• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০১৯, ০৯:২০ পিএম

দাম মিলছে না মুড়িকাটা পেঁয়াজের, হতাশ কৃষক

দাম মিলছে না মুড়িকাটা পেঁয়াজের, হতাশ কৃষক
ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে বিক্রির জন্য জড়ো করছেন কৃষক। ছবি : জাগরণ

 

সারা দেশের মধ্যে ফরিদপুর ও রাজবাড়ি অঞ্চলে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ বেশি হয়। গত ১৫ দিন আগে এ মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। ফলনও হয়েছে মোটামুটি। তবে গত বছরের মতো এবারও এই মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম মিলছে না। ক্রেতারা খুশি হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। হতাশা বিরাজ করছে কৃষকদের মধ্যে।

চলতি বছর ফরিদপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ফরিদপুর সদর উপজেলায় ২ হাজার ২০ একর জমিতে। আর সদরপুর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলার মধ্যে মুড়িকাঁটা পেঁয়াজের আবাদ সবচেয়ে কম হয়েছে আলফাডাঙ্গায় মাত্র ৫০ হেক্টর জমিতে। কমের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে নগরকান্দা উপজেলা ৮০ হেক্টর।

ফরিদপুর সদরে পদ্মানদী-অধ্যুষিত নর্থ চ্যানেল, চর মাধবদিয়া ও ডিক্রিরচর ইউপিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয় বেশি। নর্থ চ্যানেল ইউপির আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা পেঁয়াজ চাষি কাওসার শেখ বলেন, তিনি দেড়শ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপন করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে অনেক কম দামে। বর্তমানে প্রতি মন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকায়। ফলে তিনি লোকসানের মুখে পড়েছেন।

কায়মুদ্দিন ডাঙ্গি গ্রামের আরেক পেঁয়াজ চাষি কালাম শেখ বলেন, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপন করেছেন। কিন্তু পেঁয়াজ বিক্রি করতে গিয়ে তিনি ভালো দাম পাননি। তবে পেঁয়াজের ফুল বিক্রি করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছেন কালাম শেখ।

নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদ- ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জাগরণকে বলেন, তার ইউপিতে অন্তত তিনশ একর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করা হয়। এর পেছনে যুক্ত আছেন অন্তত তিন সহস্রাধিক কৃষক ও তাদের পরিবার। পেঁয়াজে লাভজনক দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। এ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায় না। এ কারণে অনেক কৃষক ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্ত্তী বলেন, দেশের মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ শুধু ফরিদপুর ও রাজবাড়ী অঞ্চলেই হয়। এ পেঁয়াজের সুবিধা হচ্ছে একই চাষি মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন করার পর হালি পেঁয়াজও উৎপাদন করতে পারেন। একজমিতে দুবার পেঁয়াজ উৎপাদন। এ দুই জেলাতেই হয়ে থাকে।

কৃষকদের দাম না পাওয়ার ব্যাপারে কার্তিক চক্রবর্ত্তী বলেন, মার্কেটিং (বাজার ব্যবস্থাপনা) নিয়ে মন্তব্য তার পক্ষে মন্তব্য করা কঠিন। কেননা বাজারের দাম নির্ধারিত হয় চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে। তবে এ কথা সত্য গত বছরের তুলনার এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম অনেক কম।

এসএমএম