• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯, ০৯:০৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯, ০৯:১৯ এএম

পুলিশ প্রহরায় বশেমুরবিপ্রবির ক্যাম্পাস ছাড়লেন উপাচার্য

পুলিশ প্রহরায় বশেমুরবিপ্রবির ক্যাম্পাস ছাড়লেন উপাচার্য
রাতের আধাঁরে পুলিশ প্রহরায় বশেমুরবিপ্রবির ক্যাম্পাস ছাড়লেন ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অপসারণের সুপারিশের পর পুলিশ প্রহরায় গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ক্যাম্পাস ছাড়লেন উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীরা টানা ১১ দিন ধরে তার অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পুলিশের বিশেষ প্রহরায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে থাকা বাংলো থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। এ সময় তাকে উদ্দেশ্য করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেয়। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে, রোববার বিকালে তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় উপাচার্য পদ থেকে তাকে অপসারণের সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) গঠিত তদন্ত কমিটি। শিক্ষার্থীদের ধারণা, উপাচার্য পদ থেকে ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগ বা তাকে অপসারণ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, ‘ভিসি সাহেব (ড. নাসির উদ্দিন) রাত ৮ টার দিকে তাকে ফোন করেন। তখন তিনি জরুরি অফিসিয়াল কাজে ঢাকা যাবেন বলে পুলিশ দিয়ে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়ার অনুরোধ করেন। পরে রাত ৯টার দিকে পুলিশ পাহারা দিয়ে তাকে বাংলো থেকে বের করে আনে পুলিশ।’

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন পুলিশ পাহারায় উপাচার্যের বাংলো ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তিনি আমাদের অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। তাই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য পুলিশ প্রোটেকশন চেয়েছেন। আমরা তাকে পুলিশ প্রোটেকশনে বাংলো থেকে বের করে দিয়েছি। তিনি কোথায় গেছেন তা আমাদের জানা নেই।’

উল্লেখ্য ফেসবুকের ব্যক্তিগত পেজে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে লেখার জের ধরে ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ব্যক্তিগত পেজে শেয়ার দেয়ার অভিযোগকে সামনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে জিনিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও তাকে বহিষ্কারের ঘটনাটি বাংলা ট্রিবিউনসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন উপাচার্য ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। এ সময় এক বছরেই আরও ২৭ শিক্ষার্থীকে শাসন করার নামে তুচ্ছ কারণে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও শো-কজ করার ঘটনা প্রকাশ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই উপাচার্যের বহিষ্কার চেয়ে আন্দোলনে নামে। ওই আন্দোলনেও উপাচার্যের সমর্থক বাহিনী হামলা চালালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। চাপের মুখে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিতে বাধ্য হয়। এরপর উপাচার্যের আরও দুর্নীতি প্রকাশ পেলে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের এক দফা দারিতে আন্দোলন শুরু করে। এরপরই বিষয়টি তদন্তে নামে ইউজিসি।

এমএএম/একেএস

আরও পড়ুন