মৌলভীবাজারের বাইক্কাবিলে এবছর পাখি শুমারিতে ৩৯ প্রজাতির ১১ হাজার ৬১৫ টি পাখি পাওয়া গেছে যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এর মধ্যে ১৯ প্রজাতরি পরিযায়ী ও ২০ প্রজাতির দেশীয় জলচর পাখি রয়েছে। গত বছর বাইক্কাবিলে পাখির সংখ্যা ছিল ৩৮ প্রজাতির ৫ হাজার ৪১৮টি । ২০১০ সালের পর এবছরই এতো বেশি সংখ্যক পাখির এসেছে বিলে। পাখিশুমারির পর পাখি বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানান।
এশিয়ান ওয়াটার বার্ড সেনসাস-এর অধীনে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সহযোগিতায় গত ২৮-২৯ জানুয়ারি মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিলে পাখিশুমারি করেন আন্তর্জাতিক পাখি বিশেষজ্ঞ ড. পল থম্পসন।
তিনি জানান, এবছর প্রচুর পাখি পাওয়া গেছে বাইক্কাবিলে তার মধ্যে গুটি ঈগল, পালাসি কুড়া ঈগল, উদয়ী গয়ার, কালামাথা কাস্তচেরা এবং মরচেরং ভূতিহাঁসসহ নানা জাতের বিপন্ন পাখিরও দেখা মিলেছে।
দুদিনের শুমারিতে এ বছর বাইক্কা বিলে ২৮৮টি খয়রা কাস্তে, পাতি তিলি হাঁস ২ হাজার ২২০টি, উত্তুরে ল্যাঞ্জা হাঁস ৯২১, রাজ শরালী ৩৯৮টি, পাতি শরালী ৮৬০টি দেখা গেছে। তবে গেওয়ালা বাটান সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ২৮০টির পাখির দেখা মিলেছে।
পাখির আবাসস্থল ঠিকমত রক্ষা করতে পারলে এবং অবৈধ পাখি শিকার বন্ধ করতে পারলে পাখির সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানান ড. পল থমসন। তিনি আরো জানান, বাইক্কাবিলের আশেপাশে মাছের খামার ঘড়ে উঠেছে যার কারণে প্রাকৃতিক জলাবন নষ্ট হচ্ছে। আশেপাশে বিল ইজারাদাররা নিয়ম না মেনেই সেচ দিচ্ছেন এবং বিলের পাশে জনবসতি বাড়ার কারণে পাখি বসবাসের জায়গা হুমকিতে পড়ছে।
বাইক্কা বিলে দেশীয় ও পরিযায়ী জলচর পাখি কম-বেশির কারণ জানতে চাইলে পল থম্পসন বলেন, বাইক্কা বিল অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণার পর সেখানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। এর মধ্যে হিজল, করচের বাগান ও বিল খনন করা হয়। এ কাজগুলো সাধারণত শুকনা মৌসুমে করা হয়। এটা বিবেচনা করা যে পরিযায়ী পাখিরা আসার আগে তাদের আবাসস্থলটি নিরাপদ করা কিনা।
প্রতিবছরের জানুয়ারিতে দেশে পাখি শুমারি করা হয়। বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় এ শুমারি হয়। এ মধ্যে শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর, কুলাউড়ার হাকালুকি হাওর, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, উপকূলীয় অঞ্চলের নিঝুম দ্বীপ, উপকূলীয় দ্বীপ, সোনাদিয়া, সন্দ্বীপসহ বেশ কিছু জায়গায়।
বিএস