• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০১৯, ০৩:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২, ২০১৯, ০৩:১২ পিএম

নতুন সড়ক আইন কার্যকরে নানা রকম জটিলতা

নতুন সড়ক আইন কার্যকরে নানা রকম  জটিলতা
আরোহীর হেলমেট না থাকায় ট্রাফিক পুলিশ মোটরবাইক আটকাচ্ছেন-ছবি : সংগৃহীত

স রে জ মি ন

নতুন আইন চালুর দ্বিতীয় দিন

.........

কোনও পূর্ব প্রস্তুতি নেই। আইন সম্পর্কে ট্রাফিক পুলিশরা অন্ধকারে। যারা মানবেন তারাও কিছুই জানেন না। এ রকম ধোঁয়াশার মধ্যেই ১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। তবে  এ আইন কার্যকর করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে ট্রাফিক পুলিশ। নতুন এ আইন কার্যকরের বিষয়টি খবরের কাগজেই দেখেছেন তারা। প্রজ্ঞাপন বা ট্রাফিক বিভাগের কোনও নির্দেশনা আসে নি তাদের হাতে। তাই তারা এখনও জানেন না কোনও অপরাধে কী দণ্ড। 

নতুন আইনে মোটরবাইকে হেলমেট ব্যবহার ও রেজিষ্ট্রেশন না করার অর্থদণ্ডের পরিমাণ কয়েকগুণ করা হয়েছে। এ নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হন নি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম। তবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, নতুন সড়ক আইন কার্যকরে সব রকম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যদিও মামলা ও জরিমানার ক্ষেত্রে কিছু কাজ এখনও বাকি। তবে কয়েকদিন সব ঠিক হয়ে যাবে। নতুন আইন সম্পর্কে ট্রাফিক সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ চলছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয় সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। ওই বছরের ৮ অক্টোবর এর গেজেট হয়। গেজেটে বলা হয়, ‘‘সরকার আইনটি কার্যকরের তারিখ ঠিক করে এর প্রজ্ঞাপন জারি করবে।’’

সংসদে পাস হওয়ার ১৪ মাস পর নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে গত ২৭ অক্টোবর এ আইন কার্যকরে প্রজ্ঞাপন জারি করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে আইনটি কার্যকর হবে।’ সেই অনুযায়ী ১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে নতুন আইন কার্যকর শুরু হয়েছে।

ভিআইপি সড়কসহ রাজধানী বিভিন্ন সড়কে কর্মরত ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট ও কনস্টেবলের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা কেউই জানেন না আইনের বিস্তারিত তথ্য। উচ্চপর্যায় থেকে এখনও তাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি কোনও নির্দেশনা। নেই মামলার স্লিপ বইও। এ অবস্থায় গণমাধ্যমের নানা প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে ভিডিও ফুটেজও। সব কিছু মিলিয়ে বিভিন্ন সড়কে ২ নভেম্বর (শনিবার) কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে নানা রকম বিড়ম্বনায় পড়তে দেখা গেছে। 

নতুন সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির দায়ে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড, হত্যা প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। হেলমেট ছাড়া বাইক চালালে মোটরসাইকেল আরোহীর জরিমানা হবে ১০ হাজার টাকা। নতুন এ আইনের অর্থদণ্ড নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দৈনিক জাগরণ এর কাছে একাধিক বাইক চালক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাঠাও চালক হাসানুজ্জামান বলেন, মোটর বাইকে হেলমেট ব্যবহার না করলে নতুন আইনের অর্থদণ্ড ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এটা কি সুস্থ মানুষের আইন প্রণয়ন? বিষয়টা তিনি সংশোধনের আহবান জানান।

একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, সাধারণত মোটরবাইক রেজিস্ট্রেশন করতে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা লাগে। সেখানে কাগজ-পত্র ছাড়া মোটরবাইক চালালে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড কিভাবে করা হলো?

রাজধানীর মগবাজার (রমনা) চৌরাস্তায় কর্মরত ট্রফিক সার্জেন্ট আশরাফ দৈনিক জাগরণকে বলেন, নতুন এ আইন কার্যকরের বিষয়টি খবরের কাগজেই দেখেছি। আমারটা আমি বলছি, এখন পর্যন্ত উপর মহল থেকে কোনও নির্দেশনা পাই নি। জানি না অপরাধ বা অর্থদণ্ডের বিষয়।

মহাখালী চৌরাস্তায় কর্মরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সুজিত নন্দী বলেন, আইন কার্যকরে প্রজ্ঞাপন বা ট্রাফিক বিভাগের কোনও নির্দেশনা তার হাতে আসে নি। 

এমএএম/এসএমএম

আরও পড়ুন