• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০১৯, ০৬:১৩ পিএম

দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর লাশ গুম

দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রীর লাশ গুম
স্ত্রী হত্যার দায়ে গ্রেফতার শাহজাহান ও তার দুই বন্ধু। ছবি : জাগরণ


পারিবারিক কলহের জের ধরে মেয়েকে পাশের ঘরে রেখে স্ত্রী আফরোজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে শাহজাহান। এরপর লাশ গুম করতে  দুই বন্ধু খোকন ও মুকুলকে বাসায় ডেকে আনে সে। এর পর তাদের সহায়তায় রাতের অন্ধকারে বাড়ির পাশে থাকা সেফটি ট্যাংকিতে লাশ ফেলে দিয়ে গুম করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, গুমে সহায়তা করার জন্য শাহজাহানের কাছ থেকে খোকন ৪ হাজার এবং মুকুল ২৫০০ টাকা করে নেন। তারপরেও ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে পরদিন সকালেই স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানায় খোকন ও মুকুল।

শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এ সব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম।

গত ৩ জানুয়ারি গাজীপুরের ভাওরাইদ এলাকার নিজ বাসায় স্ত্রী আফরোজা বেগমকে (২৬) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে শাহজাহান মিয়া। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরদিন ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আফরোজার লাশ উদ্ধার করে। এরপর থেকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে র‌্যাব- ১ এর একটি টিম। বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাতে ডেমরা এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি ও আফরোজার স্বামী শাহজাহান মিয়া(২৮), লাশ গুমে সহায়তাকারী তার দুই বন্ধু খোকন মিয়া (২২) ও মুকুল মিয়া (২৫) কে আটক করে র‌্যাব-১।

সংবাদ সম্মেলনে সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, গত ৮ বছর আগে গাজীপুরের একটি সুতার মিলে কাজ করার সময় শাহজাহান ও আফরোজার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা বিবাহ করেন। একটি কন্যা সন্তানও ছিল তাদের। কিন্তু বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করে শাহজাহান। এ কারণে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন কলহ লেগেই থাকতো। 

তিনি আরও জানান, ২০১৬ সালে আফরোজা কাজের উদ্দেশে সৌদি আরবে যান। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে আফরোজা দেশে ফিরে আসেন। এরপর স্ত্রীর কাছে বিদেশে অর্জিত টাকার হিসেব চাইতে শুরু করেন শাহজাহান। এ কারণেও তাদের কলহ বৃদ্ধি পায়।

গত ৩০ ডিসেম্বর আফরোজা ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পর কোথায় গিয়েছিলে জানতে চেয়ে তাকে অনেক মারধর করে শাহজাহান। ৩ জানুয়ারি সকালে কলহের একপর্যায়ে তাদের মেয়েকে পাশের ঘরে রেখে স্ত্রী আফরোজাকে গলা টিপে হত্যা করেন শাহজাহান। এরপর খাটের নিচে লাশ লুকিয়ে রাখে সে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, হত্যার পর স্ত্রীর লাশ গুম করতে শাহজাহান তার বন্ধু খোকন ও মুকুলকে বাসায় ডেনে আনেন। তিনজন মিলে ওইদিন রাতের অন্ধকারে বাসার পাশে সেপটিক ট্যাংকে আফরোজার লাশ ফেলে দেয় তারা। গুমের পর কাজে সহায়তা করার জন্য শাহজাহানের কাছ থেকে খোকন ৪ হাজার এবং মুকুল ২৫০০ টাকা করে নেয় ।

কিন্তু টাকা নিলেও খোকন ও মুকুল ঘটনার জানাজানির ভয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে বিষয়টি বলে দেয়। তবে তারা কাউন্সিলকে জানায়, ‘‘রাতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখি শাহজাহান তার স্ত্রীর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দিচ্ছে।’’ লাশ উদ্ধারের পর খোকন ও মুকুল ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন। 

সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি শাহাজানকে গ্রেফতারের পর তার অভিযোগের ভিত্তিতে খোকন ও মুকুলকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

আরআর/এসএমএম