যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক সচিবালয়ে নির্মাণাধীন দুটি বহুতল ভবনের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এ প্রকল্প দুটির ব্যয় ধার্য করা হয়েছিলো ৫৭১ কোটি টাকা।
শুদ্ধি অভিযানে আটক শামীমের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করায় প্রকল্প দুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা। আর পূর্তমন্ত্রী বলেছেন, এমন অজুহাতে কাজ বন্ধ রাখা হলে প্রয়োজনে বাকি কাজের জন্য নতুন টেন্ডার আহবান করে কাজ সমাপ্ত করা হবে।
সচিবালয়ের এ বহুতল ভবন দুটির একটি হচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয় ভবন। যার নির্মাণে ব্যয় ধার্য করা হয়েছিলো ১৫০ কোটি টাকা। এ ভবনের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। আর অপরটি হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন ভবন। যার নির্মাণ ব্যয় ধার্য ছিলো ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের পাইলিংসহ প্রাথমিক কাজ চলছিলো।
কাজ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রা. লিমিটেডের সহকারী পরিচালক (সচিবালয় প্রকল্প) আজমল হোসেন দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘সচিবালয়ের নির্মাণাধীন এ ভবন দুটির কাজের জন্য প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। মাসে প্রয়োজন হয় প্রায় ২ থেকে ৩ কোটি টাকা।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ১৩টি প্রকল্পের কাজ এখন চলমান। এর সব প্রকল্পই সরকারি। জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানির সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। তাহলে এর কাজ থমকে যাওয়টা স্বাভাবিক।’
তবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রোজাউল করিম বুধবার (০৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ভবন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন ভবনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব জব্দ করার অজুহাতে যদি কেউ তার নির্মাণাধীন সরকারি প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেয়, তা হলে আমাদেরকেও ভাবতে হবে, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ কিভাবে সমাপ্ত করা যায়। প্রয়োজনে সচিবালয়ের প্রকল্প দুটির বাকি কাজের জন্য নতুন টেন্ডর আহবান করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।’
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন ভবনের কাজও শুরু হয়েছিলো। ভবন দুটি নির্মিত হলে সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রাণকেন্দ্র সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য সুষ্ঠু কর্ম-পরিবেশ নিশ্চিত হবে। সচিবালয় প্রাঙ্গণে অধিক সংখ্যক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের স্থান সংকুলান করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সরকারি জমির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সরকারি অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত সম্ভব হবে।’
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সচিবালয়ে নির্মাণাধীন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভবনটি হচ্ছে ১৬ তলা। যার নির্মাণ ব্যয় ধার্য ছিলো ১৫০ কোটি টাকা। আর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন ভবনটি হবে ২০ তলা। এর নির্মাণ ব্যয় ধার্য করা হয়েছে ৪২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। প্রকল্প দুটি সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত।
এমএএম/বিএস