বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত অভিযোগ করেছেন, দেশে তাদেরকে (হিন্দু) রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু এজন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কাজ।
শনিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানবন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও, মনীন্দ্র কুমার নাথ, ভদন্ত সুনন্দ প্রিয় মহাথেরো, বাসুদেব ধর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাণা দাশগুপ্ত বলেন, সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকীকরণ করে এবং রাষ্ট্র ধর্মকে রেখে কেউ বলতে পারেন না যে, আপনারা নিজেদেরকে সংখ্যালঘু হিসাবে ভাববেন না। আমরা সংখ্যার দিক থেকে লঘু হতে পারি। কিন্তু রাষ্ট্রে সংখ্যা লঘু হিসাবে বেঁচে থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি।
সরকারের উদ্দেশে রানাদাশ বলেন, সংবিধানকে সাম্প্রদায়িক মুক্ত করেন। সব ধর্মকেই রাষ্ট্র ধর্মের সন্মান দিন। অথবা সংবিধানকে বাহাত্তরের মৌল আদলে ফিরিয়ে নিয়ে যান। তখনই বলা যাবে বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নেই। রাষ্ট্রীয় বা রাজনৈতিকভাবে আমরা প্রতারিত হতে চাই না। বিভেদ ও চোরাবালির গলিতে নিক্ষেপ করে যদি কেউ মনে করে থাকে সংখ্যালঘুদের তার অধিকার থেকে পেছনের দিকে ঠেলে দেয়া যাবে- এমনটা কোন রাজনৈতিক দলের ভাববার অবকাশ নেই।
সমাবেশ থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রনয়ণ ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্যে সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি । এর পাশাপাশি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানান তিনি। তিনি জানান, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এ দাবিতে সামনের দিকে ঐকবদ্ধ আন্দোলন করবে।
বক্তারা বলেন, সংখ্যালঘু নিরাপত্তায় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা সত্বেও সংখ্যালঘুদের উপসনালয়ে হামলা, তাদের বাড়িঘর, দোকানপাট লুট, জমি জবরদখল, নারী অপহরণ ও নির্যাতন আজও অব্যাহতভাবে চলছে। এব্যাপারে সমাবেশ থেকে ভদন্ত অমৃতাদন্দ ভিক্ষু হত্যা, গোবিন্দগঞ্জের সাওতালদের পুনরায় হামলা-হয়ারানি, পাহাড়ে-সমতলে অব্যহত সাম্প্রতাতিক উস্কানি, পটুয়াখালির কুয়াকাটার ৮টি দোকান লুটের ঘটনা তুলে ধরেন তারা। নেতৃবৃন্দ অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনের গড়িমসি ও অনীহায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, একারণে জনমনে প্রধানমন্ত্রী সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের লোকেরা।
টিএস/বিএস