• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২০, ০৫:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৪, ২০২০, ০৫:০৮ পিএম

নিসচার প্রতিবেদন

৪৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫২২৭ জন

৪৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫২২৭ জন

২০‌১৯ সালে ৪ হাজার ৭০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ২২৭ জন নিহত হয়েছেন। এর আগের বছর ২০১৮ সালের ৩ হাজার ৩৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ৪ হাজার ৪৩৯ জন। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ১ হাজার ৫৯৯টি, প্রাণহানি বেড়েছে ৭৮৮ জন। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন (নিসচা) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার খবর এবং সংগঠনের বিভিন্ন শাখা থেকে পাঠানো তথ্য সন্নিবেশ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের মোট মৃত্যুর ৮৭১টি হাসপাতালে ভর্তির পর এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর হয়েছে, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ২০ শতাংশ। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়লেও কমেছে আহতের সংখ্যা। ২০১৮ সালের সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮ জন আহত হয়েছিলেন, ২০১৯ সালে আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৩ জন।

২০১৯ সালে ১৬২টি রেল দুর্ঘটনায় ১৯৮ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩৪৭ জন। ৩০টি নৌ দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৬৪ জন, আহত হয়েছেন ১৫৭ জন। এসব দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

দুর্ঘটনার জন্য এককভাবে সবচেয়ে বেশি দায়ী ট্রাক, এই সংখ্যা ১ হাজার ৯৮টি। এছাড়া মোটরসাইকেল ১ হাজার ৩৩টি, বাস ৯৯২টি, কভার্ড ভ্যান ১৬০টি, মাইক্রোবাস ১৫৮টি, নসিমন ৮৩টি, প্রাইভেটকার ৭৯টি এবং পিকআপ, অটোরিকশা, ভ্যান এবং অন্যান্য যানবাহন ২ হাজার ১৭৮টি দুর্ঘটনায় দায়ী।

২০১৯ সালে বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বড় শহর ও মহাসড়কে। ভ্যান, রিকশা, নসিমন, অটোরিকশার মতো যানবাহন এসব দুর্ঘটনার জন্য বেশি দায়ী। ধীরগতির এসব যান এখনও মহাসড়কে চলাচল করে দূরপাল্লার বড় গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়। সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকায়, ৩০৯টি। এতে নিহত হয়েছে ৩৩৫ জন ও আহত হয়েছে ৩২৭ জন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়িতে,৭টি। এতে নিহত হয়েছে ২৭ জন ও আহত হয়েছে ১০ জন। দুর্ঘটনায় মারা সবচেয়ে বেশি গেছেন ময়মনসিংহে, ৪৮৮ জন। আর সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে কম মারা গেছেন ঝালকাঠিতে, ৫ জন।

সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নিসচার সুপারিশমালায় রয়েছে- ট্রাফিক সিগন্যাল মানা, যত্রতত্র পার্কিং না করা, ওভারটেক বিষয়ে আইন প্রয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো স্কুলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা, সচেতনতামূলক কার্যক্রম মিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে প্রচার, দক্ষ চালক তৈরিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, মহাসড়ক ও প্রধান সড়ক চার লেনে উন্নীত করা, সড়কের ত্রুটি দূর করা প্রভৃতি।

ইলিয়াস কাঞ্চন অভিযোগ করেন, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ, সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসন থেকে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে নিয়মিত প্রতিবেদন দেয়া হয় না। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সরকারিভাবে কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। এজন্য যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি দুর্ঘটনা অনুসন্ধান সেল গঠন করে প্রতিবছরের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য জাতির কাছে তুলে ধরার অনুরোধ করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিসচার মহাসচিব সৈয়দ এহসান-উল হক, উপদেষ্টা ও বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব লিটন এরশাদ প্রমুখ।

এফসি

আরও পড়ুন