• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০১৯, ০৯:২৮ এএম

শার্শায় বেড়েছে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ

শার্শায় বেড়েছে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ

 

চলতি মৌসুমে যশোরের শার্শা উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে উন্নত জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। গাছ আর ফুল দেখে ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকরা। মাঠে জুড়ে ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষা ক্ষেত। ক্ষেতগুলোতে মৌমাছির মধু আহরণও বেড়েছে।  গত বছর উন্নত জাতের সরিষার দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরা এবার সরিষা আবাদ করেছেন বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছরও ভাল ফলন হবে বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে এক হাজার ২০০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ হেক্টর বেশি জমিতে। উচ্চ ফলনশীল (উফশী) মধ্যে বারি-১৪, বারি-৯, বিনা-৯/১০ ও স্থানীয় ভাবে বারি-৭ হাইল্যান্ড ও সম্পদ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। ফলে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে স্থানীয় জাতের সরিষা চাষ করায় ফলন হত কম।  তাছাড়া উৎপাদনে সময় লাগত বেশি। ফলে এ উপজেলার চাষিরা সরিষা চাষ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। তবে চলতি মৌসুমের শুরুতে উপজেলা কৃষি বিভাগ ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করে। এ জাতের সরিষার ফলন ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় গড় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কাটার পর ওই একই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা সম্ভব। এতে করে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের চাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর তিনি দুই বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও বিনা-৯/১০ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে গর তিন থেকে চার হাজার টাকা। সরিষার গাছও ভাল হয়েছে। তিনি আশাতীত ফলনের আশা করছেন।

একই গ্রামের আফজাল শেখ জানান, গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভাল পাওয়া যায়। ফলে এবারও তিনি সরিষা চাষ করেছেন। ফলন ভালো ও দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষে আরো  অনেকে চাষই ঝুঁকবে ।

ঘিবা গ্রামের কৃষক আমিরুল রহমান জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। সরিষার চাষের জমিতে আবার ধানের ভাল ফলন পাওয়া যায়। ফলে বোরো চাষে খরচ কম হয়।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। বারি-১৪সহ অন্যান্য সরিষা বপনের মাত্র ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। এ সরিষা তোলার পর ফের ওই জমিতে বোরো আবাদ করা সম্ভব বলে চাষিরা ‘লাভের ফসল’ হিসেবে সরিষা চাষ করেন।

তিনি আরো জানান, বারি-১৪ সরিষার গাছ লম্বা হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে পড়ে জৈব সারের কাজ করে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে। এ জাতের সরিষা আবাদের পর ওই জমিতে বোরো আবাদে সারের পরিমাণ কম লাগে। তাই এ জাতের সরিষা চাষের জন্য আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করি। বিভিন্ন উপকরণ সহায়তাও দেই। চলতি বছরে এ উপজেলায় ৯০০ চাষিকে উপকরণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।

এসসি/