড়ি ফিরছে। এক্ষেত্রে সামান্য দুর্ভোগ মেনে নেয়া উচিত। এটি আনন্দের অংশ।
টিএইচ/ এফসি