• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০১৯, ১০:০২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৩০, ২০১৯, ১০:০২ এএম

পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বনানীর এফ আর টাওয়ার

পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বনানীর এফ আর টাওয়ার
বনানী এফ আর টাওয়ার- ছবি: কাশেম হারুন

বনানী এফ আর টাওয়ারকে ঝুঁকিপূর্ণ আখ্যায়িত করে ভবনের পাশ দিয়ে জন সাধারণের চলাচলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবিষয়ে জন সাধারণকে অনুরোধ জানিয়ে এফ আর ভবনের সামনে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড লাগিয়েছে সিটি করপোরেশন। ভবনে যেসব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ছিল, তাদের একজন করে প্রতিনিধি তাদের নিজ নিজ অফিস ঘুরে দেখার সুযোগ পান। কিন্তু  সাত, আট, নয়, দশ ও এগার তলা পুরোপুরি পুড়ে গেছে।এখানে কেউ যাচ্ছেন না। 

ভবনে পাহারায় পুলিশ অফিসার মনির হোসেন জানান, এফ আর ভবনে আগুনে সপ্তম, অষ্টম নবম  ও দশম  এবং এগার তলার ৫টি ফ্লোর পুরোপুরি পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ধারণা করছে, ভবনের সপ্তম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে কীভাবে সূত্রপাত সেটি এখনো উদঘাটন করা যায়নি। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের আশপাশে এখনো পোড়া গন্ধ। ভেতরে ঢুকলে পোড়া গন্ধ আরও বেশি নাকে লাগে। বেজমেন্টের গ্যারেজে কয়েকটি গাড়ি পার্কিং করা। প্রথম তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত তেমন ক্ষতি হয়নি। সিঁড়িতে পানি-কাদা মাখামাখি।
আগুনে সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলা আগুনে পুড়ে গেছে। এই তিন ফ্লোরের কোনো কিছুই অক্ষত নেই। সিলিং, থাই পার্টিশন, টেবিল-চেয়ার, কম্পিউটার আর নানা পোড়া জিনিস। দেয়াল পুড়ে কালো হয়ে আছে।

এছাড়া দশম তলায় আগুনের বেশ আঁচ লেগেছে। পুড়ে না গেলেও ধোঁয়া আর তাপে দেয়াল কালছে হয়ে গেছে। এক রকম গুমোট পরিবেশ। এর পরের ১১ ও ১২ তলায়ও ধোঁয়া ও তাপের প্রভাব দেখা গেছে। এসব ফ্লোরের অনেক জানালার কাচ ভাঙা।

অপরদিকে বনানীর এফআর (ফারুক রূপায়ন) টাওয়ারে আগুন লাগার ঘটনার পর ভবনের অফিসগুলো ঘুরে দেখছেন একজন করে প্রতিনিধি। সঙ্গে থাকছেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একজন করে প্রতিনিধি। বর্তমানে পুলিশের জিম্মায় রয়েছে ভবনটি। ভবনে সাধারণ কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভবনের পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আর রাজনৈতিক নেতারাও পরিদর্শন করছেন পুড়ে যাওয়া এফআর টাওয়ার। তাদের বেশির ভাগই এই ২২ তলা ভবনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজউকের সমালোচনা করেছেন।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তারা মনে করছেন শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে প্রকৃত কারণ।

শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে বলেন, ভবনটি ১৮ তলা হওয়ার কথা অথচ হয়েছে ২৩ তলা। সেটাও ১৪ বছর আগে। তাহলে রাজউক এত দিন কী করেছে! এই ঘটনায় আইজিপি বলেন, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বাদি হলে ভালো হয়। তারা রাজি না হলে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করবে।

এখন থেকে সিটি করপোরেশন অ্যাকশনে নামবে জানিয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশন বহুতল ভবনের আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র রাজউকের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে সব ভবনকে কাগজপত্র দিতে হবে। এসব হাতে পেলে ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযান শুরু করবে।
সকালে ভবন পরিদর্শনে যান গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে মন্তব্য করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে জন্য যারা দায়ী তারা যত শক্তিশালী আর প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশের ১৭ নম্বর সড়কে ২২তলা ফারুক রূপায়ন (এফআর) টাওয়ার। গত বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে একটার দিকে এই ভবনে আগুন লাগে। এতে ২৫ জন নিহত ও ৭৩ আহত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনায় গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি।

এইচ এম/বিএস